দেশব্যাপী বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের হামলায় অর্ধশত আহত ; আটক ২০ : মীর্জা ফখরুলের নিন্দা

আপডেট: মার্চ ২৯, ২০২১
0

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে আজ দেশব্যাপী মহানগরী সমূহে বিএনপির পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে চট্টগ্রাম, গাজীপুর, খুলনা ও ময়মনসিংহ মহানগরীতে বিএনপির মিছিলে পুলিশের হামলা, গ্রেফতার, নেতাকর্মীদেরকে বেধড়ক লাঠিচার্জ করে আহত করা এবং গতকাল কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি’র কার্যালয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডাঃ শাহাদাৎ হোসেনসহ গ্রেফতারকৃত অন্যান্য নেতৃবৃন্দদের মুক্তির জোর দাবি করেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ফ্যাসিষ্ট সরকারের অব্যাহত হত্যাযজ্ঞ ন্যাক্কারজনক হামলা, গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার হরণের প্রতিবাদে আজ দেশব্যাপী মহানগর পর্যায়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে চট্টগ্রাম, খুলনা, ময়মনসিংহ ও গাজীপুর মহানগরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বিএনপি’র বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশ ন্যাক্কারজনক হামলা চালায়।

চট্টগ্রাম মহানগরীর কাজীর দেউড়িতে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ হামলা চালায়, মহানগর আহবায়ক ডাঃ শাহাদাত হোসেন, তার পিএস মারুফুল হক চৌধুরী, পাঁচলাইশ থানা বিএনপির সহ-সভাপতি মোঃ আলী, মহানগর মহিলা দলের সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি, যুগ্ম সম্পাদক আঁখি সুলতানা, প্রচার সম্পাদক দেওয়ান মাহমুদা লিটা, রিনা খানসহ ২০জন নেতাকর্মীকে আটক এবং পুলিশ গুলিবর্ষণ ও বেধড়ক লাঠিচার্জের মাধ্যমে ৪০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আহত করে। মারাত্মক আহত নেতাকর্মীরা হলেন-নগর যুবদল নেতা তৈয়ব আলী, আনিসুজ্জামান, আব্দুর রহিম, মোঃ হেলাল, সাহাবুদ্দিন সাবু, শাহেদ তৈমুর, মঞ্জুর আলম, মোঃ ইলিয়াস প্রমূখ। খুলনা মহানগরীতে বিক্ষোভ সমাবেশের শেষ মুহুর্তে পুলিশ চতুর্দিক থেকে বিনা উস্কানীতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক লাঠিচার্জের মাধ্যমে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

পুলিশের ব্যাপক লাঠিচার্জ ও হামলায় বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জুসহ নেতৃবৃন্দদের গ্রেফতার করার পাঁয়তারা চালায়। দীর্ঘক্ষণ নেতাকর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখে পুলিশ। খুলনা মহানগরীর ৯জন নেতাকর্মী পুলিশের হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হন। ময়মনসিংহ মহানগরীতে কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে নেতাকর্মীদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। প্রতিবন্ধকতার মুখে নতুন বাজারে সংক্ষিপ্ত কর্মসূচি পালন করে নেতাকর্মীরা ফিরে যাওয়ার মূহুর্তে পুলিশ হামলা চালিয়ে ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপি নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান-এফ আই ফারুক, ৩২ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা-এ্যাড. ওয়াসিম, ছাত্রদল ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট শাখার আহবায়ক-ইমন চৌধুরী, ময়মনসিংহ দক্ষিণ থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব-গোবিন্দ রায়, যুবদল নেতা-আলী ও স্বপনকে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এখানে পুলিশ মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম আহবায়ক-আবু ওয়াহাব আকন্দসহ অন্যান্য নেতাকর্মীদেরকেও আটক করার পাঁয়তারা চালায় এবং হেনস্তা করে। গাজীপুর মহানগরীতে মেট্রো থানা বিএনপির মিছিলে পুলিশ অতর্কিতে হামলা চালায় ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে, এতে তিন জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়।গতকাল সন্ধ্যায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিনা উস্কানীতে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি কার্যালয়ে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পুলিশের উপস্থিতিতে এই সন্ত্রাসী ঘটনা প্রমাণ করে সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রের ছায়াতলে দলীয় কর্মীদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে নামিয়ে দিয়ে দেশে নৈরাজ্য ও উস্কানীমূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছে।

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সভা-সমাবেশ করা মানুষের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার হলেও ভোটবিহীন সরকার তাদের অনৈতিক ও ফ্যাসিবাদী শাসনকে দীর্ঘায়িত করতে সভা-সমাবেশে হামলা, মামলা, গ্রেফতারসহ দমন, নিপীড়ণ চালিয়ে রাজনীতির পথকেই সংকুচিত করে ফেলেছে। বিবৃতিতে তিনি চট্টগ্রাম, খুলনা, ময়মনসিংহ ও গাজীপুর মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দের নি:শর্ত মুক্তির দাবি করেন এবং আহতদের সুস্থতা কামনা করেন।
বিএনপি মহাসচিব কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি’র কার্যালয়ে হামলার সাথে জড়িতদের আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও জোর দাবি করেন।