দেড় কোটি টাকার ঈয়াবা উদ্ধার বিজিবির

আপডেট: আগস্ট ১০, ২০২১
0

বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়নের পৃথক দুটি অভিযানে ০১ জন আসামীসহ ১,৫০,০০,০০০/- (এক কোটি পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা মূল্যমানের ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে।

টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) টেকনাফ সীমান্তের দায়িত্বভার গ্রহণের পর হতে মাদকদ্রব্য পাচার প্রতিরোধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ প্রতিহত, মানবপাচারসহ সীমান্তে সংঘটিত সকল প্রকার সীমান্ত অপরাধসমূহ প্রতিরোধকল্পে অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে নিরলসভাবে কাজ করে ধারাবাহিক সাফল্য অর্জন করে যাচ্ছে। টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) মাদকের জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বল করায় সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়। এরই প্রেক্ষিতে ০৯ ও ১০ আগস্ট ২০২১ তারিখ টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) কর্তৃক পরিচালিত পৃথক দুইটি অভিযানে ০১ জন আসামীসহ ১,৫০,০০,০০০/- (এক কোটি পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা মূল্যমানের ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। উক্ত অভিযানদ্বয়ের বিস্তারিত নিন্মে দেয়া হলোঃ

ক। গত ০৯ আগস্ট ২০২১ তারিখ টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধীনস্থ দমদমিয়া বিওপি’র একটি টহলদল দমদমিয়া চেকপোস্টে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। আনুমানিক ১৯০০ ঘটিকায় উনচিপ্রাং হতে টেকনাফগামী একটি সিএনজি চেকপোষ্টের নিকট আসলে তা তল্লাশীর জন্য থামানো হয়। পরবর্তীতে উক্ত সিএনজি তল্লাশীকালীন একজন মহিলা যাত্রীর আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় তাৎক্ষণিক নারী সৈনিক দ্বারা তাকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তল্লাশী ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে উক্ত মহিলার জবানবন্দীর ভিত্তিতে তার পরিহিত বোরখার ভিতর হাঁটুর উপরিভাগে অভিনব পদ্ধতিতে ফিটিং অবস্থায় ৬০,০০,০০০/- (ষাট লক্ষ) টাকা মূল্যমানের ২০,০০০ (বিশ হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়। আটককৃত আসামীর নাম ও ঠিকানা নিম্নরূপঃ

(১) মোছাঃ হাসিনা বেগম (২৯), স্বামী-ইউসুফ (৪০), উনচিপ্রাং রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবির, ক্যাম্প নং-৮৫, ব্লক নং- বি, শেল্টার নং-১৫০, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার।

খ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় যে, ১০ আগস্ট ২০২১ তারিখ টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধীনস্থ খারাংখালী বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ বিআরএম-১৪ হতে আনুমানিক ৭০০ গজ দক্ষিণ-পূর্ব দিকে মৌলভিপাড়া খাল এলাকা দিয়ে মিয়ানমার হতে ইয়াবার একটি বড় চালান বাংলাদেশে পাচার হতে পারে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন সদর হতে একটি বিশেষ টহলদল দ্রুত বর্ণিত এলাকায় গমন করতঃ কয়েকটি উপদলে বিভক্ত হয়ে গাছের আঁড় নিয়ে গোপনে অবস্থান গ্রহণ করে। আনুমানিক ০২২০ ঘটিকায় টহল দল ০১ জন দুষ্কৃতিকারী ব্যক্তিকে নাফ নদী ও বেড়ীবাঁধ পার হয়ে মৌলভিপাড়া খালের কিনারা দিয়ে ০১টি প্লাস্টিকের বস্তা কাঁধে করে মৌলভিপাড়া গ্রামের দিকে যেতে দেখে। টহলদল উক্ত ব্যক্তিকে দেখা মাত্রই তাকে চ্যালেঞ্জ করে খুব দ্রুত অগ্রসর হয়। দুষ্কৃতিকারী দূর হতে বিজিবি টহলদলের উপস্থিতি অনুধাবন করা মাত্রই বহনকৃত বস্তাটি ফেলে দিয়ে রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে খুব দ্রুত পার্শ্ববর্তী গ্রামে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে টহলদল বর্ণিত স্থানে পৌঁছে তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করে ইয়াবা পাচারকারীর ফেলে যাওয়া ০১টি প্লাস্টিকের বস্তা উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত বস্তাটির ভিতর হতে ৯০,০০,০০০/- (নব্বই লক্ষ) টাকা মূল্যমানের ৩০,০০০ (ত্রিশ হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করতে সক্ষম হয়। ইয়াবা কারবারীকে আটকের নিমিত্তে বর্ণিত এলাকা ও পার্শ্ববর্তী স্থানে পরবর্তী ০৩০০ ঘটিকা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করা হলেও কোন পাচারকারী কিংবা তার সহযোগীকে আটক করা সম্ভব হয়নি। উক্ত স্থানে অন্য কোন অসামরিক ব্যক্তিকে পাওয়া যায়নি বিধায় ইয়াবা কারবারীকে সনাক্ত করাও সম্ভব হয়নি। তবে তাকে সনাক্ত করার জন্য অত্র ব্যাটালিয়নের গোয়েন্দা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

দমদমিয়া চেকপোস্ট হতে আটককৃত আসামীকে জব্দকৃত ইয়াবা ট্যাবলেটসহ নিয়মিত মামলার মাধ্যমে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়াও উদ্ধারকৃত মালিকবিহীন ইয়াবাগুলো বর্তমানে ব্যাটালিয়ন সদরের স্টোরে জমা রাখা হবে এবং প্রয়োজনীয় আইনী কার্যক্রম গ্রহণ পরবর্তীতে তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও মিডিয়া কর্মীদের উপস্থিতিতে ধ্বংস করা হবে।