দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখতে ব্যবসায়ীদের প্রতি শিল্পমন্ত্রীর আহবান

আপডেট: জানুয়ারি ১৫, ২০২৪
0

শিল্পমন্ত্রীর সাথে ঢাকা চেম্বারের পরিচালনা পর্ষদের সাক্ষাৎ

ঢাকা, ০১ মাঘ (১৫ জানুয়ারি ২০২৪):

আগামী রমজানে বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি। তিনি বলেন, রমজানকে সামনে রেখে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আশায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে দেন। এটি ধর্মীয় বা নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয়।

আজ ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর নব-নির্বাচিত সভাপতি আশরাফ আহমেদ-এর নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, এমপি-এর সাথে শিল্প ভবনে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাতকালে এসব কথা বলেন। ঢাকা চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী এবং সহ-সভাপতি মোঃ জুনায়েদ ইবনে আলীসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এতে অন্যদের মধ্যে পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসান, ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও) এর মহাপরিচালক মুহম্মদ মেসবাহুল আলম এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু. আনোয়ারুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিদ্যমান বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার বিষয়টি মোকাবেলায় আমাদের আভ্যন্তরীণ সম্পদের সুষম ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়নের পাশাপাশি যথাযথ বাস্তবায়ন একান্ত অপরিহার্য। সারাদেশে বিসিক-এর অব্যবহৃত প্লটসমূহে শিল্পকারাখানা স্থাপন ও বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য তিনি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহবান জানান এবং শিল্প মন্ত্রণালয় হতে এ ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। দেশের এসএমই উদ্যোক্তাদের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখাতের উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, বাজার সম্প্রসারণ, নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকার নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং আগামীতেও তা অব্যাহত থাকবে।

সাক্ষাতকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ পিপিপি মডেলের ভিত্তিতে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহের অবকাঠামাসহ অন্যান্য পরিসেবার উন্নয়নে বেসরকারিখাতের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং সারাদেশে বিসিক-এর শিল্প এলাকার অব্যবহৃত প্লটসমূহে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, এলডিসি পরবর্তী সময়ে আমাদের রপ্তানি পণ্যের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শিল্প নীতি, শ্রম নীতি, আমদানি-রপ্তানি নীতি এবং পরিবেশ সুরক্ষা বিষয়ক নীতিমালা সমূহের প্রয়োজনীয় সংষ্কার ও নীতি সমন্বয় একান্ত অপরিহার্য। এছাড়াও দেশের সিএমএসএমই খাতের সার্বিক বিকাশের লক্ষ্যে এসএমই সংজ্ঞা পুননির্ধারণ করার প্রস্তাব করেন ডিসিসিআই সভাপতি, যা কুটির, ক্ষুদ্র ও ছোট উদ্যোক্তাদের ঋণ এবং নীতি সহায়তা প্রাপ্তিতে সহযোগিতা করবে, এছাড়াও তিনি স্থানীয় শিল্পের বিকাশে ‘এসএমই আইন’ প্রণয়নের প্রস্তাব করেন।

চেম্বারের সভাপতি জানান, প্রতিবছর বাংলাদেশ পণ্য উৎপাদনে ৬৮.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাঁচামাল আমদানি করে থাকে, এমতাবস্থায় শিল্পখাতে আমদানি নির্ভরতা কমাতে তৈরি পোষাক, চামড়া, হালকা প্রকৌশলসহ সম্ভাবনাময় অন্যান্য খাতের কাঁচামাল উৎপাদনে নীতি সহায়তা ও সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। তিনি বলেন, জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান ৩৭.৫৬% হতে ৪০% উন্নীতকরণের লক্ষ্যে সরকার-বেসরকারিখাতের সমন্বয় আরো বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। সেই সাথে ক্লাস্টার ভিত্তিক শিল্পখাতের উন্নয়ন ও রপ্তানি খাতের বিকাশে ‘সেন্ট্রাল বন্ডেড ওয়ারহাউস’ স্থাপনের প্রস্তাব করেন। আশরাফ আহমেদ আরো বলেন, বর্তমানে বৈশ্বিক হালাল পণ্যের বাজার প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ‘ইসলামিক এন্টারপ্রেনিউরশীপ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট’-এর তথ্যমতে ২০৩০ সালে এর পরিমাণ হবে ১২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। সম্ভাবানময় এ বাজারে বাংলাদেশী উৎপাদিত পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধিতে বিএসটিআই সনদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, পণ্য উৎপাদনে সক্ষমতা বৃদ্ধি, নীতি, অর্থ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তাও প্রয়োজন।