না’গঞ্জে আ’লীগের কর্মী সভায় বিতর্কিত সেই কিশোর গ্যাং নেতা সন্ত্রাসী টাইগার ফারুক!

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২১
0

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ : সমাবেশটি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, জঙ্গিবাদ, কিশোর গ্যাং, মাদকের বিরুদ্ধে। অথচ এই সভায় উপস্থিতি অতিথিদের মঞ্চে যদি বিতর্কিত সন্ত্রাসী কোনো ব্যক্তি থাকেন, তাহলে এই কর্মী সমাবেশ প্রশ্নবিদ্ধতো হবেই। কেননা, যে ব্যক্তি নিয়ে কথা হচ্ছে তিনি হচ্ছে সিদ্ধিরগঞ্জের বহুল আলোচিত টাইগার ফারুক। যার বিরুদ্ধে ব্যানারে উল্লেখিত শব্দগুলো চারটির অভিযোগই রয়েছে। সম্প্রতি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশও তাকে আটক করেছিলো। এর আগে তার দলের বেশ কজন বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন থানায় মাদকসহ গ্রেফতারও হন। সে সব খবর বিভিন্ন দৈনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশও হয়েছে। তাই প্রশ্ন উঠেছে, শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ব্যানারে যে কর্মী সমাবেশ করলেন, এর যৌক্তিকতা কতটুকু ?।

এদিকে, ওই কর্মী সমাবেশে টাইগার ফারুকের উপস্থিতি দেখে অনেকেই ধারণা করছেন, টাইগার ফারুকের মত বিতর্কিত ব্যক্তিদেরকে আওয়ামী লীগের নেতারাই আস্কারা দেন। তাদের শেল্টারেই সে বিভিন্ন অপর্কম করে থাকেন।
তবে, টাইগার ফারুক নিজেকে সিদ্ধিরগঞ্জ এক নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দাবি করে থাকেন। যদিও টাইগার ফারুক প্রসঙ্গে থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবর রহমান গণমাধ্যমে বলেছিলেন, ‘সে আমার সংগঠনের কেউ না। আমার আওয়ামী লীগেরও কেউ না। টাইগার ফারুক কিভাবে ৬ মাস ১ বছর, ২ বছর ব্যবসা করে ৮ তলা বিল্ডিং বানাইছে। আর আমি ৫২ বছর ব্যবসা করে পারি না। আমার একটাই কথা যে যেই কর্ম করবো, তার ফল তাকেই ভোগ করতে হবে।’ এমনকী সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতিও জানিয়েছিলেন, ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের কোন কমিটি গঠন করা হয়নি। টাইগার ফারুক আমাদের দলের কেউ না।

এদিকে প্রশ্ন উঠেছে, টাইগার ফারুক যদি তাদের দলের কেউ না-ই হবে, তাহলে তাদের দলীয় কর্মী সমাবেশে সে কী করে উপস্থিত থাকে, তাও আবার সিনিয়র নেতাদের পিছনে একদম ঘনিষ্ঠভাবে?
উল্লেখ্য, এদিন সিদ্ধিরগঞ্জে আয়োজিত ওই কর্মী সমাবেশে স্থলে করা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. খোকন সাহা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া প্রমূখ। তাদের পিছনেই কজন যুবক দাঁড়ানো ছিলো। তাদের একজন টাইগার ফারুক। এছাড়াও রাজু নামক আরেকজন যুবক ছিলেন। তার বিরুদ্ধেও নানা সময় নানা অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদ থেকে টাইগার ফারুক সম্পর্কে জানা গেছে, ১৭ এপ্রিল রাতে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় থেকে রাকিব, ওমর, সোলায়মান, ফরহাদ ও অয়নকে ৯৬ বোতল ফেনসিডিল ও ১৮ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার করে। এসময় মাদকের কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার জব্ধ করা হয়। অন্যদিকে গত ২ এপ্রিল শুক্রবার গভীর রাতে নয়াপল্টন এলাকায় একটি বিশেষ চেকপোষ্ট স্থাপনের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে মাদক ব্যবসায়ী মিলন, তার ভায়রা মোঃ মোশারফ হোসেন ও সহযোগী মোঃ মহিন উদ্দিন হোসেন হƒদয়কে গ্রেফতার কর হয়।

এসময় গ্রেফতারকৃত আসামীদের নিকট হতে ২০ কেজি গাঁজা, ১টি প্রাইভেটকার, ৩টি মোবাইল ফোন এবং ৪টি সীমকার্ড উদ্ধার করে র‌্যাব-৩ এর একটি দল। দু’টি অভিযানের গ্রেফতারকৃত প্রত্যেকেই টাইগার ফারুকের মাদক সিন্ডিকেটের সদস্য বলে জনিয়েছেন এলাকাবাসী।

এছাড়াও গত ২০ মার্চ বিপুল পরিমানের গাঁজা ও ফেন্সিডিলসহ আলমগীর হোসেন নামে আরো এক টাইগার ফারুকের সহযোগীকে কুমিল্লা জেলার ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে এলাকায় খবর বেড়িয়েছে। গ্রেফতারকৃত মাদক ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, টাইগার ফারুক নিজেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট লোক ও যুবলীগের কর্মী পরিচয় দিয়ে এসব মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছে। আটকদের মধ্যে মিলন টাইগার ফারুকের ম্যানেজার।