না খেয়ে মানুষ মরেছে প্রমাণ দিলে মন্ত্রিত্ব ছাড়ব: কৃষিমন্ত্রী

আপডেট: এপ্রিল ৭, ২০২২
0

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে কেউ না খেয়ে মরেছে এমন প্রমাণ দিতে পারলে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) সকালে মানিকগঞ্জ ঘিওর উপজেলায় বানিয়াজুরী এলাকায় ‘ব্রিধান ৯২’ জাতের বীজ উৎপাদনকারী ব্লকের কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিএনপির শাসনামলে তারেক জিয়া ও খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিল। ২০০৩ ও ২০০৪ সালে শত শত মানুষ না খেয়ে মারা গেছে। আর বর্তমান সরকারের আমলে একজন মানুষ না খেয়ে মারা গেছে, যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারে, তাহলে আমি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেব।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে খাদ্যের কোন সংকট নেই, একটি মানুষও না খেয়ে নেই। অথচ বিএনপির একদল নেতা সারাদিন শুধু টেলিভিশনে ও পত্রপত্রিকায় খাদ্য সংকটের কোরাস গেয়ে চলেছে, যা শুনলে মনে হয় দেশে দুর্ভিক্ষ চলছে, মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছে। কিছু বুদ্ধিজীবী ও সুশীলসমাজও এ কোরাসের সাথে সুর মিলিয়েছে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, চালের উৎপাদন বাড়াতে উচ্চ ফলনশীল ব্রিধান ৮৯ ও ব্রি ৯২ দ্রুত সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এ দুটি বোরো জাতের ধানের উৎপাদন প্রতি শতাংশে প্রায় ১ মণ। এটিকে দ্রুত মাঠে নিয়ে যেতে চাই। সেজন্য এসব জাতের বীজ উৎপাদনের জন্য এবার কৃষকদেরকে বিনামূল্যে বীজ দেয়া হয়েছে। সারা দেশে জনপ্রিয় করতে প্রয়োজনে কৃষকদেরকে আরও প্রণোদনা দেয়া হবে।

কৃষিজমি রক্ষায় সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, একদিকে করোনা মহামারি রয়েছে, অন্যদিকে যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে গম আসছে না। ইতোমধ্যে বিশ্বের অনেক দেশেই দুর্ভিক্ষের হাতছানি দেখা যাচ্ছে। সেজন্য, কৃষি উৎপাদনে আমাদের স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকতে হবে। কাজেই কৃষিজমি রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সকলের। কৃষিজমি রক্ষায় যে আইন হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ সবাই মিলে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। শিল্পায়নও করতে হবে, আবার কৃষিজমিও রক্ষা করতে হবে। এ দুটির মধ্যে ভারসাম্য আনতে হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এবছর ধানবীজ উৎপাদনের জন্য মানিকগঞ্জের ১৬টি স্পটে ১০৪৪ বিঘা জমিতে ব্রিধান ৮৯ ও ৯২ এর আবাদ হয়েছে। ৮১৪ জন কৃষক এ বীজ ধান চাষ করেছেন। কৃষকদেরকে নানাভাবে প্রণোদনা ও পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে ৫ হাজার কেজি বীজ। সমলয়ের আদলে একসাথে ধান রোপণ করা হয়েছে, ধান কাটাও হবে একই সময়ে হার্ভেস্টারের মাধ্যমে।

মানিকগঞ্জের উপপরিচালক এনায়েত উল্লাহ জানান, তাদের হিসাবে (১০৪৪ বিঘা জমি থেকে) এবছর জেলায় প্রায় ১ হাজার টন ব্রিধান ৮৯ ও ৯২ ধানবীজ উৎপাদন হবে। যা দিয়ে আগামীবছর ৪০ হাজার হেক্টর বা ১ লক্ষ একর জমিতে ব্রিধান ৮৯ ও ৯২ চাষ করা যাবে; এবং তাতে ৫০ হাজার টন বাড়তি ধান উৎপাদন করা সম্ভব হবে।

পরিদর্শনকালে কৃষিসচিব মো: সায়েদুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজীর আলম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক মো: শাহজাহান কবীর, মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহা. আব্দুল লতিফ, পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান, কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক এনায়েত উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।