নির্বাচন নির্বাচন খেলা নয়, বিএনপি ‘সত্যিকারের নির্বাচন’ চায় –মির্জা ফখরুল

আপডেট: অক্টোবর ৩, ২০২১
0

নির্বাচন নির্বাচন খেলা নয়, বিএনপি ‘সত্যিকারের নির্বাচন’ চায় বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ আপনারা(সরকার) নির্বাচন কমিশন একটা করেছেন যে নির্বাচন কমিশন আপনাদের হুকুমে চলে, আপনাদের বংশবদ। আর নির্বাচন একটা করবেন যে নির্বাচনে ভোটাররা যাবে না, ইভিএম মেসিন দিয়ে ভোট দিয়ে দেবেন। সেই ধরনের নির্বাচন এদেশের মানুষ আর করতে দেবে না।”

‘‘ আমি খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, এদেশের মানুষ কখনোই এই নির্বাচন নির্বাচন খেলা করে আর নির্বাচন হতে দেবে না। তারা সত্যিকার অর্থে নির্বাচন চায়। আমরা অবশ্যই নির্বাচন চাই। নির্বাচন করেই আমরা মানুষের,জনগনের ভালোবাসা নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যেতে চাই এবং সেখানে কাজ করতে চাই। অতীতে করেছি আমরা। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বার বার নির্বাচনে জনগনের ভোটে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, আমাদের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নির্বাচিত হয়েছেন।”

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আজকে গোটা বাংলাদেশ দেশ তাঁকিয়ে আছে আমাদের দিকে, বিএনপি এবং আমাদের সমস্ত অঙ্গসংগঠনের দিকে যে আমরা নেতৃত্ব দেবো এই সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে জনগনের একটা সরকার প্রতিষ্ঠার যে আন্দোলন সেই আন্দোলনের প্রস্তুত হতে হবে। এখন আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, সংগঠনকে শক্তিশালী করা।”

‘‘আজকে এই সরকার যাদের হাতে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিরাপদ নয়, যাদের হাতে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই্, যেখানে গণতন্ত্র নেই, যেখানে মানুষের জীবিকার নিরাপত্তা নেই। এই সরকার অবশ্যই আমাদেরকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে একটা জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।”

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ সংগঠিত হন, সংগঠনকে শক্তিশালী করেন। নেতৃবৃন্দকে অুনরোধ করবো-আপনারা গোটা বাংলাদেশ সফর করেন। প্রয়োজন আছে। তাহলে তারা উজ্জীবিত হবে এবং সংগঠন শক্তিশালী হবে।”

‘সরকার জনগনের বড় শক্র’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ আপনারা কয়েকদিন ধরে দেখেছে, ই-কমার্স ব্যবসা-বানিজ্য। শুধু ই-ভ্যালী নয়, প্রায় ১১/১২টার মতো প্রতিষ্ঠান যারা মানুষের কাছে থেকে বহু টাকা, হাজার হাজার কোটি টাকা তারা নিয়ে নিয়েছে এবং তার কোনো ব্যবস্থা সরকার আগে গ্রহন করতে পারে নাই।”

‘‘ আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই, নির্বাচন হয় নেই। আজকে দুর্নীতির কোনো জবাবদিহিতা নেই। যে যেখানে যেমন খুশি চুরি করছে, ডাকাতি করছে তার কোনো জবাবদিহিতা নেই। আইনশৃঙ্খলা বলতে কিচ্ছু নেই। গুমের সংস্কৃতি তারা চালু করেছে। এই যে রাষ্ট্র তারা তৈরি করেছে এই রাষ্ট্র আমাদের রাষ্ট্র নয়। এই রাষ্ট্র কখনই আমরা চাইনি। আওয়ামী লীগ সেজন্য আজকে বড় শত্রুতে পরিণত হয়েছে।”

হেফাজতে ইসলামসহ দেশের আলেম-উলামা এবং বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ওপর সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের কঠোর সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব।

জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জাতীয়তাবাদী উলামা দলের উদ্যোগে সংগঠনটির ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই আলোচনা সভা হয়।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্‌র চন্দ্র রায় বলেন, ‘‘ তুলনামূলকভাবে এই সরকার বেশি সময় থেকেছে এবং তার যাওয়ার সময়টা অত্যন্ত সংক্ষেপ করতে হবে। এখন আমাদের জিয়াউর রহমানের কথাটাই বেশি স্মরণ করতে হবে- লেস টক, মোর ওয়ার্ক। কথা কম, কাজটা একটু বেশি করতে হবে। বলা আমাদের অনেক হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের কথা কিন্তু অনেক বাকী রয়ে গেছে। আমরা সেদিকে মনোযোগী হই।

‘‘ জনগনের মধ্যে আগামী দিনে একটি সুন্দর রাষ্ট্র অর্থাত জিয়ার বাংলাদেশ, যেই স্বপ্ন নিয়ে তিনি দেশ স্বাধীন বাংলাদেশে সেই দেশের জনগন কেমন আছে-সেটা আমরা ভাবি এবং ভবিষ্যতে সকল জুলুম-অত্যাচার-নির্যাতন থেকে জনগনকে মুক্ত করা এবং জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রত্যেকটি নাগরিকের যে অধিকার সেই অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠানিক রুপ –এটা আমাদের সুনিশ্চিত করতে হবে।”

উলামা দলের আহবায়ক মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মাওলানা নজরুল ইসলাম তালুকদারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, উলামা দলের মাওলানা সেলিম রেজা, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা মশিউর রহমান, মাওলানা আবুল হোসেন, মাওলানা আলমগীর হোসেন, মাওলানা আলমগীর হোসেন খলিলী, মাওলানা শামসুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।