নীলফামারীতে ওয়ার্ডবয় দিয়ে অ্যানেস্থেসিয়া, প্রসূতির মৃত্যু

আপডেট: মে ২৭, ২০২১
0

আব্দুর রাজ্জাক, নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর ডোমার উপজেলা শহরে সরকার অ-অনুমোদিত একটি বেসরকারী ক্লিনিকে লিপি আক্তার (২০) নামের এক প্রসূতির অপ-চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে ওই প্রসুতির সিজারিয়ান অপারেশনের সময় ওয়ার্ডবয় দিয়ে অ্যানেস্থেসিয়া দেয়া হয়েছে। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয় বলে অভিযোগে প্রকাশ। নিহত লিপি আক্তার ডোমার পৌরসভার ডাঙ্গাপাড়া এলাকার মিলন ইসলামে স্ত্রী ও গোমনাতি ইউনিয়নের আমবাড়ি এলাকার রইসুল ইসলামে মেয়ে। এ মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার (২৬ মে) রাত ৮ টার দিকে জেলার ডোমার উপজেলা শহরের পদ্মা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগ করে ওই ক্লিনিকের ওয়ার্ডবয় জিয়া হোসেন।

সিজার করেন ময়মনসিংহ জেলার ঈশ^রগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনী ডাক্তার ফারজানা আফরিন। নিজ কর্মস্থলে না গিয়ে ডোমারের ওই ক্লিনিকে বেশী সময় ধরে রোগী দেখার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। লিপির বাবা রইসুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, সন্ধ্যায় আমার মেয়ে সিজারের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আমাদের জানায় একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়েছে। আর আমার মেয়ের নাকি শ^াসকষ্ট দেখা দিয়েছে। ক্লিনিকের লোকজন একটি মাইক্রোবাসে করে আমার মেয়েকে তুলে রংপুর মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের জানায়। শ^াসকষ্ট হলে অক্সিজেন কেন দেওয়া হচ্ছে না জানতে চাইলে, তারা জানায় অক্সিজেন লাগবে না। রংপুর মেডিকেলে ক্লিনিকের লোকজন আমাদের নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।

আমার মেয়ের অনেক আগেই মৃত্যু হয়েছে বলে রংপুর মেডিকেল হতে আমাদের নিশ্চিত করে। তিনি অভিযোগ করেন, সিজারের সময় জিয়া হোসেন নামের ক্লিনিকের এক ওয়ার্ড বয় অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ায় আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। ওয়ার্ড বয় জিয়া হোসেন সাংবাদিকদের দেখে দৌড় দিয়ে পালিয়ে যায়। তার সেলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায় নাই।

অপারেশনের নেতৃত্বদানকারী ময়মনসিংহ জেলার ঈশ^রগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনী ডাক্তার ফারজানা আফরিন সাক্ষাতে কথা বলবে বলে তার সেলফোন কেটে দেয়। এ ব্যাপারে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পারিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রায়হান বারী জানান, বিষয়টি শুনেছি, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ক্লিনিকটি রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করেছে। এখনো রেজিষ্ট্রেশন পায়নি। এ ব্যাপারে ঈশ^রগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নুরুল হুদা খান সাংবাদিকদেও জানান, ডাঃ ফারজানা আফরিন মাঝে মধ্যে কাজে ফাঁকি দেয়। তবে গত সপ্তাহে তিনি উপস্থিত ছিলেন। ওয়ার্ডবয় কোনভাবেই অ্যানেস্থেসিয়া দিতে পারে পারে না বলে তিনি দাবী করেন।
আব্দুর রাজ্জাক/নীলফামারী প্রতিনিধি