নেপিয়ার পাকচং ঘাস চাষে বিপ্লব ভূরুঙ্গামারী উপজেলা প্রানী সম্পদ বিভাগের

আপডেট: মে ২৩, ২০২১
0

ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে প্রানী সম্পদ বিভাগের কযাম্পাসে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে নেপিয়ার পাকচং ঘাসের চাষ করে বিপ্লব ঘটিয়েছেন উপজেলা প্রানী সম্পদ বিভাগ। সেই ঘাস এখন হাটে বাজারে স্বল্প মূল‍্য বিক্রি করছেন তারা।

গত শনিবার(২২ মে) বিকেলে উপজেলা প্রানী সম্পদ বিভাগের উদযোগে ভূরুঙ্গামারী হাটে এই নেপিয়ার পাকচং জাতের ঘাস বিক্রির উদ্ভোধন করা হয়।এসময় উপস্হিত ছিলেন উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকতা ডাক্তার শামীমা আক্তার উপসহকারি প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ও হাট ইজারাদার আনোয়ারুল হক।
সপ্তাহে দুই দিন শনি ও মঙ্গলবার ভূরুঙ্গামারী হাটে ৩ টাকা কেজি দরে এই জাতের ঘাস বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

জামালপুরে আরেক ব্যবসায়ীর ঘাস চাষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে নেপিয়ার পাকচং একটি হাইব্রীড, দ্রুত বর্ধনশীল এবং উচ্চ উৎপাদন সম্পন্ন স্থায়ী ঘাস।এটি গবাদিপশুর জন্য একটি অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সুস্বাদু ও মিষ্টি প্রকৃতির ঘাস। সাধারণ নেপিয়ার ঘাসে যেখানে মাত্র ৮-১২% ক্রুড প্রোটিন থাকে সেখানে নেপিয়ার পাকচং ঘাসে ১৬-১৮% ক্রুড প্রোটিন পাওয়া যায়।নেপিয়ার পাকচং ঘাসে আছে শুস্ক পদার্থ ২৫% প্রোটিন ১৬% ফ‍্যাট ১% ফাইবার ২৭% ও মোটাবলিক এনার্জি ২ মেগাজুল / কেজি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, থাইল‍্যান্ডের পাকচং এলাকার একদল গভেষক আফ্রিকান নেপিয়ার ঘাসের সাথে মুক্তা বাজরা ঘাসের টিস‍্যূ কালচার করে এই বিশেষ উচ্চ ফলনশীল জাতের ঘাস উদ্ভাবন করেন।এ জন‍্য থাইল‍্যান্ডের পাকচং স্হানের নাম অনুসারে এই নেপিয়ার পাকচং জাতের ঘাসের নাম করন করা হয়েছে।
প্রানী সম্পদ বিভাগ জানিয়েছেন তাদের উৎপাদিত নেপিয়ার পাকচং ঘাস চাষ দেখে অনেক খামারি উদ্ভূদ্ধ হয়ে তারা এই জাতের ঘাস চাষ করছেন এবং তাদের পশুর খাদ‍্যের চাহিদা মিটাচ্ছেন।


গো-খাদ্যের সংকটের কারণেই বেড়েছে চাষ করা ঘাসের চাহিদা। বিভিন্ন জাতের ঘাস থাকলেও নেপিয়ার পাকচং ঘাস অন‍্য ঘাসের তুলনায় অনেক বেশি পূষ্টিগুন সম্পন্ন বলে জানিয়েছেন খামারীরা। তাই তারা নেপিয়ার ঘাসের চাষ করছেন।এতে তাদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছেন উপজেলা প্রানীসম্পদ বিভাগ।
এই ঘাসের সবচেয়ে বেশি চাহিদা সৌখিন গবাদি পশু পালনকারি ও খামার মালিকদের কাছে। বর্তমানে খৈল, ভুসি আর বিচালির দাম আকাশ ছোঁয়া। তাই সঙ্গত কারণে তাজা নেপিয়ার পাকচং ঘাস পশু
পালনকারীদের কাছে বেশি পছন্দের। অন্যদিকে গাভী পালনকারীরা বেশি দুধ পাওয়ার আশায় এই জাতের সবুজ ঘাসকেই গোখাদ্য হিসাবে বেছে নিয়েছেন। তাই তারা উপজেলা প্রানী সম্প্দ বিভাগের সহযোগিতা নিয়ে ঘাস চাস করছেন।এতে খামারিদের উৎসাহ যোগাচ্ছেন উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার শামীমা আক্তার ও উপসহকারী প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার রফিকুল ইসলাম।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে খামারীরা ঘাস চাষের জমিতে কেবল ঘাসই নয়, সাথী ফসল হিসাবে অন্য ফসলও ফলাচ্ছেন। ফলে এক জমি থেকেই ভালো লাভ তুলে নিচ্ছেন।

ভূরুঙ্গামারী হাটে ঘাস কিনতে আসা আশরাফুল আলম বলেন এই জাতের ঘাস খুব ভাল এবং সাশ্রয়ী।গবাদি পশুও খেতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে তাই ঘাস বিক্রির খবর পেয়ে আজকের হাটে কিনতে আসছি।তাছাড়া নতুন প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা মহোদয় অত‍্যন্ত ভাল মনের মানুষ। তিনি এই অফিসে যোগদানের পর থেকেই আমাদেরকে পশু পালন ও এই জাতের ঘাস উৎপাদনের বিষয়ে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করে আসছেন। তাঁর আন্তরিকতায় আমরা মূগ্ধ।

উপসহকারী প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন বর্তমান স‍্যার যোগদানের পর থেকেই এই জাতের ঘাস চাষের উদ‍্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষে ও বাজারজাত করনে বিশেষ ভূমিকা গ্রহন করে আসছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার শামীমা আক্তার জানান, নেপিয়ার পাকচং ঘাস অন‍্যান‍্য জাতের ঘাসের চেয়ে অনেক পুষ্টিগুন সম্পন্ন। যা গবাদি পশু স্বাস্হ‍্যবান হওয়ার জন‍্য খুবই উপকারী। গবাদি পশু পালকারীরা প্রত‍্যেকেই এই জাতের ঘাস চাষ করতে চাইলে আমরা তাদেরকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করব ইনশাআল্লাহ।
####
আমিনুর রহমান বাবু