নোয়াখালীতে ইশরাকের গাড়ি বহরে যারা হামলা করলো তারাই উল্টা মামলা দিলো বিএনপির ১৪৯ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে

আপডেট: জুলাই ১৯, ২০২৩
0

আজাদ ভুঁইয়া, স্টাফ রিপোর্টার :

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের গাড়ি বহরে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মিদের হামলার পর ওই ঘটনায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী বরকত উল্যা ভুলুর পুত্র সহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ১৪৯ নেতাকর্মির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ছাত্রলীগ।

শনিবার (১৫জুলাই) বিকেলে ছাত্রলীগ কর্মি সজিবুল ইসলাম বাদী হয়ে সোনাইমুড়ী থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে ১০০/১২০জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

এসব তথ্য নিশ্চিত করেন সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক।

মামলায় কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী বরকত উল্ল্যা বুলুর ছেলে বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপি সহ সভাপতি ওমর শরীফ মোঃ ইমরান সানিয়াতকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়া বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হক আবেদ, সোনাইমুড়ী পৌরসভা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোতাহের হোসেন মানিক, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রেজায়ে রাব্বি মাহবুব, সোনাইমুড়ী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আবুল মনসুর সেলিম, সোনাইমুড়ী উপজেলা যুবদল সভাপতি জসিম উদ্দিন, সাবেক উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি মোস্তাফিজ, উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি নাজিম উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক নূর মোহাম্মদ সাদ্দাম, পৌর ছাত্রদল সভাপতি আলা উদ্দিন রাজুসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ২৯ নেতাকর্মির নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ১০০/১২০ জনকে আসামি করা হয়।

সোনাইমুড়ী পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মোতাহের হোসেন মানিক বলেন, জনতার মেয়র ইশরাক হোসেন এর গাড়ি বহর সোনাইমুড়ী পার হওয়ার সময় দুইটি মোটরসাইকেল বহর থেকে একটু দুরে চলে যায়, শাসকদলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তাদের উপর হামলা চালায়। এসময় যুবদল নেতা সালাহ উদ্দিন গাজীর মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দিয়েছে তারা। হামলায় অন্তত ৫/৬ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। অল্প কিছুক্ষণের
মধ্যে ইশরাকের বহরটি সেখানে পৌছে ধর ধর বলে দাওয়া করলে আলীগের ক্যাডাররা দ্রুত পালিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, আলীগের সশস্ত্র ক্যাডাররা হামলা করল বিএনপির উপর, আবার উল্টো ঘটনার দুই দিন পর তারা মিথ্যা ও হয়রানি মূল মামলা দিল বিএনপির বিরুদ্ধে। আলীগ সন্ত্রাস নৈরাজ্য করে এবং প্রশাসনের একটি অংশকে ব্যবহার করে অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চায়। দেশব্যাপী চলমান একদফার আন্দোলনকে বাধাগ্রস্থ করতে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা হয়রানি ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়েছে। বিএনপির সাথে দেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ এখন ঐক্যবদ্ধ, এখন এদের পরাজয় নিশ্চিত।

সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের একাংশের সভাপতি আরিফ হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার নেতৃত্বে কোনো হামলা হয়নি। ইশরাকের গাড়ি বহর থেকে তাদের দলের নেতাদের নিয়ে অশ্লীল স্লোগান দেওয়া হয়। এরপর স্থানীয় এমপি সহ দলীয় নেতাদের রাস্তার পাশে থাকা ফেস্টুন ভেঙ্গে ফেলে বিএনপির নেতাকর্মিরা। পরে বাইপাস সড়ক এলাকায় আসলে ছাত্রলীগ প্রতিবাদ করে। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মিরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মিদের ওপর হামলা চালায়। সেখানে ৪-৫জন ছাত্রলীগ কর্মি আহত হয়। আহতদের মধ্যে থেকে সজিবুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

নোয়াখালী জেলা যুবদল সভাপতি মন্জুরুল আজিম সুমন অভিযোগ করেন, চলমান একদফা আন্দোলন থেকে বিএনপির নেতাকর্মিদের মাঠ ছাড়া করতে সরকার আবার নেতাকর্মিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা দিচ্ছে। তিনি বলেন, অবাক লাগে তারা হামলা চালালো এরপর উল্টো আবার মিথ্যা মামলা দিল। আমরা সোনাইমুড়ী ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মিদের সন্ত্রাসী হামলা ও এই মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একইসঙ্গে শাসক দলের পকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।

বিএনপির নেতাকর্মিদের ওপর হামলার পর মামলা নেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে, ওসি জিয়াউল হক বলেন, বিএনপির নেতাকর্মিরা আমাদের কাছে এমন কোনো অভিযোগ করেনি। যারা অভিযোগ করেছে তাদের মামলা নেওয়া হয়েছে। বিএনপির অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।