নোয়াখালী চাটখিলে এমপির অনুষ্ঠানে আলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ। পুলিশসহ আহত ১০

আপডেট: মে ৯, ২০২৩
0

আজাদ ভুঁইয়া, স্টাফ রিপোর্টার :

নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) আসনের সংসদ সদস্য এইচএম ইব্রাহীম বিদ্যালয়ের ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের গ্রুপের সাথে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা মো. আনোয়ার হোসেন ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জহির উদ্দিন স্বপন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশসহ অন্তত ১০জন আহত হয়েছে। পরে পুলিশ ১১ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

রোববার বিকেল ৫টার দিকে মোহাম্মদপুর জনতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমপির পাশে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জহির উদ্দিন স্বপন পাটোয়ারীসহ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা আহতের খবর পাওয়া গেছে ।

আলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন ও জহির উদ্দিন স্বপন জানান, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ভোট করায় আওয়ামী লীগ নেতাদেরকে অনুষ্ঠানে এমপি এইচ এম ইব্রাহিমের পাশে দাঁড়ানো দেখে ক্ষুব্ধ হন বিদ্রোহী থেকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বাহালুল। পরে তার লোকজন নিয়ে এমপির সামনে দলীয় প্রতিপক্ষের কয়েক জনের উপর আক্রমণ করেন চেয়ারম্যানের লোকজন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিদ্রোহী মেহেদী হাসান বাহালুল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের যারা তার ভোট করেনি তাদের উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। রোববার বিকেলে সংসদ সদস্যের পাশে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে ধাক্কাধাক্কি হয়। এরপর এমপির সামনে বাহালুল চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে শতাধিক সন্ত্রাসী নিয়ে হামলা চালায়।

হামলার সত্যতা স্বীকার করে মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জহির উদ্দিন স্বপন পাটোয়ারী বলেন, এমপির সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান বাহালুল নির্বাচিত হয়ে আওয়ামীলীগ দমনে কাজ করে আসছেন। বিদ্যালয় ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সে পরিকল্পিতভাবে বহিরাগতদের নিয়ে এ হামলা চালিয়েছে। তিনি আরও জানান, হামলায় বাধা দিতে গেলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে বাহালুল চেয়ারম্যান বাকবিতন্ডা হয়। এসময় বাহালুলের লোকজন পুলিশের গাড়িতেও হামলার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে হামলাকারীদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এ ব্যাপারে মোহাম্মদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বাহালুল এর নিকট জানতে চাইলে, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি জানান, ঘটনার সূত্রপাত হয় এমপির পাশে দাঁড়ানো কে কেন্দ্র করে। প্রথমে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইভু কাকার সাথে আনোয়ারের কথা কাটাকাটি হয়, তবে এটি বেশি দূর ঘড়ায়নি। বাহালুল আরও বলেন এমপি সাহেব ও তিনি অনুষ্ঠান শেষে অপর একটি প্রোগ্রাম এ চলে যান। পরবর্তীতে আবার দূই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে তিনি লোকজন নিয়ে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এসময় পুলিশ তার সাথে ও ইউপি সদস্যের সাথে খুব খারাপ আচরণ করেন।

এ ঘটনা নিয়ে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য এইচএম ইব্রাহীম জানান, মূলত স্কুল কমিটি নিয়ে বাহালুল ও আনোয়ার এর সাথে বিরোধ চলে আসছে। তবে আমি চলে আসার পর বিরোধের জের ধরে হয়তোবা ঠেলা ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। এ ঘটনায় প্রশাসন প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, হামলায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ থামাতে ১১ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতার ও মামলার প্রস্তুতি চলছে।