পরকীয়ার অভিযোগে আ’লীগ নেতার ছেলেকে গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটিয়ে খুন, আটক ১

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২২
0
ক্যাপশনঃ গাজীপুর ঃ কালীগঞ্জে নিহত সোহেলের স্বজনদের আহাজারী ও নিহতের ছবি। ###

গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের কালীগঞ্জে পরকীয়া প্রেমের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতার ছেলেকে গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে খুন করেছে প্রেমিকার স্বজনরা। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শনিবার শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

নিহতের নাম সোহেল ভূঁইয়া (৩৫)। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরসাদী গ্রামের মৃত ছালাম ভূঁইয়ার ছেলে। নিহতের বাবা বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য এবং ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং তার বোন (নিহতের) ওই ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য।

আটতকৃতের নাম- শুক্কুর আলী (৩৮)। সে বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের দক্ষিণবাগ এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে।

নিহতের ছোট ভাই সোহাগ ভূঁইয়াসহ স্বজনরা জানান, কালীগঞ্জ থানাধীন বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের দক্ষিণবাগ এলাকার মৃত মঞ্জুর ভ্থঁইয়ার মেয়ে জেরিনের সঙ্গে প্রতিবেশী বাহাদুরসাদী গ্রামের সোহেলের সঙ্গে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বছর খানেক আগে পার্শ্ববর্তী জামালপুর গ্রামের মামুন শেখের সঙ্গে জেরিনের বিয়ে হয়। এতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে সোহেল। সে প্রায়শঃ জেরিনের বাড়ির পাশে গিয়ে বসে থাকতো। বৃহষ্পতিবার জেরিন তার বাবার বাড়ি বেড়াতে আসে।

নিহতের ভাই আরো জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রতিবেশী মোতালেবের বাড়িতে অবস্থান করছিল সোহেল ভ্থঁইয়া। সেখান থেকে জেরিনের কয়েক আত্মীয় সোহেলকে ডেকে মঞ্জুর ভ্থঁইয়ার (জেরিনের বাবা) বাড়ি নিয়ে যায়। সেখানে তারা জেরিনের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কের অভিযোগ এনে সোহেলের হাত-পা মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে সোহেলকে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে হাত ও পায়ের হাড় ভেঙ্গে দেয়। কয়েক ঘন্টার নির্যাতনে সোহেল অচেতন হয়ে পড়ে। তার অবস্থা খারাপ দেখে সোহেলকে স্থানীয় কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় জোবায়ের ও পনিরসহ অভিযুক্ত কয়েক ব্যক্তি। সেখান সোহেলের অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকাল ৮টার দিকে সোহেলের মৃত্যু হয়।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক অভিজিৎ দাস জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে গুরুতর আহত সোহেলকে হাসপাতালে আনা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণের পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। কিন্তু ঢাকায় স্থানান্তরের আগেই শনিবার সকাল ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে।

কালীগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. যোবায়ের বলেন, ময়না তদন্তের জন্য শনিবার শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের বাম পায়ে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়াও তার ডান পায়ে ও শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের আলামত পাওয়া গেছে। এঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুক্কুর আলী (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।