পরীমনি-হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ আটক নারীদের জন্য ন্যায় বিচার চায় সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি

আপডেট: আগস্ট ২৪, ২০২১
0

চলচ্চিত্র অভিনেত্রী পরীমনিসহ কয়েকজন নারীকে গ্রেফতার পরবর্তী পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে হয়রানি ও অপপ্রচার বন্ধসহ ন্যায়বিচারের দাবিতে নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির বিবৃতি প্রদান করেছে।

বিবৃতিদাতা বিশিষ্ট নাগরিক নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির সদস্যবৃন্দঃ

ব্যারিস্টার এম. আমীর -উল ইসলাম, চেয়ারপারসন; ডা.ফওজিয়া মোসলেম, আহ্বায়ক; জাতীয় কমিটির সদস্য বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর এর ট্রাস্টি মফিদুল হক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, মামুনুর রশীদ, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি অ্যাড. জেড আই খান পান্না, অ্যাড.এস.এম.এ সবুর, মানবাধিকার কর্মী অ্যাড.সুলতানা কামাল, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এর সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত, বাসুদেব ধর, সোহরাব হাসান, ডাকসুর সাবেক জিএস মাহবুব জামান, অধ্যাপক ডা. রওশন আরা বেগম, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা, অধ্যাপক এম. এম. আকাশ, অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদা, অধ্যাপক ড. কাবেরী গায়েন, ব্যারিস্টার তানিয়া আমির, ডা. শাহিদা চৌধুরী, গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল, ব্যরিস্টার এ কে রাশেদুল হক, সঞ্জীব দ্রং, জাতীয় কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি রেখা চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম লিগ্যাল এইড সম্পাদক সাহানা কবির, অর্থ-সম্পাদক দিল আফরোজ বেগম, সংগঠন সম্পাদক উম্মে সালমা বেগম, প্রশিক্ষণ-গবেষণা ও পাঠাগার সম্পাদক রীনা আহমেদ প্রমূখ।

জাতীয় কমিটির সদস্যবৃন্দের বক্তব্য-
মহোদয়,
সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালিয়ে ঘরে মাদক রাখা, বাড়িতে পার্টি দেয়া ও অন্যান্য অভিযোগে অভিনেত্রী পরীমনিসহ কয়েকজন নারীকে গ্রেফতার করে। অভিনেত্রী ও নারীদের গ্রেফতারের পর কিছু সংবাদ মাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমনভাবে সংবাদ প্রচার ও শব্দ প্রয়োগ করা হয়,যাতে নারীর আত্মমর্যাদা ক্ষুন্ন হয়। এই ধরনের সংবাদ প্রচার নারীর মানবাধিকার লংঘনের সামিল। এতে অপরাধ প্রমাণের পূর্বে ভিকটিম ব্লেমিং না করার নীতি লংঘিত হয়েছে।

অসৎ উপায়ে অর্থ উপার্জন করা, এটা টিকিয়ে রাখার জন্য অপরাধীচক্র তৈরির যে অপচেষ্টা তারই শিকার পরীমনি, কিশোর গ্যাং এর সাথে জড়িতরা যা ঘটনাগুলোর মধ্যে দিয়ে প্রতিফলিত হয়েছে। নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি সুশাসন নিশ্চিতকরণসহ এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ঘটনার মূল কারিগরদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানাচ্ছে।

সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে সামাজিক অবক্ষয়, অনাচার এবং নারীবিদ্বেষী পুরুষতান্ত্রিকতার বিস্তার যেভাবে ফুটে উঠেছে তা আমাদের গভীরভাবে ব্যথিত ও উদ্বিগ্ন করেছে।

অভিযুক্ত নারীদের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধ-সংশ্লিষ্টতার সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে আদালতে তাদের বিচার হবে। এ ক্ষেত্রে কারও কিছু বলার নেই। কিন্তু তারা যেন কারও কোনো প্রতিহিংসার শিকার হয়ে হয়রানি না হন। আদালত কর্তৃক অপরাধ প্রমাণের আগে উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা সমীচীন নয়। সংবিধানে বর্ণিত আইনের আশ্রয়লাভের সুযোগের সমতাও থাকতে হবে।

নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি চলচ্চিত্র অভিনেত্রী পরীমনিসহ কয়েকজন নারীকে গ্রেফতার পরবর্তী পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। পাশাপাশি হয়রানি ও অপ্রচার বন্ধসহ ন্যায়বিচার, সুবিচার নিশ্চিতকরণের দাবি জানাচ্ছে। এটাকে কেন্দ্র করে যে কলুষিত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে তা থেকে উত্তরণ জরুরী হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে সদস্যবৃন্দ সরকার ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।

পাশাপাশি সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ জোরদার করার আহ্বান জানাচ্ছে।