পিতা

আপডেট: জুলাই ১৬, ২০২২
0


ডা.জাকারিয়া চৌধুরী

আব্বার সাথে কথা বন্ধ ছিল বছর কুড়ি। সে কথা আগেও বহুবার বলেছি। গত এক বছর ধরে কথা কই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমার পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ থাকে। আমার জীবন সম্পর্কে তিনি বিশেষ কিছু জানেন না। অবশ্য গোপন কিছুও নেই তেমন। জীবনের গল্প প্রায় ৮০ বছর বয়স্ক একজন সিনিয়র সিটিজেনের মাথায় দিতে ইচ্ছে করেনা। কিছু জিজ্ঞেস করলেই বলি, আলহামদুলিল্লাহ। আমরা সকলেই ভাল আছি। সকল প্রশ্নের উত্তর এক কথায় শেষ।

৬৪ সালে ইংরেজি সাহিত্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করে আজীবন কলেজে সাহিত্য চর্চা করেছেন। ধর্মকর্ম তেমন করতেন না। এখন তিনি এখন জ্ঞানী ধার্মিক। আজ হল এক মজার কাহিনী। তিনি হঠাৎ করেই আমার ছেলেকে দেখতে চাইলেন। কিভাবে দেখাই। গুগল করে কয়েক বছরের পুরনো একটা ছবি দেখালাম। তিনি কেঁদে ফেললেন। তারপর মুনাজাত করতে শুরু করলেন।

অঝোরে কাদছেন। ‘আমি হজ্বে থাকা অবস্থায় শুধু তাকে এক নজর দেখার জন্য কত ফোন করেছি’ – ফোন কানেক্টেড হয়েছে তোর ছেলেটাকে এক নজর দেখতে পারিনি। বাবার এ কথা শুনে আমি স্তম্ভিত হয়ে তাকিয়ে রইলাম !!!

বাবা মুনাজাত শেষ করে আমার দিকে তাকিয়ে জিগেস করলেন – আমি তার মাথায় এত বেশি বেশি হাত বুলিয়ে দিচ্ছি কেন ? বললাম – যখন ছেলের জন্য দোয়া করি তখন এভাবে আমি তার মাথায় হাত বুলিয়ে দেই। আজ আপনি দোয়াটা করলেন আর আমি আপনাকে সন্তান স্নেহে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম।