`পিশাচের উল্লাস মঞ্চে তোমাদের স্বাগতম’

আপডেট: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩
0

ডা জাকারিয়া চৌধুরী :

যতটুকু ‘নেই’ আমি হয়েছি,
যতটুকু নেই হতে চেয়েছি,
অনেক ভাবনা চিন্তা শেষে,
শ্মশানে শ্মশান পোড়া এ দেশে,
বুঝেছি আমি ঢেড় বেলা শেষে-
আরও বহু বহু গভীরে যেতে হবে আমাকে।
অসভ্যতার আলো চোখে লাগে বড়।
নিয়ত আমি ঝলসে যাই,
ছাই’য়ের স্তুপ হয়ে রই শ্মশানের কোনে।

আমি ভেবেছিলাম-
কারো আর আসবার কথা ছিল না এখানে।
অথচ আমারই মত পোড়া কপালের শব,
সবাই দাহ হতে আসে সেখানে।
কয়লা সমেত ছাইয়ের চাই-
আমার উপরেই ভাসে,
স্তুপ করে রাখা হয় একের উপর অনেক।
এইসব লাশেদের শব
যারা পুড়েও বাতাসে ভাসে,
তাদের কেউ কেউ পরিবর্তনের স্বপ্নে বিভোর ছিলো-
এমন কিছু আমার জানা নাই।
তবু ভাবনা আসে মনে-
কবি ছাড়া আর কারো শব যেন নাই, পোড়া এই বনে,
সকলেই নতুনের স্বপ্নে বিভোর ছিল,
ছিল হয়তো শয়নে স্বপনে।
এতো এতো স্বপ্নের ভার,
আজ নিয়েছে বিশাল এক স্তুপের আকার,
আমি যে শ্মশানের প্রথম বলি,
যে শ্মশানের প্রথম দাহ করা লাশ,
আমার জানা নেই স্বপন কত প্রকার।

জানি শুধু- বইবার সাধ্য আর নাই আমার,
তোমাদের ছাইয়ের ভার,
সভ্যতার সংকট চলছে প্রায় দুই যুগ,
এইভাবে চলে যদি বেশতো চলছে সু-মনের আকাল,
অসভ্যতার আলো এই মনে জ্বালিয়ে দেয় আগুন,
ভোর হতে দিগন্ততক পোড়ায়
পোড়া কয়লাকে পুড়ে দ্বিগুন,
জানেনা রবি-
বেলা আর অবেলা কিবা কবে কার ফাগুন।
আমাকে যেতে হবে আরও গভীরে,
নিশ্চিত নাই হয়ে যেতে হবে,
অঙ্গার হতে হতে তোমাদের কুৎসিত হাসি দেখবার-
কোন দাসখত আমি দিয়ে আসিনি কোথাও।
তবু কেন তোমরা এত অশ্লীল হাসি হাসো ?
তোমাদের সকলের সকল দায়,
আমার একার নয়।
তোমাদের শখের পুতুল আমি নই- বুঝতে হবে।
আমি স্বাধীন একটা প্রানীই তো হতে চেয়েছিলাম !!
বুঝোনি ? বুঝোনি বুঝি ? বুঝলেও চলে যেতাম।
যা চলছে নিয়ত যা তোমরা করছ অবিরত-
যদি তাই হয়, হোক তবে-
একে একে তোমাদেরও সকলের শব আসুক-
আসতে থাকুক। কয়লা, ছাই আর ছাইচাপা আগুনের পাহাড়-
আছে এখানে।
শ্মশানে তোমাদের সম্মান আর সকলের পরিনতি-
লেখা হোক, কেউ একজন লিখতে থাকুক।
রায় দেবো আমি যেখানে-সেখানে,
এই শ্মশানের যে কোনও স্থানে।
এরপরও যদি না বুঝো
তবে তোমাদের স্বাগতম,
পিশাচের উল্লাস মঞ্চে তোমাদের স্বাগতম।
নরকের কড়াইয়ে তোমাদের স্বাগতম।
উত্তাপে ফুটন্ত সুরাপাত্রে তোমাদের স্বাগতম।

কবি: নির্বাহী সম্পাদক দেশ জনতা ডটকম