পুলিশি বাধার মুখে করোনার হেল্প সেল উদ্বোধন : একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে লজ্জাবোধ করছি– নজরুল ইসলাম খান

আপডেট: আগস্ট ৩, ২০২১
0

দফায় দফায় বাধার মুখে শেরপুরে করোনা হেল্প সেল উদ্বোধন করলেন নজরুল ইসলাম খানকরোনার হেল্প সেলে বাধা দেয়া অমানবিক অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

তিনি বলেছেন, ‘করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন শত শত লোক মৃত্যুবরণ করছেন, যেখানে এই মহামারীতে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার কথা সেখানে বিএনপির করোনার হেল্প সেলে বাধা দেয়া অমানবিক অপরাধ। এটা বিষ্ময়কর। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে লজ্জাবোধ করছি।

মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) দুপুরে শেরপুরে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও ড্যাব এর সহযোগিতায় বিএনপির পক্ষ থেকে ভার্চুয়ালী করোনার হেল্প সেল উদ্বাধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। শেরপুর জেলা বিএনপির কার্যালয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদুল হক রুবেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জেলা বিএনপির করোনা হেল্প সেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী, শেরপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট আবদুল মান্নান, জেলা যুবদলের সভাপতি শফিকুল ইসলাম মাসুদ, জেলা বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. আবদুল্লাহ হেল ওয়ালী খান জনি।

অনুষ্ঠান চলাকালে ম্যাজিষ্ট্রেট, পুলিশ ও ডিবি পুলিশ দফায় দফায় বাধা সৃষ্টি এবং অনুষ্ঠান বন্ধ করতে চাপ প্রয়োগ করেন। প্রশাসনের বাধার মুখে অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করতে বাধ্য হয় জেলা বিএনপি। যার কারণে অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল আলম, এড. ওয়ারেস আলী মামুন এবং ড্যাবের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশিদ বক্তব্য দিতে পারেন নাই।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে আফ্রিকার দরিদ্রতম দেশগুলো থেকেও পিছিয়ে বাংলাদেশ। যুদ্ধবিধস্ত ইরাক, আফগানিস্তান থেকেও পিছিয়ে বাংলাদেশ। এই অবস্থায় সরকরের উচিত সবার জন্য টিকার ব্যবস্থা করা। অথচ সরকার তা না করে কোটি কোটি মানুষকে মানুষকে টিকা দেয়ার কথা বলে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে।

গার্মেন্টস খুলে দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের পরামর্শ কমিটি যে পরামর্শ দিচ্ছে সরকার তার উল্টোটা করছে। শ্রম মন্ত্রণালয় বলছে মালিকরা তাদের কথা শুনছে না। জনগণের কল্যাণকর এবং যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত না নিলে কেউ মানবে না এটাই স্বাভাবিক। এই অবস্থায় সরকার আছে বলে মনে হয় না।

এসময় তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থাসহ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বিএনপির করোনা হেল্প সেলে প্রশাসনের বাধার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশ ও জাতির চলমান ভয়াবহ দুঃসময়ে সরকার ও আওয়ামী লীগ জনগণের পাশে নাই। করোনার এই মহাদুর্বিপাকেও তাদের আকন্ঠ এখন লুটপাট ও দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। সরকারের ভ্রান্ত নীতি, সমন্বয়হীনতা এবং পরিকল্পিত ও সময়োচিত সিদ্ধান্তহীনতার কারণে জনগণের জীবন-জীবিকা মারাত্মক হুমকির সম্মুক্ষিণ। মানুষের এই দুঃসময়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছে। অথচ এতে সরকারের গায়ে জ্বালা ধরেছে। নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতেই বিএনপির মানবিক উদ্যোগেও বাধা ও প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করতে উঠেপড়ে লেগেছে।

আর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নিজেদের নিস্ক্রিয়তা ও অপকর্ম ঢাকতে বিএনপিকে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর নসিহত করেন। জনগণের বিপদে আপদে পাশে থাকে বিএনপি-ই। কিন্তু জনগণ বাটি চালান দিয়েও আওয়ামী লীগকে জনদুর্ভোগ লাঘবে খুঁজে পায় না।