পৌর মেয়রদের দাবি পৌর আদালত শক্তিশালী করতে আইন সংস্কার প্রয়োজন

আপডেট: জুন ২২, ২০২১
0

ওয়েবিনারে পৌর মেয়ররা দাবি করেছেন, বিরোধ মীমাংসা (পৌর এলাকা) বোর্ড আইন ২০০৪ সংস্কার জরুরী হয়ে পেড়েছে। তারা বলেন, যেখানে গ্রাম আদালতে বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষতিপূরন ৭২ হাজার টাকা ধরা আছে, সেখানে পৌরসভা আইনে ক্ষতিপূরন সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা। যা বর্তমান পরিস্থিতিতে গ্রহনযোগ্য আইন হতে পারে না।

মঙ্গলবার চারটি সংগঠনের যৌথ আয়োজনে এ ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে, মাদারীপুর লিগ্যাল এইড এসোসিয়েশন (এমএলএএ), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), নাগরিক উদ্যোগ এবং এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম, বাংলাদেশ।
এ ওয়েবিনারে ‘বিরোধ মীমাংসা সংক্রান্ত (পৌর এলাকা) বোর্ড আইন-২০০৪ সংস্কার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে আলোকপাত করেন বক্তারা।

তারা আরও বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে বিরোধ নিস্পতিতে সালিশ ব্যবস্থার পাশাপাশি ইউনিয়ন পর্যায়ে গ্রাম আদালত এবং পৌরসভা পর্যায়ে বিবোধ মীমাংসা (পৌর এলাকা) বোর্ড আইন ২০০৪ বিদ্যমান। পৌর মেয়র, কাউন্সিলর ও পৌর কর্মকর্তারা নাগরিক সেবার পাশাপাশি অনানুষ্ঠানিকভাবে বিরোধ নিষ্পত্তিতে প্রতিনিয়ত ভূমিকা রাখছে। কিন্তু পৌর বোর্ড এর আর্থিক এখতিয়ার খুবই সীমাবদ্ধ থাকায় পৌরসভাসমূহ আইনের আওতায় বিরোধ নিষ্পত্তিতে জোড়ালো ভূমিকা রাখতে পারছে না। সরকারি ও বেসরকারী নানা উদ্যোগের কারনে গ্রাম আদালত আইনটির একাধিক সংশোধন হলেও পৌর বোর্ড আইনটি মূলত: অকার্যকর অবস্থায় রয়েছ।
সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিউনিসিপাল এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ম্যাব) ও নীলফামারী পৌরসভার মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ বলেন, বিরোধ মিমাংসা পৌর আইনে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরন ২৫ হাজার টাকা। আর গ্রাম আদালত আইনে ক্ষতিপূরন ৭২ হাজার টাকা। যেটা পৌর শহরের মুল্যায়ন হয় না। এই সংস্কার জরুরি। না হয় দরিদ্র জনগোষ্ঠী ন্যায় বিচার হতে বঞ্চিত হবে। তবে তিনি আইন সংস্কারে কয়েকটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
ম্যাবের মহাসচিব ও মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ বলেন, পৌরসভাকে শক্তিশালী করতে হলে পৌর আদালত সংক্রান্ত বিরোধ মিমাংসা আইন সংশোধন করতে হবে। কেননা, বিদ্যমান দূর্বলতা রেখে সামনে এগুনো সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, আইন মোতাবেক পৌরসভায় সিইও (প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) নিয়োগের বিধান রয়েছে। পৌর মেয়রদের অধীনস্ত এসব কর্মকর্তা সার্ভিস বুক কর্তৃত্ব আবার মেয়রদের হাত থাকছে না। এটা হলেতো পৌর সংস্থাগুলো শক্তিশালী হবে না।

লাকসাম পৌরসভার মেয়র অধ্যাপক আবুল খায়ের বলেন, গ্রাম আদালত আইনের নীতিমালা রয়েছে, কিন্তু পৌর আইন যেটা রয়েছে সেটা দুঃখজনক। অথচ গ্রামের তুলনায় শহরের জনসংখ্যা অনেক বেশি। মানুষের আয়ও বেশি। তাহলে কেন গ্রাম আদালতের চেয়ে বিরোধ মীমাংসা পৌর আইনের ক্ষতিপূরন কম।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে হলে পৌর আদালতকে কাঠামোর দূর্বলতাগুলোও দূর করতে হবে। এ আইনটিকে কার্যকরভাবে ব্যবহারের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

ওয়েবিনারের আলোচনায় অংশ নেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আইনুন নাহার সিদ্দিকী ও নরসিংদী পৌরসভার প্যানের মেয়র ইয়াছমিন সুলতানা প্রমুখ। এ ওয়েবিনার পরিচালনা করেন নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী জাকির হোসেন, পৌর এলাকার বিরোধ মীমাংসা (পৌর এলাকা) বোর্ড আইন, ২০০৪ এর সীমাবদ্ধতা ও সুপারিশ নিয়ে তথ্যচিত্র উপস্থাপনা করেন মাদারীপুর লিগ্যাল এইড এসোসিয়েশনের (এমএলএএ) প্রধান সমন্বয়ক মো. শহিদ।