প্রতারক রোজিনা অবশেষে শ্রীঘরে : প্রেমিক বাকের ফেরারি

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২
0

মু,হেলাল আহম্মেদ(রিপন)
পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ

পটুয়াখালী সদর উপজেলার মাদার বুনিয়া ইউনিয়নের উত্তর বিরাজলা গ্রামের জাকির সরদারের মেয়ে রোজিনা আক্তার (২৫) সাবেক স্বামীর করা মামলায় হাজির হতে এসে অবশেষে প্রতারক রোজিনা এখন জেল হাজতে।

মামলা সূত্রে জানা যায়,একাধিক বিয়ের পিড়িতে বসে সর্বস্ব কেড়ে নেয়া পটুয়াখালী জেলায় আলোচিত সেই রোজিনা গত ২৮শে মার্চ ২০২১ ইং তারিখ পটুয়াখালী সদর উপজেলার মাদার বুনিয়া ইউনিয়নের বোতল বুনিয়া গ্রামের এনায়েত হোসেন গাজীর ছেলে রাসেল গাজীকে বিবাহ করে। বিবাহের পর থেকে রাসেল গাজীর ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান পটুয়াখালী সদর পৌরসভার হেতালিয়া বাধঘাটের মনির সিকদার মার্কেটে অবস্থিত ওয়াল্টন শো-রুমটি স্বামী,স্ত্রী দু’জনে দেখবাল করতেন। ঘটনার দিন গত ১২ জুলাই ২০২২ ইং তারিখ ব্যবসার কাজে স্বামী রাসেল গাজী ঢাকায় অবস্থান করছিলেন।

এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে রোজিনা তার পরোকিয়া প্রেমিক বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার ৩ নং ওয়ার্ডের পৌর এলাকার বাসিন্দা বারি হাওলাদারের ছেলে বাকের হাওলাদারে সহায়তায় উল্লেখিত তারিখ রোজ রবিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টার মধ্যে ওয়াল্টন শো-রুম থেকে নগদ ৩ লক্ষ টাকা ও শো+রুমে থাকা ২৪ টি ফ্রিজ যার বাজার মূল্য ৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকা, ৮টি এলইডি টিভি যার মূল্য ২ লক্ষ টাকা এবং শো-রুমে থাকা ওয়াল্টনের মোবাইল, আয়রন, ব্যলেন্ডার মেশিন সহ রাইস কুকারের সেট নিয়ে যায়। যার বাজার মূল্য ৩ লক্ষ টাকা। সব মিলিয়ে মোট ১৫ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ভাবে মিমাংসার জন্য অপেক্ষা করে স্বামী রাসেল গাজী। কিন্তু প্রতারক রোজিনা আক্তার মিমাংসার কথা বলে গত ১৭ জুলাই ২০২২ ইং তারিখ পরোকিয়া প্রেমিকের উস্কানিতে স্বামী রাসেল গাজীকে তালাক পাঠিয়ে দেয়। অবশেষে প্রতিকার না পেয়ে রাসেল গাজী গত ২২ আগষ্ট ২০২২ ইং তারিখ বিজ্ঞ আদালতের শরণাপন্ন হয়ে রোজিনা ও তার প্রেমিক বাকের’কে আসামি করে একটি সি আর মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ১০৭০/২২ ইং।

বিজ্ঞ আদালত মামলাটি গ্রহন করে গত ২৪ আগষ্ট পটুয়াখালী ডিবি পুলিশের কাছে তদন্তের জন্য পাঠায়। মামলার বিষয়টি জানতে পেরে রোজিনা ও তার প্রেমিক বাকের স্থানীয় ভাবে মিমাংসার জন্য ফের দেনদরবার শুরু করে। এদিকে ডিবি পুলিশের তদন্ত অফিসার এসআই সম্বিত ঘটনার সত্যতা উদঘাটন করে গত ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ইং তারিখ তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে প্রেরন করে। বিজ্ঞ আদালত ডিবি পুলিশের তদন্তের প্রতিবেদনের সত্যতা নিশ্চিত হয়ে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করে আদালত।

এরই ধারাবাহিকতায় ফলে গত ১৪ সেপ্টেম্বর ২২ ইং তারিখ আসামি রোজিনা আদালতে হাজির হয়ে আগাম জামিন চাইতে গেলে বিজ্ঞ আদালত রোজিনাকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু একই তারিখ অপর আসামি বাকের আদালতে হাজির না হয়ে গাঁ ঢাকা দেয় তিনি।

এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোজিনা আক্তার একাধিক বার বিয়ের পিড়িতে বসেন এবং একই ভাবে সর্বশান্ত করে লুটে নিয়ে যাওয়ার প্রমান পাওয়া যায়। অনুসন্ধানের ধারাবাহিকতায় পটুয়াখালী মির্জাগঞ্জ উপজেলায় রোজিনার তালাক প্রাপ্ত স্বামী মোঃ শাহীন দৈনিক বাংলাদেশ কন্ঠ ও দৈনিক বরিশাল সমাচারকে বলেন, ঢাকায় একই পোশাক কারখানায় চাকুরীর সুবাদে রোজিনা সাথে পরিচয় এর পর ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ সালে দু’জনে বিয়ে করেন। বৎসর না পেরুতেই শশুরের কথা বলে ১ লক্ষ টাকা ধার নেয়। এর পর রোজিনার বাবা জাকির হোসেন ট্রাক্টর মেশিন ক্রয়ের জন্য ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা ধার নেয়। ধারের টাকা চাইতে গেলে সাংসারিক কোলাহ সৃষ্টি হয়।শেষ পর্যন্ত নারী নির্জাতন মামলা সহ ভূয়া এসিড মামলা দিয়ে আমি ও আমার পরিবারকে পথে বসিয়ে দেয়। এরপর ২০১৪ সালে তার সাথে আমার ডিভোর্স হয়।

এখানেই শেষ নয় আমার সাথে ডিভোর্স হওয়ার পর যানতে পারি আমার আগে ঢাকার একটি ছেলে সাজ্জাদ, এর পর মিজান, ফরিদপুরের মনির, বরগুনা আমতলী উপজেলার বাকের এবং সর্ব শেষ পটুয়াখালী সদর উপজেলার রাসেল গাজী নামে একটি ছেলে। এই ভাবে অসংখ্য প্রমান রয়েছে আমার কাছে।এসময় শাহিন আরো বলেন, রোজিনার বাবা তার মেয়েকে দিয়ে এভাবে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার ব্যবসা পেতে বসেছেন। আমরা এর কঠিন বিচার চাই।

এবিষয়ে রোজিনার বাবা জাকির হোসেনের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব মিথ্যা অভিযোগ, আপনি কোন পত্রিকার সাংবাদিক, আমি সব দেখে নিবো বলে এরিয়ে যায়।

এদিকে রাসেল গাজী বলেন,আমি হুমকির মধ্যে রয়েছি।যে কোন মূহুর্তে আমার বিরুদ্ধে নারী নীর্যাতনের মামলা হতে পারে। তাছাড়া রোজিনা আমার সংসার থেকে চলে যাবার সময় তিন মাসের গর্ববতী ছিলো। এখন আমার আগত সন্তানের কি হবে। আমি বিজ্ঞ আদালতের কাছে বিচার চাই। তাছাড়া আসামি বাকের যে তার পূর্বের তালাক প্রাপ্ত স্বামী আমি তা জানতাম না। আমি বিজ্ঞ আদালতের কাছে সুষ্ঠু বিচারের দাবী জানান তিনি।