প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেকবার অত্যন্ত হতাশা- নিরাশার সঙ্গে- দিয়ে এসেছেন, নিয়ে আসেননি কিছুই–মীর্জা ফখরুল

আপডেট: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২
0

অতীত অভিজ্ঞতা ‘হতাশা’র বলে প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফর নিয়ে ‘এখনই’ কোনো মন্তব্য করতে চান না মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর সম্পর্কে সোমবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা বিএনপি মহাসচিব এরকম মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমাকে সাংবাদিক ভাইয়েরা চিরকুট পাঠিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে কথা বলতে। আমি গতকাল বলেছি, এই বিষয়ে আমি কথা বলতে চাই না। কারণ আমাদের অভিজ্ঞতা খুব তিক্ত অভিজ্ঞতা, ফ্রাস্ট্রেশনের অভিজ্ঞতা, হতাশার অভিজ্ঞতা।”

‘‘ আমরা প্রত্যেকবার আশা করেছি যে, এবার প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য কিছু আসবেন। প্রত্যেকবার দেখেছি অত্যন্ত হতাশার সঙ্গে, নিরাশার সঙ্গে- দিয়ে এসেছেন, নিয়ে আসেননি। সুতরাং ওই একটাই কমেন্ট। আগে আসুক উনি(প্রধানমন্ত্রী) ঘুরে। কি নিয়ে আসছেন আমরা দেখি। তারপরে কমেন্ট করব।”

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সকালে ভারত গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সাবেক অর্থমন্ত্রী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম সাইফুর রহমানের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

২০০৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারের নিজ বাড়ি বাহারমর্দন থেকে ঢাকা আসার পথে ব্রাক্ষনবাড়িয়ার খড়িয়াল নামক স্থানে এক সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যান সাবেক অর্থমন্ত্রী।

সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের বর্ণাঢ্য কর্মজীবন তুলে ধরে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ তার মৃত্যুতে বিএনপি না বাংলাদেশ অত্যন্ত যোগ্য সফল অর্থ মন্ত্রীকে হারিয়েছে। আমাদের খুব কষ্ট হয়, লজ্জ্বা হয় আমরা যখন বর্তমান অর্থমন্ত্রীর(আহম মুস্তফা কামাল) সঙ্গে তার দিকে তাঁকিয়ে দেখি। খুব কষ্ট হয়, লজ্জ্বা হয়।”

‘‘ কারণ আমরা যখন কমপেয়ার করতে যাই, এই কম্পেয়ার করা সম্ভব নয়।”

তিনি বলেন, ‘‘ আজকে আমরা একটা অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছি। এই সময়ে সাইফুর রহমান সাহেব যদি আমাদের সঙ্গে থাকতেন, আমরা নিসন্দেহে একদিকে তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা নিয়ে তিনি আমাদের সঙ্গে থেকে সহযোগিতা করতেন।”

‘‘ অন্যদিকে এই যে ভ্রান্ত উন্নয়ন বিপ্লব সৃষ্টি করেছে এই সরকার। সেটার আসল চেহারা তিনি উতঘাটন করতে সক্ষম হতেন এবং এই সরকারের যে মূল চেহারা সেটাকে উন্মোচন করতেও তিনি সক্ষম হতেন।”

সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘‘ সাইফুর রহমান সাহেব বাংলাদেশের উন্নয়নে, টেকসই উন্নয়নের জন্য যেটা দরকার সেটা করার জন্য কোনো রকমের উনি ভ্রুক্ষেপ করতেন না। অনেকে বলেন যে, অর্থমন্ত্রী হিসেবে উনি একটু কঠিন ছিলেন। কঠিন সেখানেই ছিলেন যেখানে তিনি দেখেছেন এখানে অপব্যয় করবে সেখানে কিন্তু তিনি কোনো রকমের ছাড় দেননি।”

‘‘ যেখানেই দেখেছেন এই কাজটা করলে দেশের জন্য, এদেশের মানুষের্ জন্য এবং এই দেশের অর্থনীতির জন্য প্রয়োজনীয় হবে সেটার জন্য অর্থ খরচ করতে তিনি কখনো পিছপা হয় নাই্। আমরা যখন ২০০১ সালে আবার ক্ষমতায় আসলাম, আমাকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। এখানেও আমার অভিজ্ঞতা তিনি যে, এদেশের শিক্ষা-স্বাস্থ্য এই ব্যাপারে যেখানে যা প্রয়োজন তিনি করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকতেন।”

তিনি বলেন,‘‘ এম সাইফুর রহমান দেশের স্থিতিশীল অর্থনীতি গড়ার জন্য ভ্যাট থেকে শুরু করে যে পদক্ষেপগুলো গ্রহন করেছিলেন আজকে সেগুলোকে ব্যবহার না করে যেভাবে লুটপাট করা হয়েছে তিনি যদি বেঁচে থাকতে এর বিরুদ্ধে মা্ঠে নামতেন।”

‘‘ আমাদের দেশকে জাতিকে রক্ষা করতে হলে এই লুটের সরকার, ভোট ডাকাতির সরকারের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে। সেজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।”

এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদের সদস্য সচিব সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর পরিচালানায় আলোচনা সভায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবেদ রাজা বক্তব্য রাখেন।