প্রবাসী বাংলাদেশিদের হয়রানিমুক্ত এবং দ্রুত সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকদের আরও যত্নশীল হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা প্রশাসক সম্মলনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ডিসিদের অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রায় এক কোটির বেশি প্রবাসী রয়েছে। তাদের বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। প্রবাসীরা সঠিক সময়ে পাসপোর্ট পান না, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স হয় না। দেশে আসলেও অনেক সময় তারা হয়রানির শিকার হন। অনেক সময় তাদের ভূমি বেদখল হয়ে যায়। সময়মতো তারা ম্যারিজ সার্টিফিকেট, বার্থ সাটিফিকেট পান না। বিদেশে মারা গেলে মরদেহ আনতে তথ্য পাওয়া যায় না। এ ধরনের অনেক অভিযোগ রয়েছে।’
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো পাসপোর্ট বা এনআইডি দেয় না। তবে এগুলো সংগ্রহ করে আমরা বিদেশে পাঠিয়ে থাকি। সেগুলো যেতে অনেকক্ষেত্রে বেশ দেরি হয়ে যায়, তাতে প্রবাসীরা অসন্তুষ্ট হন। সেক্ষেত্রে আশা করবো, জেলা প্রশাসকরা আরও যত্নশীল হবেন। যাতে এসব সেবা আরও ত্বরান্বিত করা সম্ভব হয়। প্রবাসীদের হয়রানিমুক্ত সেবা দিতে ডিসিদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে বলেছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নির্বাচিত প্রতিনিধি বা স্থানীয় প্রশাসন কিংবা সরকারি অফিসে গেলে প্রবাসীদের সে ধরনের সম্মান দেওয়া হয় না। যেহেতু তারা নির্বাচিত এবং জনগণের কাছে কমিটমেন্ট করেছেন, তাই সেসব বিষয়ে আরও যত্নশীল হতে হবে। তবে দুঃখজনক যে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ হয় না। সেজন্য আমরা বলেছি এ দেশের বড় সম্পদ হচ্ছে প্রাণী এবং মানুষ। এ মানুষগুলোর কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা উন্নয়নে মনোযোগ দিতে হবে।’
তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসন যেগুলো নিজেরাই করতে পারেন, অনেক সময় সেগুলো তারা ঢাকায় পাঠিয়ে দেন। নিজের দায়িত্বটা এড়িয়ে যান। ফলে সবাই ঢাকাকেন্দ্রিক হচ্ছে। এ বিষয়ে তারা সজাগ হবেন। যেগুলো তাদের করা উচিত, সেগুলো তারা স্থানীয়ভাবে সমাধান করবেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রবাসীরা বিদেশে গিয়ে সলিল সমাধি হয়, শুধুমাত্র অনিয়মিত মাইগ্রেশনের কারণে। এ বিষয়ে সচেতনতামূলক পরিবেশ তৈরির ক্ষেত্রে ডিসিদের কাজ করতে হবে।’
স্থানীয় প্রশাসনের প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, ‘গত বছর করোনায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন, খাবার দিয়েছেন। এজন্য তারা প্রশংসার যোগ্য, দেশবাসী তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। দেশ-বিদেশে তাদের সহযোগিতায় সুন্দরভাবে কাজ করতে পেরেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমরা যেসব প্রতিবেদন তাদের কাছে চাই, সেসব প্রতিবেদন সময়মতো পাই না। ফলে বিদেশে অনেক ক্ষেত্রে দেন-দরবার করতে পারি না।
ফলে আমাদের ওপর চাপ আসে। ডিসিরা যেন দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেন। আমরা কোনো কোনো ব্যক্তি বিশেষের তথ্য তাদের কাছে চাই। এ বিষয়ে তাদেরকে আরও সতর্ক হতে হবে।’