ফিলিস্তিনের শহীদি কাফেলায় যুক্ত হলেন খাদের আদনান; স্ত্রী বললেন- ‘আমি গর্বিত’

আপডেট: মে ৩, ২০২৩
0

ডেস্ক রিপোর্ট:
বন্দীদের ওপর অবিচার ও অনাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ফিলিস্তিনি বন্দী খাদের আদনান শাহাদাত বরণ করেছেন। ক’দিন আগেই চিকিৎসকরা তার মৃত্যুর আশঙ্কা করেছিলেন। এ কারণে নানা মহল থেকে তার মুক্তির দাবি জোরদার হচ্ছিল। কিন্তু কারো কথায় কান দেয়নি দখলদার ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত খাদের আদনানের মৃত্যুর খবর প্রচার করে তারা শান্ত হয়েছে।

খাদের আদনান ফিলিস্তিনের শহীদি কাফেলায় যুক্ত হয়েছেন। নিঃসন্দেহে তার এই আত্মত্যাগ অন্য ফিলিস্তিনিদের জন্যও শক্তি ও সাহস যোগাবে। খাদের আদনানের স্ত্রী বলেছেন, তার স্বামী ন্যায়ের পথে শহীদ হয়েছেন, এ জন্য তিনি গর্বিত। দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্বামীর লাশ ফেরত দিতে দখলদার ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এই সাহসী নারী।

এপ্রিল মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দখলদার ইসরাইলের কারাগারে চার হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি আটক রয়েছেন। এর মধ্যে এক হাজার ফিলিস্তিনি বন্দী রয়েছেন যাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। বিনা অভিযোগে ধরে এনে তাদের আটকে রাখা হয়েছে। এমন বন্দীদের তালিকায় নারী এবং শিশুও রয়েছে।

নানা উপায়ে হত্যা-নির্যাতনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ভয়-ভীতি ছড়ানোর ইসরাইলি কৌশল পুরনো। কিন্তু তাদের এই কৌশল কাজে আসেনি। সব নির্মমতা ভেদ করে ন্যায় ও মুক্তির পথে ফিলিস্তিনিদের সংগ্রাম ক্রমেই আরও জোরদার হচ্ছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর ভাষায়, এসবের অপকর্মের মাধ্যমে দখলদার ইসরাইল নিজের ধ্বংস তরান্বিত করছে।

মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান ও প্রথম কিবলা মসজিদুল আকসা দখল করে রেখেছে ইসরাইল। মসজিদুল আকসা হয়েই মেরাজে গিয়েছিলেন মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (স.)। এই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মানবতার ওপর যে জুলুম চালানো হচ্ছে তা ইতিহাসে বিরল। এই অন্যায় ও জুলুম মেনে নেওয়া মানে গোটা মানব জাতির অপমান ও অবমাননাকে সহ্য করা। এরপরও ফিলিস্তিনিদের একটা অংশ ইউরোপ,আমেরিকা ও দখলদারদের নানা প্রতিশ্রুতি বিশ্বাস করে চুক্তির মাধ্যমে তাদের সঙ্গে সহাবস্থানের চেষ্টা করেছে কিন্তু কোনো প্রতিশ্রুতিই রক্ষা করা হয় নি। এখনও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে দেওয়া হয়নি। শরণার্থীদের স্বদেশে ফেরার অধিকার মেনে নেওয়া হয়নি। গত ৭৫ বছরে ফিলিস্তিনিরা জবরদখল, হত্যা-নির্যাতন ও নিপীড়ন ছাড়া আর কিছুই পায় নি।

জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা প্রত্যেক মানুষের ধর্মীয় ও নৈতিক দায়িত্ব। পবিত্র ইসলাম ধর্মও মানুষকে জুলুম ও অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করার শিক্ষা দিয়েছে। আর এই শিক্ষাকে হৃদয়ে ধারণ করেই নানা উপায়ে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে নির্যাতিত ফিলিস্তিনিরা। খাদের আদনানের মতো শহীদেরা আজ গোটা বিশ্বের ন্যায়কামী মানুষের প্রতিরোধের এক উজ্জ্বল উপমা।