বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুর ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে ভাণ্ডারিয়াবাসীর ১০ কি:মি: মানবন্ধন

আপডেট: মে ১, ২০২৩
0


বিপ্লব বিশ্বাস

বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী ছবি ভাংচুর এবং জেপি মঞ্জু কর্তৃক মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে, ১০ কি:মি রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ভাণ্ডারিয়া বাসী। গত শনিবার বিকালে উপজেলার চরখালী থেকে ভাণ্ডারিয়া পযর্ন্ত এ মানবন্ধন করেন স্থানীয় বিভিন্ন পেশার লোকজন।
এর আগে গত ১৬ এপ্রিল মারামারি অগ্নিসংযোগের অভিযোগ এনে ভাণ্ডারিয়ার জেপি (মঞ্জু) এর এক কর্মী এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় আওয়ামীলীগ ও তার অংগ সংগঠনের ৩৫ নেতা-কর্মীদের আসামী করা হয়।
এদিকে, জেপির সমর্থকদের কতৃর্ক আওয়ামীলীগ অফিসসহ, বঙ্গবন্ধুর ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুর এবং ভাণ্ডারিয়ার উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মিরাজুল ইসলামের বাড়িতে হামলার ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে ভাণ্ডারিয়াবাসী।
এছাড়াও মিথ্যা অভিযোগ এনে আওয়ামীলীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের ৩৫ নেতা-কর্মীর মামলা দ্রুত প্রত্যাহারের জন্য একের পর এক মানবন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করছে বিভিন্ন সংগঠন। এমতো অবস্থায় আবারো সংঘর্ষ ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, যুদ্ধাপরাধী পুত্র আতিকুল ইসলাম উজ্জল পৃর্ব পরিকলপিত ভাবে নেতৃত্বে এ হামলা,ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ১০/১৫ জন জামায়াত কর্মী। আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মিরাজুল ইসলামকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এই হামলা। তাছাড়া যুব সংহতির করা মামলাটি উদ্দেশ্য প্রনোদিত এবং হিংসাত্মক কার্যক্রমের একটা অংশ। মামলায় যাদের আসামী করা হয়েছে এবং যেঘটনার কথা উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। তার শক্ত কোন প্রমান মিলেনি পাশপাশি আসামীরা কেউ উপস্থিত ছিলেন না বলে জানা গেছে।
জানা যায়, গত ১৬ এপ্রিল
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালায় জাতীয় পার্টি (জেপি)র নেতাকর্মীরা। এ সময় অফিসে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় অন্তত ১৩ জন আহত হন। গত সোমবার রাতে
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ করেই রাত ৮টার দিকে জাতীয় পার্টির (জেপি) উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম উজ্জল, যুব সংহতি (জেপি) সভাপতি রিজভি জমাদ্দার ও সাধারণ সম্পাদক মামুন সরদারসহ ৫০/৬০ জন অজ্ঞাত যুবক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগের অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। অফিসের ভেতরে থাকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করে নিচে ফেলে দেয়। এ সময় স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হামলাকারীদের নিবৃত্ত করতে গেলে তাদের ওপরও হামলা করা হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় বাইরে থাকা ছাত্রলীগের তিনটি মোটরসাইকেল। এতে ১৩ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী আহত হয়ে ভান্ডারিয়া ও আশপাশের উপজেলা স্বাস্থ্য হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, এরপর হামলাকারীরা রাত পৌনে ৯টার দিকে কলেজ রোডে ভান্ডারিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নিজ বাসভবনের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর করে চলে যায়।
এরপরই ক্ষোভে ফেটে পরে স্থানীয়রা। একের পর এক মিছিল মিটিং চলতেই থাকে। মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত র‍্যাব ও পুলিশ। এ ঘটায় ভাণ্ডারিয়া থানায় দুইটি মামলাও হয়।

ঠিক একই সময় ভাণ্ডারিয়া তেলিখালি জুনিয়া সাকিনাস্থ মির্জা বাড়ির মসজিদের সামনে ঘটনাস্থল উল্লেখ করে একটি হামলা ভাংচুরের মামলার বাদী হয়ে উপজেলা যুব সংহতির সদসস্য জয়নাল আবেদীনের ছেলে মামুনুর রশীদ একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলায় যাদের কথা উল্লেখ করেছেন,এর অধিকাংশই ঘটনাস্থলে ছিলেন না। স্থানীয়দের দাবি, মামলায় ১ নম্বর আসামী করা হলেও
৩নং তেলিখালী ইউনিয়ন পরিষদের সনামধন্য সফল চেয়ারম্যান, তেলিখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ভান্ডারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জননেতা জনাব মোঃ শামসু উদ্দীন হাওলাদার তখন খুলনায় ব্যবসায়ী কাজে অবস্থান করছিলেন।
যুবলীগ সভাপতি এনামুল কবির টিপু তালুকদার ,ভান্ডারিয়া উপজেলা যুবলীগ সিনিয়র সহ সভাপতি লিটন প্যাশকার উপজেলা যুবলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক চপল হাওলাদার, উপজেল যুবলীগ দপ্তর সম্পাদক এইচ এম মিরাজসহ বাকী অধিকাংশ নেতাই ঘটনাস্থলে ছিলেন না।
সূত্র জানায়, তেলিখালীতে একটি ইফতার অনুষ্ঠান শেষে জাতীয় পার্টি (জেপি) দলীয় নেতাকর্মীরা ভান্ডারিয়ায় ফেরার পথে স্থানীয় ছাত্রলীগের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। মূলত জেপি নেতারা বিএনপি নেতার বাড়িতে বসে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্যে করে আজেবাজে মন্তব্য ও কটূক্তি করায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এর প্রতিবাদ জানিয়েছিল। আর তাতেই জেপি নেতাকর্মীরা প্রথম দফায় তেলিখালি বসে ছাত্রলীগের ওপর হামলা করে। পরেই আবার ভাণ্ডারিয়া আওয়ামী লীগ অফিস এবং আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদকের বাসভবনে হামলা চালায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম বলেন, গত ৮ দিন আগে জেপির ইফতার কে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটুক্তি করে জেপির কর্মীরা। এতে স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ এর প্রতিবাদ করে। এর কিছু সময় পরে ভান্ডারিয়া জেপি (মঞ্জু) এর দলীয় নেতাকর্মীরা দফায় দফায় দেশীয় নানা ধারালো অস্ত্র নিয়ে আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং লুটপাট করে। এ সময় বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুর চালিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। পরে একই সন্ত্রাসীরা আমার বহুতল ভবনে হামলা চালায়। এ সময় স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করতে চাইলে সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা চালায় এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ৩টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ভান্ডারিয়া থানার ওসি মো. আসিকুজ্জামান জানান, এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ ও র‍্যাব মোতায়েন আছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( মঠবাড়িয়া সার্কেল) মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, অপ্রিতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে।