বাংলাদেশে অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি জাতিসঙ্ঘের আহ্বান

আপডেট: আগস্ট ৪, ২০২৩
0

বাংলাদেশে অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের স্বার্থে শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে সব রাজনৈতিক দল, তাদের সমর্থক ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন।

একইসাথে বলা হয়, পুলিশের অতিরিক্ত বল প্রয়োগের বিষয়টির অবশ্যই দ্রুত তদন্ত করতে হবে এবং দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার দফতরের (ওএইচসিএইচআর) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই আহ্বান জানানো হয়। শুক্রবার (৪ আগস্ট) কমিশন তাদের ওয়েবসাইটে এসংক্রান্ত প্রেস নোট প্রকাশ করেছে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিরোধীদলগুলোর বেশ কয়েকটি সমাবেশে সহিংস হামলা দেখা গেছে। সমাবেশগুলোতে পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস এবং জলকামান ব্যবহার করেছে। পুলিশের পাশাপাশি কিছু সাধারণ পোশাকধারীদেরও বিক্ষোভকারীদের মারতে হাতুড়ি, লাঠি, ব্যাট এবং লোহার রড ব্যবহার করতে দেখা গেছে। এসব সংঘর্ষে অনেক বিরোধীদলীয় সমর্থক ও কিছু পুলিশ আহত হয়েছেন। বিরোধীদলের সিনিয়র নেতাদের প্রকাশ্য দিবালোকে মারধর করা হয়েছে। আবার আইন-প্রয়োগকারী সংগঠনের সদস্য পরিচয়ে তাদের বাড়িতে অভিযানও চালানো হয়েছে। এসব সমাবেশের আগে ও সমাবেশের সময় বিরোধীদলের শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।

জাতিসঙ্ঘ বলেছে, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই মানবাধিকারের প্রতি তাদের বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হবে এবং জনগণের শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। তৃতীয় কোনো পক্ষ যাতে এসব অধিকার চর্চার প্রচেষ্টাকে দমিয়ে দিতে না পারে, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। আমরা পুলিশের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন শুধু যেখানে অত্যন্ত প্রয়োজন সেখানেই বল প্রয়োগ করেন। আর সেক্ষেত্রেও এই বল প্রয়োগ হতে হবে বৈধ, সংযমের সাথে এবং সংশ্লিষ্ট নীতি অনুসারে। অতিরিক্ত বল প্রয়োগের বিষয়টি অবশ্যই দ্রুত তদন্ত করতে হবে এবং দায়ী ব্যক্তিদের অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

মানবাধিকার কমিশনের মুখপাত্র বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের প্রচারের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের জন্য নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমরা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। যা রাজনৈতিক বহুত্ববাদ এবং ভিন্নমত প্রকাশের প্রতি শ্রদ্ধা তৈরি করে এবং সেটিকে উৎসাহিত করে।

এর আগে সোমবার (৩১ জুলাই) বাংলাদেশের আন্দোলন-গ্রেফতার নিয়ে কথা বলেন সভা-সমাবেশের অধিকারবিষয়ক জাতিসঙ্ঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার ক্লেমো ভউল।

এক টুইটার (এক্স) পোস্টে তিনি বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য বিরোধী মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া জরুরি।’

টুইটে হ্যাশট্যাগ বাংলাদেশ লিখে ক্লেমো ভউল লেখেন, ‘চলমান বিক্ষোভ সমাবেশে সংঘাত ও গ্রেফতারের মাত্রা বাড়ছে। এ অবস্থায় সব পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

জাতিসঙ্ঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার টুইটে আরো বলেন, ‘দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোকে বলব, তারা যেন সভা-সমাবেশের অধিকার নিশ্চিতে কাজ করে এবং বাড়তি বাহিনী মোতায়েন না করে। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য বিরোধীমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া জরুরি।’