বাংলাদেশ পোস্ট পত্রিকা বন্ধের পরিকল্পনা

আপডেট: অক্টোবর ৩, ২০২৩
0


নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশ পোস্ট পত্রিকা আকস্মিকভাবে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত মৌখিকভাবে জানিয়ে দেওয়ার প্রেক্ষিতে অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে পত্রিকাটিতে কর্মরত সাংবাদিক কর্মচারীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ‘বাংলাদেশ পোস্ট সাংবাদিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ’ গঠন করে।

ইংরেজি এই জাতীয় দৈনিকে বর্তমানে কর্মরত এবং আগে কাজ করেছেন এমন সকল সাংবাদিক ও কর্মচারীর ন্যায্য পাওনা আদায়ের লক্ষে এই ঐক্য পরিষদ গঠন করা হয় বলে পত্রিকায় কর্মরত একাধিক সাংবাদিক ও কর্মচারী নিশ্চিত করেছেন।

রবিবার (১ অক্টোবর ২০২৩) রাজধানীর তেজগাঁও লিংক রোডে অবস্থিত বাংলাদেশ পোস্ট পত্রিকার নিউজরুমে অনুষ্ঠিত এক জরুরী সভায় ‘বাংলাদেশ পোস্ট সাংবাদিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ’ এর পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। পত্রিকাটির ভারপ্রাপ্ত বার্তা সম্পাদক দুর্জয় রায়কে আহবায়ক ও নিজস্ব প্রতিবেদক এহসানুল হক জসীমকে সদস্য সচিব করা হয়। আহবায়ক কমিটির বাকি তিন সদস্য হচ্ছেন নাজমুল হাসান, বেলাল উদ্দিন আহমদ ও গিয়াস উদ্দিন। বাংলাদেশ পোস্টের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সিনিয়র সাংবাদিক এএসএম এ খালেককে প্রধান উপদেষ্টা এবং হাবিবুল্লাহ মিজান, কৈলাশ সরকার ও আহমেদ পারভেজ খানকে উপদেষ্টা করা হয়।

দেশের অন্যতম শীর্ষ শিল্প গ্রুপ সিকদার গ্রুপের মালিকানাধিন পত্রিকাটি যে কোন সময় বন্ধ হতে পারে- এমন মৌখিক ঘোষণা আসার পর পত্রিকাটিতে কর্মরত সাংবাদিক ও কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

উল্লেখ্য, গত ৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার সিকদার গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ কামরুল ইসলাম মোহন, পরিচালক (প্রশাসন এবং গোয়েন্দা) কর্নেল (অবঃ) শাম্মী ফিরোজ, পরিচালক নাইমুজ্জামান মুক্তা বাংলাদেশ পোস্ট পত্রিকার নিউজ রুমে এসে আকস্মিকভাবে পত্রিকাটি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত মৌখিকভাবে জানান।

এই ঘোষণার পর রবিবার বাংলাদেশ পোস্ট পত্রিকার বিশেষ প্রতিবেদক ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)-এর বাংলাদেশ পোস্ট ইউনিটের ইউনিট চীফ হাবিবুল্লাহ মিজানের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ পোস্টে কর্মরত বর্তমান এবং আগের সকল সাংবাদিক ও কর্মচারীর সকল ন্যায্য পাওনা ও অধিকার আদায়ের লক্ষে জরুরী সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়- (১) বাংলাদেশ পোস্টে কর্মরত সকল সাংবাদিক ও কর্মচারীর সব বকেয়া বেতন-ভাতা অনতিবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে; (২) যদি পত্রিকা বন্ধ ঘোষণা করা হয়, তাহলে বন্ধ করার আগেই দেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী সমস্ত বকেয়া, পাওনাদি, সুযোগ-সুবিধা দ্রুততার সাথে বুঝিয়ে দিতে হবে; (৩) ইতোপুর্বে বাংলাদেশ পোস্ট পত্রিকা থেকে চাকুরিচ্যুত, বাধ্যতামূলক এবং স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা সকল সাংবাদিক ও কর্মচারীর আইন অনুযায়ী প্রাপ্য ও যাবতীয় পাওনাদি অনতিবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে; এবং (৪) নিয়োগপত্র ছাড়া কর্মরত সকল সাংবাদিক ও কর্মচারীকে জরুরী ভিত্তিতে নিয়োগপত্র দিতে হবে।

যে কোন পরিস্থিতিতে ‘বাংলাদেশ পোস্ট সাংবাদিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ’ এর ব্যানারে পত্রিকাটিতে কর্মরত সাংবাদিক ও কর্মচারীরা যাতে ঐক্যবদ্ধ থাকেন রবিবারের সভায় সে আহ্বান জানান ইউনিট চীফ হাবিবুল্লাহ মিজান।

পত্রিকায় কর্মরত কয়েকজন জানিয়েছেন, সিকদার গ্রুপ যদি বেআইনিভাবে পত্রিকাটি বন্ধ করে তথা আইন অনুযায়ী সকল সুযোগ-সুবিধা ও বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করে পত্রিকা বন্ধের ঘোষণা দেয়, তাহলে ‘বাংলাদেশ পোস্ট সাংবাদিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ’ এর ব্যানারে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সিকদার গ্রুপের প্রধান অফিস ঘেরাও, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচী-সহ বিভিন্ন ধরণের কর্মসূচী পালন করা হবে। প্রয়োজনে দেশের সকল সাংবাদিক সংগঠনকে সাথে নিয়ে কঠিন আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।