বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা ও মহানগরী সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সম্মেলন-২০২২ অনুষ্ঠিত

আপডেট: আগস্ট ১৭, ২০২২
0

শ্রম আন্দোলনকে ট্রেড ভিত্তিক আন্দোলনে পরিণত করতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শ্রমিক সমস্যা সমাধানের জন্য ট্রেড ভিত্তিক আন্দোলনকে গুরুত্ব দিতে হবে। শ্রম আন্দোলনকে ট্রেড ভিত্তিক আন্দোলনে পরিণত করা গেলে শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখা যাবে। তাই ইসলামী শ্রমনীতির আন্দোলনকে অবশ্যই ট্রেড ভিত্তিক আন্দোলনে পরিণত করতে হবে।

তিনি আজ বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে ভার্চুয়ালি আয়োজিত জেলা ও মহানগরী সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সম্মেলন-২০২২ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান-এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান-এর সঞ্চালনায় এই সময় মূলমঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী, লস্কর মুহাম্মদ তসলিম, সহ-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আলমগীর হোসাইন, কোষাধ্যক্ষ আজহারুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক নুরুল আমিন প্রমুখ।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, শ্রমিক আন্দোলনে ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ামক শক্তি। শ্রম আইনের আলোকে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করতে হবে। মজবুত ট্রেড ইউনিয়নের জন্য সাধারণ শ্রমিকদের সম্পৃক্ত করতে হবে। কিছু কিছু ট্রেড আছে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই সকল ট্রেডে সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃত্বকে অবশ্যই মানসম্পন্ন হতে হবে। যাদের কাক্সিক্ষত মান নেই সে সকল ভাইদের কাক্সিক্ষত মানে নিয়ে আসার জন্য নিবিড় প্রচেষ্টা চালাতে হবে। মানসম্পন্ন লোক ছাড়া ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার আদর্শিক লক্ষ্য পূরণ হবে না।

তিনি আরও বলেন, শ্রমজীবী মানুষ সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও তাদের সাথে মানুষ ভালোভাবে মিশে না। শ্রমজীবী মানুষের সাথে প্রাণখুলে মিশতে হবে। শ্রমজীবী মানুষের প্রত্যাশা খুব সীমিত। তাদের প্রত্যাশা আকাশ ছোঁয়া না। এই সকল মানুষ চায় সমাজের অন্য মানুষরা তাদের ভালোবাসুক ও সম্মান-শ্রদ্ধা করুক। শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে অবশ্যই এটি নিশ্চিত করতে হবে। এই জন্য সকল ধরনের জড়তা দূরে ঠেলে শ্রমজীবী মানুষের সাথে মিশতে হবে। মনে রাখতে হবে আল্লাহর রসুল (সা.) খাব্বাব, খোবাইয়েব ও বেলাল (রা.) দের নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন।

ডা. শফিক বলেন, শ্রমিক কল্যাণ শুধুমাত্র শ্রমিকদের স্বার্থে কাজ করে না। বরং এই সংগঠন মালিক-শ্রমিক উভয়ের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে এই সংগঠন দেশের ইতিবাচক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। বাংলাদেশে শ্রমিক সংকটের পেছনে রয়েছে এক শ্রেণির মালিকদের শ্রমিকের ওপর জুলুম-নির্যাতন করার মানসিকতা। রাষ্ট্র শক্তি মাঝে মাঝে এসব মালিকদের সহায়তা করে সংকট আরও গভীর করে তুলে। এই সমস্যার সমাধান করতে হলে ইসলামী শ্রমনীতিতে ফিরে যেতে হবে। ইসলামী শ্রমনীতি মালিক ও শ্রমিকদের ওপর দুটি প্রধান দায়িত্ব নাস্ত করেছে। প্রথমটি হলো একে অপরের ওপর কর্তব্য। দ্বিতীয়টি হলো অধিকার। কর্তব্য ঠিকমতো আদায় হলে অধিকার নিয়ে কথা বলা যায়। মালিক-শ্রমিক যদি এই দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হয় তাহলে শ্রমিক সংকট আর থাকবে না।