বিএনপির কর্মসূচিতে আ’লীগের হামলা : নাটোরে ফয়সাল আলম গুরতর আহত , ডাসারে ১৫

আপডেট: এপ্রিল ৮, ২০২৩
0

ঢাকা ডেস্ক:
নাটোরে পুলিশের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় বিএনপির পূর্বঘোষিত অবস্থান কর্মসূচি পণ্ড হয়ে গেছে। শনিবার দুপুর ২টায় শহরের আলাইপুরে জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে এ হামলা হয়।

হামলায় সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফয়সাল আলম আবুল গুরুতর আহত হন। রক্তাক্ত জখম অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুর ২টায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহরের আলাইপুরে জেলা কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি নেয় বিএনপি। একই সময় শহরের মুসলিম ইন্সিটিটিউট চত্বর থেকে আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতাকর্মী মোটরসাইকেল বহরসহ লাঠিসোটা নিয়ে প্রথমে জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অনুসারী ও পরে সাবেক সাধারণ সম্পাদক অনুসারীরা বিএনপি অফিসের সামনে শোডাউন দিতে থাকে। এ সময় বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে আসা সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফয়সাল আলম আবুলের ওপরে হামলা করা হয়। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের উভয় পক্ষকে পুলিশ ওই এলাকা থেকে চলে যেতে বললে তার সাথে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। একই স্থানে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের প্রতিরোধের মুখে বিএনপির কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়। পরে উভয় পক্ষ সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ফটকের সামনে শান্তি সমাবেশ করে।

জেলা আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম মালেক শেখ, সৈয়দ মোর্ত্তজা আলী বাবলু প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, নাটোরে বিএনপিকে এক ইঞ্চি মাটিও ছাড় দেয়া হবে না। তারা নৈরাজ্য সৃষ্টির পায়তারা করছে। তাদেরকে ঘর থেকে বের হতে দেয়া হবে না। এরই ধারাবাহিকতায় আজো তাদেরকে কর্মসূচি পালন করতে দেয়া হয়নি। বিএনপি পালিয়েছে।

অপরদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মাদারীপুরের ডাসার উপজেলায় সমাবেশ চলাকালীন সময়ে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনসহ ৪ নেতাকে গ্রেফতার করেছে ডাসার থানা পুলিশ।

শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার কাঁঠালতলা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আটকরা হলেন- কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান খোকন তালুকদার (৪৫), ডাসার যুবদল নেতা নুরু তালুকদার (৪৫), ডাসার ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মন্নান সরদার (৫৫) কালকিনি উপজেলা সেচ্ছাবেসক দলের আহ্বায়ক শহিদুল ব্যাপারী (৪০)।

হামলায় আহত বিএনপি ও ছাত্রদলের ১০ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- কালকিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলু ব্যাপারী (৬০), ছাত্রদল নেতা শামীম মোল্লা (৩০), তরিকুল ইসলাম (২৮), রাসেল মাতুব্বর (৩০), রাজ্জাক সরদার (৫৫), নুরে আলম ছান্টু (৪৫) বনি আমিন (২৫), বায়েজিদ সরদার (৩২), সারাফাত ব্যাপারী (২৫), দুলাল বিশ্বাস (৩৫), মামুন শিকদার (৩৭)।

এছাড়াও হামলায় ছাত্রলীগ তিনজন ও সেচ্ছাসেবকলীগের একজন আহত হয়েছেন। তারা হলেন- ডাসার উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফ আশিক (২৫) ও অর্থ সম্পাদক কাজল আহমেদ (২৩), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল কবির (২৬) ও সেচ্ছাসেবক লীগের নেতা মিল্টন ঢালী (৩৫)।
শনিবার সন্ধ্যায় গুরতর অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতা আশিক ও কাজলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ডাসার উপজেলা বিএনপি, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় বিএনপির ১০ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মাদারীপুরের পাঁচটি উপজেলায় একযোগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিকেল ৩টায় ডাসার উপজেলায় ডাসার ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলাউদ্দিন তালুকদারের সভাপতিত্বে উপজেলার কাঁঠালতলা বাজার এলাকায় প্যান্ডেল করে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। অনুষ্ঠান চলাকালীন সময় ডাসার বাজার আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির অনুষ্ঠানে এসে অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলেন। এতেই বিএনপির ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সাথে ছাত্রলীগের নেকাকর্মীদের বাকবিতণ্ডা বাধে। এ সময় ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুর হয়। দুপক্ষের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ডাসার থানা পুলিশ ৩-৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ঘটনা স্থল থেকে বিএনপির চার নেতাকে আটক করে পুলিশ