বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত

আপডেট: জুলাই ৫, ২০২৩
0
file photo

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-র জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা গত সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সভায় উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

সভায় আলোচ্য বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে বর্ণিত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সভায় বিগত অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ সম্পর্কে মহাসচিব বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে সভাকে অবহিত করেন।

জানা যায়, সভায় ঈদুল আজহা পালনের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে এমন কী ঈদুল আজহার দিনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা ও দলীয় কার্যালয় ভাংচুরের বিষয়ে আলোচনা হয়।

এতে বলা হয়, অত্যন্ত ক্ষোভের সাথে সভায় মনে করা হয়- আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশে বিএনপি ও বিরোধীদলগুলোকে রাজনীতির মাঠ থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য এই হামলাগুলো চালাচ্ছে। স্থায়ী কমিটির সভার গভীর আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় যে- আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি তথা বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মাঠ থেকে সরিয়ে দেয়ার হীন উদ্দেশে এই অবৈধ সরকারের এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার, আহত ও হত্যা করা হচ্ছে।

সভায় গ্রেফতারকৃত সকল নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানানো হয়।

সভায় আওয়ামী সন্ত্রাস, পুলিশের নির্যাতন ও গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানায়। অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের মুক্তি, সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করা হয়।

সভায়, সম্প্রতি জাতিসঙ্ঘে সাধারণ পরিষদে সিরিয়ায় গুম বা নিখোঁজ ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষের চূড়ান্ত পরিণতি কী হয়েছে তা জানতে একটি নিরপেক্ষ মেকানিজম বা বডি গঠন করার প্রস্তাব করা হয়। এ প্রস্তাবে সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশ ভোট দানে বিরত থাকে। প্রস্তাবটি সাধারণ পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের ভোটে পাশ হয়। বাংলাদেশের এই ভোটদানে বিরত থাকা মানবাধিকার নীতির পরিপন্থী। বাংলাদেশ জাতিসঙ্ঘে মানবাধিকার কমিশনের সদস্য নির্বাচিত হলেও এই বিষয়ে ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকা প্রমাণ করে যে বাংলাদেশের বর্তমান অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে গুরুতর অভিযোগ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উঠেছে তা মিথ্যা নয়। সভায় এই অবৈধ সরকারের সকল প্রকার মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণতন্ত্র বিরোধী কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা জানানো হয়।

সভায়, সম্প্রতি জাতীয় সংসদে ব্যাংকের পরিচালকদের মেয়াদ ৯ বছর থেকে বাড়িয়ে ১২ বছর করে ব্যাংক কোম্পানি আইনের যে সংশোধনী আনা হয়েছে তাকে সম্পূর্ণ গণবিরোধী এবং সুশাসন বিরোধী বলে অভিহিত করা হয়।

সভায়, সম্প্রতি সরকারের মদদপুষ্ঠ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের চক্রান্তে কাঁচা মরিচের মূল্য কেজি প্রতি ১ হাজার ১০০ টাকা অন্যদিকে কাঁচা চামড়ার মূল্য নিম্নমুখি হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে অন্যদিকে কাঁচা চামড়ার মূল্য পরিকল্পিতভাবে হ্রাস করায় সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে এতিমখানাগুলো তাদের প্রাপ্য অর্থ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সভায় এ বিষয়ে সরকারের ব্যর্থতার তীব্র সমালোচনা করা হয় এবং অবিলম্বে দ্রব্যমূল্য হ্রাস ও কাঁচা চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

সভায়, কয়েকটি সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা শেষে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভাপতি সভা মুলতবি ঘোষণা করেন।