বিএনপি ১/১১’র সরকারের সাথে আপোষ করলে ২০০৮ সালেই ক্ষমতায় থাকতে পারতো– নজরুল ইসলাম খান

আপডেট: জুন ১, ২০২১
0

বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য- নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছে। একজন সাধারণ নাগরিক কিংবা অন্যান্য রাজনীতিবিদ চিকিৎসার যে সুযোগ পায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী হয়েও সর্বাধিক জনপ্রিয় বেগম খালেদা জিয়াকে সেই সুযোগ দেয়া হচ্ছে না।

তিনি বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে তাঁর মুক্তি ও সকল নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন জানান। তিনি আরো বলেন, আপোষ করে ক্ষমতায় যাওয়ার দল বিএনপি নয়। বিএনপি যদি ১/১১’র সরকারের সাথে আপোষ করতো, তাহলে ২০০৮ সালেই ক্ষমতায় থাকতে পারতো। তারা সর্ব প্রথম বেগম খালেদা জিয়ার কাছেই আপোষের প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু জনগণের স্বার্থ নিয়ে আপোষ করেননি বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপি ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যেতে চায়নি। কিন্তু প্রহসন করে নির্বাচন ব্যর্থ করে দেয়া হয়েছিল।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে ১৫ দিনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলা বিএনপি’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য- নজরুল ইসলাম খান প্রধান অতিথি, বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান- ব্যারিষ্টার শাজাহান ওমর বীর উত্তম প্রধান বক্তা এবং সাংগঠনিক সম্পাদক- সৈয়দ এমরান সাহে প্রিন্স, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুন বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালী উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভায় কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি- শরিফুল আলম এবং নেত্রকোণা জেলা বিএনপি’র আহবায়ক ডা. আনোয়ারুল হক স্ব-স্ব জেলায় আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, শহীদ জিয়া অসাধারণ মানুষ ছিলেন। স্বাধীনতার ঘোষক, দেশের সর্বোত্তম মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদশে সবচেয়ে মর্যাদার আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার ছিলেন। রাষ্ট্র বা সমাজের সকল জায়গায় শহীদ জিয়ার সাফল্যের স্বাক্ষর রয়েছে। যারা শহীদ হন, তাঁদের মৃত্যু নেই। তাঁরা অমর। জিয়াউর রহমান অমর। মানুষের আবেগের বিষয় তাদের আত্ম-পরিচয়। জিয়াউর রহমান দেশের মানুষের আত্ম-পরিচয় দিয়ে গেছেন। পরিচয় দিয়েছেন আমরা বাংলাদেশী। এসব কারণে তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

তিনি গণতন্ত্র, আইনের শাসন, সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছেন। যেটা ছিল যথার্থ গণতন্ত্র। তাঁর আমলে রাষ্ট্রপতি, সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সব রাজনৈতিক দল সেসব নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। শহীদ জিয়ার খেতাব কেড়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র করছে সরকার। যা অত্যন্ত গর্হিত এবং সরকারের ভ্রষ্টাচার নীতির অংশ। এটা করে সরকার সকল মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করছে। জিয়াউর রহমান যদি বীর উত্তম না হন, তাহলে কে বীর উত্তম ? মুক্তিযুদ্ধে তাঁর বীরত্বপূর্ণ অবদান জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।

রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে শহীদ জিয়াকে হেয় প্রতিপন্ন করা সরকারের হীন মানসিকতার পরিচয় বহন করে। তিনি বলেন, শহীদ জিয়া সম্পর্কে নেতাকর্মীদেরকে আরো বেশি করে জানতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বা তাদের মিত্ররা জিয়াউর রহমানকে সমালোচনা করেন। করবেই, কারণ আওয়ামী লীগ যেখানে ব্যর্থ, জিয়াউর রহমান ও বিএনপি সেখানে সফল। আওয়ামী লীগের একদলীয় বাকশালী শাসন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ, দূর্ভিক্ষ, সন্ত্রাসের পরিবর্তে জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিসহ উন্নয়ন-উৎপাদন-সমৃদ্ধি-সুখ-শান্তির পরিবেশ কায়েম করেছিলেন। শহীদ জিয়ার আদর্শকে ধারণ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা তাঁর প্রদর্শিত পথে এগিয়ে যাবো এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো।

বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান বারিষ্টার শাজাহান ওমর বীর উত্তম বলেন, জিয়াউর রহমান একজন ক্ষণজন্মা পুরুষ। অতি স্বল্প সময়ের জীবনে তিনি মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন, দেশকে আগ্রাসী শক্তির কবল থেকে রক্ষা করেছেন, বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, আধুনিক বাংলাদেশের ভিত্তি রচনা করেছেন। তিনি একজন শ্রেষ্ঠ জাতীয়তাবাদী। জাতীয়তাবাদের মৃত্যু হয় করুণ। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুতে তাই হয়েছে। কারণ তিনি কারো কাছে মাথা নত করেন নাই। দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রে তাঁকে হত্যা করা হয় কিন্তু তাঁর রাজনীতি ও আদর্শকে হত্যা করা সম্ভব হয়নি।

সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বাংলাদেশে আজকে যা কিছু সুন্দর, শুভ- তার সূচনা হয়েছিল শহীদ জিয়ার হাত ধরে। দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস কিংবা বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে কেও তাঁকে কখনও মুছে ফেলতে পারবেন না।