বিএফইউজে’র শ্রদ্ধা : মওলানা আকরম খাঁর ৫৩তম মৃত্যুবার্ষিকী কাল

আপডেট: আগস্ট ১৭, ২০২১
0

কিংবদন্তী সাংবাদিক, সাহিত্যিক, রাজনীতিক মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ’র ৫৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল ১৮ আগস্ট-২০২১ বুধবার। বঙ্গীয় মুসলিম সাংবাদিকতায় তিনি অবিস্মরণীয় প্রাণপুরুষ। ১৯৬৮ সালের ১৮ আগস্ট তিনি ঢাকার বংশালে ১০১ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। তার জন্ম ১৮৬৮ সালে ৭ জুন পশ্চিম বঙ্গের ২৪ পরগনা জেলার বশিরহাটে। ১৯৪৭ সালের ভারত ভাগের পর তিনি পূর্ব বাংলায় চলে আসেন এবং ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।

এই পথিকৃত সাংবাদিক-সাহিত্যিকের মৃত্যুবার্ষিকীতে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছে। বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ ও মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন মরুহম মওলানা আকরম খাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর রূহের মাগফিরাত কামনা করেছেন।
মওলনা আকরম খাঁ সাড়া জাগানো বাংলা ভাষার সংবাদপত্র দৈনিক আজাদের প্রতিষ্ঠাতা। মুসলিম সমাজকে জাগিয়ে তুলতে ১৯৩৬ সালের অক্টোবরে তিনি এই পত্রিকার প্রকাশ। বাঙালি মুসলমানের ভাষা হিসেবে বাংলার পক্ষে মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁর ভূমিকা তৎকালীন রক্ষণশীল সমাজের প্রেক্ষিতে ছিল ঐতিহাসিক। শুধু বঙ্গীয় মুসলিম রেনেসাঁ নয় বৃহত্তর বাঙালি চেতনা বিকাশেও তার ভূমিকা ছিল অনবদ্য ও গুরুত্বপূর্ণ।
মওলনা আকরম খাঁর সমসাময়িককালে অনেক খ্যাতিমান মুসলিম লেখক-সাংবাদিক মাসিক, ত্রৈমাসিক ও দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ করলেও সেগুলো দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। মওলানা আকরাম খাঁ দৈনিক আজাদ ও মোহাম্মদীর মত পত্রিকা প্রকাশের মাধ্যমে মুসলিম বাংলা সাংবাদিকতায় সুদৃঢ় ও দীর্ঘস্থায়ী ভীত রচনা করেন। আজাদ ও মোহাম্মদী থেকে তৈরী হয় অনেক গুণী সাংবাদিক। তার প্রকাশিত ‘দৈনিক আজাদ’ ও মাসিক ‘মোহাম্মদী’ বৃটিশ আমলে আত্মপ্রকাশ করে সুদীর্ঘকাল টিকে থাকে। পাকিস্তান আমল এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পরও কিছুকাল এই পত্রিকা দু’টি সাংবাদিকতা জগতকে শাসন করে।
মওলানা আকরাম খাঁ একাধারে সাংবাদিকতা ও সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি রাজনীতিবিদ, সমাজ-সংস্কারক, ধর্মশাস্ত্রবিদ ও সুপন্ডিত হিসেবে উপমহাদেশে সুখ্যাত ছিলেন। বৃটিশ বিরোধী স্বাধীনতা-আন্দোলনের অন্যতম নেতা, অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলনের এক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব, কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের নেতা ছিলেন তিনি। সাহিত্যিক হিসেবে তার রচিত মোস্তফা-চরিত যেমন মহানবী (স.)-এর নির্ভরযোগ্য জীবনী, তেমনি তার রচিত মোসলেম বঙ্গের সামাজিক ইতিহাস গ্রন্থটি সামাজিক ইতিহাস প্রণয়নে একটি অন্যতম আকর গ্রন্থ হিসেবে সমাদৃত।
সাহসী সাংবাদিকতার পাশাপাশি রাজনীতিক হিসেবেও তিনি ছিলেন সংগ্রামী ও প্রতিবাদী। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রæয়ারি মাতৃভাষা বাংলার দাবিতে আন্দোলনকালে ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণ এবং কয়েকজনকে হত্যার প্রতিবাদে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যপদ ত্যাগ করে অনন্য নজীর স্থাপন করেন।