বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়নের পৃথক দুটি অভিযানে ৫ জন আসামীসহ তিন কোটি বার লক্ষ টাকার ইয়াবা উদ্ধার

আপডেট: অক্টোবর ৫, ২০২১
0

বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) কর্তৃক পরিচালিত পৃথক দুইটি অভিযানে ০৫ জন আসামীসহ ৩,১২,০০,০০০/- (তিন কোটি বার লক্ষ) টাকা মূল্যমানের ১,০৪,০০০ (এক লক্ষ চার হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে।

বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধীনস্থ দমদমিয়া বিওপি’র আওতাধীন দমদমিয়া চেকপোষ্টে একটি টহলদল নিয়মিত যানবাহন তল্লাশীর কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। টেকনাফ হতে হ্নীলাগামী একটি মোটর সাইকেল (নম্বর বিহীন) চেকপোষ্টের নিকট আসলে তা তল্লাশীর জন্য থামানোর নির্দেশ দিলে উক্ত মোটর সাইকেল চালক মোটর সাইকেলটি থামিয়ে দ্রুত দৌড়ে নিকটস্থ পাহাড়ের জঙ্গলের ভিতরে পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে চেকপোষ্টের কর্তব্যরত টহলদল মোটর সাইকেলটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তল্লাশী করে উক্ত মোটরযানের তেলের ট্যাংকের ভিতরে অভিনব পদ্ধতিতে ফিটিং অবস্থায় ৪২,০০,০০০/- (বিয়াল্লিশ লক্ষ) টাকা মূল্যমানের ১৪,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে ইয়াবা কারবারীকে আটকের নিমিত্তে বর্ণিত পাহাড়ে ও পার্শ্ববর্তী স্থানে তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করা হলেও কোন কারবারীকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে তাকে সনাক্ত করার জন্য অত্র ব্যাটালিয়নের গোয়েন্দা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

অপরদিকে, বিজিবি’র টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, অধীনস্থ শাহপরীরদ্বীপ বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ বিআরএম-০৩ হতে আনুমানিক ১.৫ কিঃ মিঃ দক্ষিণ-পূর্ব দিকে মিস্ত্রিপাড়া ঘাট নামক স্থানে নাফ নদীর মোহনা দিয়ে মিয়ানমার হতে ইয়াবার একটি বড় চালান বাংলাদেশে পাচার হতে পারে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে শাহপরীরদ্বীপ বিওপি’র একটি বিশেষ টহলদল দ্রুত বর্ণিত এলাকায় গমন করতঃ সন্দেহভাজন একটি ইঞ্জিন চালিত মাছ ধরার ট্রলারে তল্লাশী কার্যক্রম শুরু করে।

পরবর্তীতে উক্ত ট্রলারে অবস্থানরত ৫ জন জেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত ট্রলারের তেলের ট্যাংকের ভিতর অভিনব পদ্ধতিতে ফিটিং অবস্থায় ২,৭০,০০,০০০/- (দুই কোটি সত্তর লক্ষ) টাকা মূল্যমানের ৯০,০০০ (নব্বই হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়। অবৈধভাবে মাদক বহনের দায়ে ইঞ্জিন চালিত ট্রলারটিসহ ৫০০ কেজি জাল এবং উক্ত আসামীদের আটক করা হয়।

আটককৃত আসামীরা হলো-(১) মোঃ সামছুল আলম (২৫), পিতা- মৃত শাহ আলম, মাতা-মোছাঃ দিলদার বেগম, গ্রাম-মাঝেরপাড়া, পোষ্ট-শাহপরীরদ্বীপ, থানা- টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার। (২) মোঃ আক্তার হোসেন (৩৫), পিতা-মোঃ হাছন, মাতা- মোছাঃ মাবিয়া খাতুন, গ্রাম- শাহপরীরদ্বীপ (উত্তর পাড়া), পোষ্ট-শাহপরীরদ্বীপ, থানা- টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার।

(৩) মোঃ হোসেন (২৮), পিতা- মোঃ কালা মিয়া, মাতা-মোছাঃ মরিয়ম খাতুন, গ্রাম- হাজীপাড়া, পোষ্ট-শাহপরীরদ্বীপ, থানা- টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার। (৪) মোঃ জমির হোসেন (৫০), পিতা-মৃত আহমদ হোসেন, মাতা- মৃত ছনখাতুন, ২৬ নম্বর মোচনী বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক ক্যাম্প, থানা- টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার।

এবং (৫) মোঃ কেফায়েতুল্লাহ (৩০), পিতা- মৃত বশির আহমেদ, মাতা-মোছা নইওছে, ১৮ নম্বর বালুখালী বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক ক্যাম্প, থানা-উখিয়া, জেলা-কক্সবাজার।

শাহপরীরদ্বীপ বিওপি হতে আটককৃত ৫ জন আসামীকে জব্দকৃত ইয়াবা ট্যাবলেটসহ নিয়মিত মামলার মাধ্যমে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং জব্দকৃত ইঞ্জিন চালিত ট্রলার ও জাল টেকনাফ শুল্ক গুদামে জমা করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। এছাড়াও দমদমিয়া চেকপোষ্ট হতে অবৈধ মাদক বহন এবং পাচারের দায়ে পলাতক দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনী কার্যক্রম গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

উল্লেখ্য, টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) টেকনাফ সীমান্তের দায়িত্বভার গ্রহণের পর হতে মাদকদ্রব্য পাচার প্রতিরোধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ প্রতিহত, মানবপাচারসহ সীমান্তে সংঘটিত সকল প্রকার সীমান্ত অপরাধসমূহ প্রতিরোধকল্পে অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে নিরলসভাবে কাজ করে ধারাবাহিক সাফল্য অর্জন করে যাচ্ছে। টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) মাদকের জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।