আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ইসলামিক স্কলার শায়খ ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন, ‘আমরা সবাই কোনো না কোনোভাবে পাপী। যারা আল্লাহর কাছে তওবা করে দ্বীনের পথে ফিরে আসে, তারাই সর্বোত্তম বান্দা। বিশ্বনবী সা: দিনে ৭০ বার তওবা করতেন। রাসূল সা:-কে ছাড়া মহান রাব্বুল আলামিনকে পাওয়ার কোনো পথ নেই। তাই আমাদের রাসূল সা:-এর বিধান ও তার বানী সঠিকভাবে অনুসরণ করতে হবে।
বুধবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যায় মালয়েশিয়ার সাইবারজায়া ব্রেইনি বাঞ্ছ কমপ্লেক্সের বলরামে বাংলাদেশ মুসলিম কমিউনিটি মালয়েশিয়ার উদ্যোগে আয়োজিত ইসলামিক কনফারেন্সে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, ‘দুনিয়ার মানুষ যাকে বেশি পছন্দ করবে আল্লাহ পাকও তাকে ভালোবাসেন। যারা মানুষের বিপদে সহযোগিতায় হাত বাড়িয়ে দেয় এবং মানুষের কল্যাণে সবকিছু উজার করে দেয় তারাই আল্লহ পাকের প্রিয় বান্দা।’
কনফারেন্সে একই মঞ্চে বয়ান পেশ করেন ইসলামিক গবেষক আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান। তিনি বলেন, ‘’কেয়ামতের আলামতের বিষয়ে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সা:-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘যখন দেখবে দাসীর ঘরে মনিব জম্ম নিচ্ছে এবং সমাজের নিচুস্তরের এক ধরনের মানুষ নগ্ন দেহে, নগ্ন পায়ে হঠাৎ করে ধনী হয়ে যাচ্ছে তখন বুঝবে কেয়ামত খুব সন্নিকটে।’ মনিবের ঘরে দাসী জম্ম নিবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু দাসীর ঘরে মনিব জম্ম নিতে পারে না এটা অস্বাভাবিক। তখন দেখা যাবে সমাজ থেকে ন্যায় বিচার উঠে গেছে এবং সমাজে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে।’
আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান আরো বলেন, ‘তখন শয়তানের কুমন্ত্রণা ও তার প্রভাব বেশি বিস্তার করবে ইনসানের ওপর। আর ইবলিশ তো কখনোই ফেরেশতা ছিল না, সে ছিল জিন জাতির অন্তর্ভুক্ত। আপনি জীবন যত পাপ করেছেন যদি আল্লাহর দরবারে তওবা করেন, তাহলে আল্লাহ পাক তাকে সর্বোত্তম বান্দা হিসেবে কবুল করে নিবেন। ইবলিশ এ কারণেই শয়তানের নেতা, সে তওবা করে আল্লাহ পাকের নির্দেশিত পথে ফিরে আসেনি। আদম আল্লাহর আদেশ মেনে তওবা করে দ্বীনের পথে ফিরে এসেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের বেশিরভাগ মসজিদ কমিটির কিছু লোক ঘুষখোর, সুদখোর ও দুর্নীতিবাজ। আরবিতে মসজিদের আরেক নাম বায়তুল্লাহ। এর অর্থ হচ্ছে আল্লাহর ঘর। আর ওই আল্লাহর ঘর এখন হয়ে যাচ্ছে বায়তুন নাস মানে মানুষের খেয়াল খুশির ঘর। আল্লাহর রাসূল সা:-এর বিধানে মসজিদগুলো পরিচালিত হচ্ছে না। সেখানে মানুষের খেয়াল খুশিমত মসজিদ পরিচালিত হচ্ছে। দুনিয়ার সবচেয়ে বড় চোর হচ্ছে সে, যে নামাজে দাড়িয়ে ফাঁকি দেয়, ঠিকমতো রুকু সিজদা দেয় না। বেশিরভাগ মসজিদে সঠিক ও সহীহ নামাজ নেই। দৌড়ের ওপর মসজিদগুলোতে নামাজ আদায় করা হচ্ছে। আমরা যারা দায়ী আছি, তারা চুপ করে বসে না থেকে সতর্ক করতে হবে। আল্লাহ ও রাসূল সা:-এর বানী প্রচার করতে হবে এবং ইসলামের দাওয়াত দিতে হবে। এটাই ইসলামের শিক্ষা।’
বুধবার বিকেল সাড়ে ৬টা ইসলামিক কনফারেন্সে এ বয়ান শুরু হয়ে চলে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন বাংলাদেশ মুসলিম কমিউনিটির কো-অর্ডিনেটর মো: মুরাদ হোসেন।
আগামী ২৩ জুলাই মালয়েশিয়ার ক্লাং প্রদেশের সেন্ট্রো শপিংমলের বলরুমে বয়ান পেশ করবেন শায়খ ড. মিজানুর রহমান আজহারী এবং আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান। রেজিস্ট্রেশন করে আপনার সিট বুকিং দিতে পারেন। এই দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন সহস্রাধিক মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশীসহ মালয়েশিয়ানরা। বয়ান শেষে মুসলিম জাতির মঙ্গল কামনায় বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান।