ভেজাল লাচ্ছা সেমাই ছড়িয়ে পড়েছে উত্তরবঙ্গের হাট বাজারে

আপডেট: মে ২, ২০২১
0

শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ
আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে নীলফামারীর সৈয়দপুরে লাচ্ছা সেমাই তৈরির ধুম পড়েছে। শহরের পাড়া- মহল্লা ও অলিগলিতে গড়ে উঠেছে প্রায় দু’শতাধিক মৌসুমি লাচ্ছা সেমাই তৈরির কারখানা। আর এ সব কারখানায় নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিম্নমানের সব উপকরণ দিয়ে দেদারছে তৈরি হচ্ছে ভেজাল লাচ্ছা সেমাই।

অথচ এসব দেখার দায়িত্বে নিয়োজিত বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) একেবারে নির্বিকার। তেমনি অবৈধ সুবিধা নিয়ে নিরবতা পালন করছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও পৌরসভার সেনেটারী ইন্সপেক্টর।

দেখা গেছে, অধিকাংশ লাচ্ছা তৈরির কারখানা বিএসটিআই’র অনুমোদন ছাড়া প্রতিষ্ঠিত। এছাড়া যে সকল কারখানা গড়ে উঠেছে সেগুলোতে মানা হচ্ছে না কোন স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশের নিয়মনীতি। নামি-দামি অনেক কোম্পানির লেভেল লাগিয়ে স্থানীয়ভাবে তৈরি এসব লাচ্ছা বাজারজাত করে আসছে মালিকরা।

মানুষের খাওয়ার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এসব লাচ্ছা সেমাই সৈয়দপুর শহরের চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয় হাট-বাজার ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শহরে অবাধে পাঠানো হচ্ছে। হাতেগোনা কয়েকটি লাচ্ছা তৈরির বৈধ কারখানা থাকলেও তারা বিপাকে পড়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দাপটে।

শহরের কাজীহাট, পুরাতন বাবুপাড়া, বাঁশবাড়ি, হাতিখানা, নিয়ামতপুর, মুন্সিপাড়া, গোলাহাট, ধলাগাছ মতির মোড়সহ আনাচে কানাচে মৌসুমি লাচ্ছা সেমাইয়ের কারখানা চালু করা হয়েছে। এসব কারখানা থেকে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন নামে লাচ্ছা বাজারজাত করা হচ্ছে।

অস্থায়ী কারখানায় গড়ে দৈনিক ২৫ থেকে ৮০ খাঁচি (প্রতি খাঁচিতে ১৮ কেজি) লাচ্ছা উৎপাদন হচ্ছে। স্থায়ী কারখানাগুলোতে উৎপাদিত হচ্ছে গড়ে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ খাঁচি। এই লাচ্ছা প্রতিদিন রিক্সা-ভ্যান ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় শহর ও গ্রামের হাট বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে।

সৈয়দপুর উপজেলার স্যানিটারি পরিদর্শক আলতাফ হোসেন বলেন, পঁচা ডিম, এ্যানিমেল ফ্যাট এবং কৃত্রিম ঘি ও সুগন্ধি মিশ্রিত ভেজাল লাচ্ছা সেমাই তৈরি যাতে না হয় সেজন্য কারখানাগুলোতে নজরদারি রাখা হয়েছে। এছাড়া অনুমোদন হীন লাচ্ছা সেমাই কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অথচ প্রায় ২০ দিন যাবত অবৈধ মৌসুমি কারখানায় অবাধে নিম্ন মানের লাচ্ছা সেমাই অনবরত তৈরী হলেও তাদের কোন তৎপরতাই দেখা যায়নি। একারনে এসব অস্বাস্থ্যকর ও জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য পন্য ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র।

শাহজাহান আলী মনন,
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি