মন্ত্রীরা প্রতিদিন প্রতিরাতে বিএনপির ষড়যন্ত্র নিয়ে দু:স্বপ্ন দেখছেন — মীর্জা ফখরুল

আপডেট: মে ২৩, ২০২১
0

মির্জা ফখলরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন , ‘‘ সব সময় উনারা(সরকারের মন্ত্রীরা) দুঃস্বপ্ন দেখে। প্রতিদিন, প্রতিরাতে বিএনপি বিএনপি বিএনপি দেখতেই থাকে ও সব খানে ষড়যন্ত্র দেখতে থাকে। এতো ভয় কেন রে ভাই।”

রোববার সকালে এক সংবাদ সম্মেলন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্র্রশ্ন তুলেন।

বলেন, ‘‘ যেটা আমাদের রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত বলা যেতে পারে যে, কনসেনসাস জনগনের, সব সরকারের যে, ইসরায়েল আমাদের শত্রু, পৃথিবীর শত্রু। কারণ তারা মানবাধিকারকে ধবংস করছে। অনেকে বলেন যে, প্যালেস্টাইন ইসলামী রাষ্ট্র সেই সমর্থনে। নো। আমরা ফিলিস্তিনকে সমর্থন করি, সকলে করে যে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র এবং তার মানুষগুলো মানুষ। বিশেষ করে শিশুরা। প্রায় ১‘শ শিশুকে হত্যা করা হয়েছে গত কয়েকদিনে। আপনাদের মনে আছে কয়েকবছর আগে প্রায় তিন লক্ষ শিশুকে হত্যা করা হয়েছিলো।”

‘‘ ইজরায়েল আসলে মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা পৃথিবীর জন্য এখন একটা হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ সরকার কেনো এই নতুন করে প্রেম করতে যাচ্ছে ইজরায়েলের সঙ্গে?”

এর কারণ হিসেবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ আমি একটা যোগসূত্র দেই আপনাদের(সাংবাদিক)। কয়েকদিন আগে আল-জাজিরাতে একটা রিপোর্ট হয়েছিলো। সেই রিপোর্টে এসেছিলো যে, একটা বিশেষ সার্ভিলেন্সের যে ডিভাইস বা যন্ত্র, এই যন্ত্র অরিজিনালি ইজরায়েল থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সেজন্য এখন জনগনের মাঝে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে তাহলে কি ইজরায়েলের সঙ্গে সরকার আবারো ওই ধরনের কোনো চুক্তি করতে যাচ্ছে বা কিছু করতে যাচ্ছে।”

‘‘ আমরা সবাই জানি যে, ইজরায়েল কিন্তু গোয়েন্দাবৃত্তিতে পৃথিবীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ। ওটা করে কিন্তু সে এখনো মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ হয়ে আছে। সুতরাং এই বিষয়গুলো জনগন অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষন করছে, দেখছে, লক্ষ্য করছে যে, কোন দিকে যাচ্ছি আমরা? অলরেডি তো গেছি। অন্ধকার মধ্যযুগীয় বর্বরতার দিকে যেখানে মানুষের ন্যুনতম অধিকারটুকু থাকবে না।”

ইজরায়েলের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ইজরায়েলে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নাই। ইজরায়েলের বিরোধী অবস্থান আমাদের। আমরা স্ট্রেটকাট বলতে চাই- আমরা বরাবরই ছিলাম, আমরা এ্খনো আছি।”

‘‘ বিএনপি খুব স্পষ্টভাবে বলতে চায়, ইজরায়েলের এই যে মানবতাবিরোধী বর্বরোচিত হামলা, মধ্যপ্রাচ্যে যে অশান্তি সৃষ্টি করা এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে যে একেবারে ধবংস করে ফেলা এর মূলে হচ্ছে ইজরায়েল। আন্তর্জাতিক বিশ্বের উচিত সেই ইজরায়েলকে সম্পূর্ণভাবে বিরত করা এবং ফিলিস্তিনিদের যে স্বাধিকার ও স্বাধীন রাষ্ট্রের যে অধিকার তাকে নিশ্চিত করা।”

শুক্রবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইজরায়েল বাহিনীর হামলার ঘটনার নিন্দা জানানো হয়েছে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

আমলা নির্ভর সরকার’

‘‘ কারণ আপনাদের পায়ের তলায় মাটি নেই, আপনাদের পেছনে মানুষের কোনো শক্তি নেই। আপনারা এখন আমলাতন্ত্র নির্ভর হয়েছেন। আপনারা এখন সামরিক-বেসামরিক আমলা নিয়ে আপনারা দেশ চালাচ্ছেন।”

তিনি বলেন, ‘‘ দেখুন- গোয়েন্দাদের লাগিয়ে দেয়া হয় সাংবাদিকদের পেছনে। তারা আপনাদেরকে ফোন বলে যে, এই সংবাদ দেয়া যাবে, এটা দেয়া যাবে না। বাস্তবতা। আপনারা এটা কেউ স্বীকার করুন বা না করুন। আপনারা দেখুন যে, যারা এই মিডিয়া হাউজের মালিক তাদের অনেকের বাড়ি পর্যন্ত ভেঙে দেয়া হয়েছে বুলডোজার দিয়ে জাস্ট একটু ভিন্ন অবস্থান নেয়ার কারণে। আবার নামকরা পত্রিকার নাম করা এডিটরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দেয়া হয়েছে, সারাদেশে ১‘শ টাকা মামলা দেয়া হয়েছে নামকরা এডিটরদের বিরুদ্ধে।”

‘‘ অপরাধ একটাই কেনো সবাই তাদের তোষামোদী করছে না, কেনো তাদের উচ্ছিষ্টভোগী কয়েকজন আছেন তাদের সুরে একই সঙ্গে কথা বলছে না কেনো। সবাই তো একরকম নন। দেশপ্রেম আছে, ভালোবাসা আছে, নীতিবোধ আছে, তারা তো নিশ্চয় কথা বলবেন। তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করবেন। সেজন্য এই সাংবাদিক ভাইয়েরা-বোনেরা যারা আজকে কথা বলেন তাদের ওপর বিপর্যয়, হুমকি। আমরা পরিস্কার করে বলছি এ্ভাবে কোনদিনই কেউ টিকে থাকতে পারবে না। হ্যাঁ সময় নেবে। অবশ্যই তাদেরকে বিদায় নিতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ, মহানগর মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, কাজী আবুল বাশার, আবদুল আলিম নকি, যুব দলের শফিকুল ইসলাম মিল্টন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।