মহিলা আ’লীগ এবং মহিলা শ্রমিক লীগের নেতাদের সাথে ‘নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন’ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

আপডেট: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩
0

বাংলাদেশ মহিলা আ’লীগ এবং মহিলা শ্রমিক লীগের নেতাদের সাথে ‘নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন’ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২২ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) সকাল ১০:৩০ টায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ এবং মহিলা শ্রমিক লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে ‘নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন’ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় সংগঠনের আনোয়ারা বেগম মুনিরা খান মিলনায়তনে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।

আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন মাননীয় সংসদ সদস্য ও মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শবনম জাহান এমপি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুন্নাহার রত্না, সাংগঠনিক সম্পাদক ঝর্ণা বাড়ৈ, মহিলা আওয়ামী লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট শিল্পী চক্রবর্তী, বাংলাদেশ মহিলা লীগের সহ-সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ রোকেয়া বেগম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. জেবুন্নাহার, সাংগঠনিক সম্পাদক দীপিকা সমাদ্দার ও সাংগঠনিক সম্পাদক লিপি বেগম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। তাছাড়াও সভায় মহিলা শ্রমিক লীগের কর্মীবৃন্দ ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নেতৃবৃন্দ উপ¯িথত ছিলেন।

সংগঠনের পক্ষে সভায় বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু; সহ-সভাপতি রেখা চৌধুরী ও সহ-সভাপতি ডা. মাখদুমা নার্গিস রত্না । তারা নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের উপরে গুরুত্বারোপ করেন। রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ কে স্বাগত জানালেও এখনো রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নারীর অংশীদারিত্ব কে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে না। নেতৃবৃন্দ রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ পদসহ সকল কমিটিতে নারীর অর্ন্তভূক্তি ও তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণের উপর গুরুত্ব দেন। দলীয় রাজনীতির সাথে সাথে নারীর এজেন্ডাকে আরো অর্ন্তভূক্ত করার আহ্বান জানান। তারা নির্বাচনে অধিক সংখ্যক নারীর অংশগ্রহণ ও সংরক্ষিত নারী আসনে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচনের দাবি জানান। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ ও করণীয় বিষয়ে আলোচনার জন্য উপস্থিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে আহ্বান জানান।

উপস্থিত মহিলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং নারী বান্ধব সরকার নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। তারা বলেন, নারীদের নিজেদের এলাকায় কাজের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে জায়গা করে নিতে হবে। রাজনীতিতে অংশগ্রহণকালে একজন নারী বাধার সম্মুখীন হয় প্রথমে পরিবার থেকে তারপর সমাজে, রাজনীতিতে। নেতৃত্বে গ্রহণযোগ্যতা একটি বড় বিষয়। নারীর উন্নয়ন, চিন্তা চেতনার প্রতিফলন বর্তমান সরকারের কর্মকান্ডে অনেকটাই প্রতিফলিত হচ্ছে। নানান কারণে সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়ছে, তার বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তৃণমূল পর্যায়ে নারীর মনোনয়ন দিতে হবে, তাদের সিদ্ধান্তগ্রহণের শক্ত অবস্থান থাকতে হবে; তারা কেন্দ্রের সাথে তৃণমূলের সম্পর্ক আরো জোরদার করতে নির্বাচনে জেলাভিত্তিক মনোনয়ন দেয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন। নারীর মতামত প্রকাশের জন্য সুষ্ঠুভাবে ভোটদানের অধিকার থাকতে হবে; পুরুষতান্ত্রিকতার বেড়াজাল থেকে মুক্ত করে নারীকে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম¦ী হতে হবে, ক্ষমতায়নের জন্য সচেতন হতে হবে ঐক্যবদ্ধবভাবে। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য প্রযুক্তিগত বিষয়ে সচেতন হতে হবে। নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। আইনের অপপ্রয়োগ বন্ধ করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিটি ক্লাসের সাথে কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে বাচ্চাদের মনোকাঠামো পরিপূর্ণরুপে গড়ে তুলতে হবে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নারীদের নিজ অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। সম্পদের সমান অধিকারের জন্য আইন পাশ করতে হবে; রাজনীতির বিভিন্ন পদে নারীর অর্ন্তভূক্তি বৃদ্ধি করতে নারীদের এগিয়ে আসতে হবে। সংরক্ষিত আসনের সরাসরি নির্বাচন হতে হবে। নারী সাংসদের ও পুরুষ সাংসদদের ক্ষমতা একই হতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, বাংলাদেশের নারীর উন্নয়নে নারী আন্দোলন ও রাষ্ট্রের ভূমিকা আছে। আজকের সমাজকে ক্রমাগত নারীবিদ্বেষী করে তুলছে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী, সংসদে সংরক্ষিত আসনে নির্বাচন পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনে জনগণের ভোটে নির্বাচনের দাবি জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, রাজনীতিকে ক্ষমতার রাজনীতির সিন্ডিকেট থেকে মুক্ত করে রাজনীতির কেন্দ্রে মানুষকে ফিরিয়ে আনতে হবে।

সভার অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আন্দোলন সম্পাদক রাবেয়া খাতুন শান্তি।