মায়ের কবরের পাশে সমাহিত হলেন নিউক্লিয়াসের প্রবক্তা সিরাজুল আলম খান

আপডেট: জুন ১১, ২০২৩
0

আজাদ ভুঁইয়া, স্টাফ রিপোর্টার :

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলীপুর গ্রামে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক নিউক্লিয়াসের প্রবক্তা সিরাজুল আলম খান।

শনিবার বিকেলে তৃতীয় জানাজা নামাজ শেষে আলিপুর সাহেব বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যদায় মা সৈয়দা জাকিয়া খাতুনের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। এর আগে, বেগমগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে তার তৃতীয় জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী “মা” এর শাড়িতে মুড়িয়ে মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল আলমের দাফনের আগে বেগমগঞ্জ থানা পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন।

এর আগে শনিবার দুপুরের দিকে পৈতৃক ভিটায় সিরাজুল আলমের লাশ আনা হয়। সেখানে নোয়াখালীর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। জানাজায় হাজারো মানুষ অংশ নেয়। এ সময় প্রিয় নেতার মরদেহ দেখে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এদিকে তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন নোয়াখালী ৩ আসনের সাংসদ মামুনুর রশীদ কিরণ, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্যা ভুলু, ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্জ মোহাম্মদ শাহজাহান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সভাপতি আবদুস সালাম, জেএসডি সভাপতি আ.স.ম আব্দুর রব, ভাইস চেয়ারম্যান তানিয়া রব, বিশিষ্ট লেখক ও কবি ফরহাদ মাজহার, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবদুর রহমান, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম সুমন, নোয়াখালী জেলা জাসদের আহ্বায়ক আমির হোসেন বিএসসি, যুগ্ম-আহ্বায়ক নুর রহমান চেয়ারম্যান, ইকবাল হোসেন, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে নোয়াখালী সি-জোন কমান্ডার মোহাম্মদ উল্যাহ প্রমূখ।

শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে লাইফসাপোর্টে তার মৃত্যু হয় (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যু কালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসে সংক্রমণসহ নানা দীর্ঘ দিন থেকে শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।

দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘দাদাভাই’ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন সিরাজুল আলম খান। ১৯৬১ সালে ছাত্রলীগের সহসাধারণ সম্পাদক হন সিরাজুল আলম খান। ১৯৬৩ সালে তিনি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭২ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠিত হয় তার উদ্যোগে।

প্রসঙ্গত: জাসদ এর একাধিক নেতা বলেন, আমরা যে চেতনা নিয়ে বাংলাদেশ কে স্বাধীন করেছি, স্বাধীনতা পরবর্তী সরকার সেটিকে কলুষিত করে ফেলে। দীর্ঘ ৯ মাস সংগ্রামে অর্জিত আমাদের মহান স্বাধীনতা ও বাংলাদেশকে যখন এক ব্যক্তি, পরিবার ও দলের নিয়ন্ত্রনে নেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়, তখন সিরাজুল আলম খানদের নেতৃত্বে জাসদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। রক্ষীবাহিনী ও এক দলীয় বাকশাল গঠন সহ নানা মতভেদ এর কারনে ১৯৭২ সালের ৩১শে অক্টোবর জাসদ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এতে যুক্ত হয়েছিলেন স্বাধীনতার প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী আ স ম রব, স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক শাহজাহান সিরাজ, মেজর জলিল সহ অনেকে।