যৌতুকের জন্য স্বামীর নির্যাতনে ঘরছাড়া গৃহবধূ

আপডেট: জুন ২৬, ২০২১
0

চরফ্যাশন(ভোলা) প্রতিনিধিঃ

চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষণ থানাধীন এওয়াজপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে যৌতুকের জন্য স্বামীর নির্যাতনে ঘরছাড়া সালমা বেগম নামে এক গৃহবধূ। ১৩ বছেরর কন্যা সন্তান ও ১০ বছের ছেলে সন্তান নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও সংসার টিকাতে পারেননি। অবশেষে সংসার ফিরে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। তিনি চরফ্যাশন উপজেলার চরমাদ্রাজ ইউনিয়নের চরনাজিমুদ্দীন গ্রামের বাসিন্দা ইউনুছ মিয়ার কন্যা।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়,২০০৫ সালে সালমা বেগমের বিয়ে হয় একই উপজেলার শশীভূষন থানাধীন এওয়াজপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুর রব হাওলাদারের ছেলে সেকান্তরের সাথে।বর্তমানে সেকান্তর চরমাদ্রাজ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড চর-নাজিমউদ্দীনের বাসিন্দা।তাদের প্রায় ১৬ বছরের দাম্পত্য জীবনে এক কন্যা সন্তান ও এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। মেয়ে সন্তানের বয়স বর্তমানে ১৩ বছর ও ছেলে সন্তানের বয়স ১০ বছর। দাম্পত্য জীবনের শুরুতে সেকান্তরের সংসারে অভাব অনটন থাকায় সালমা বেগম তার বাবার বাড়ি থেকে প্রায় ৭ লাখ টাকা নিয়ে স্বামীকে বাড়ি ও ঘর নির্মান করে দেয়। গত ৮-১০ বছর দাম্পত্য জীবন ভালো চললেও এই ৫-৬ বছরই যৌতুকের দাবিতে স্বামীর অত্যাচার ও নির্যাতন বেরে যায়।

প্রায় মারধর করতেন স্বামী, ইট দিয়ে অনেকবার আঘাতও করেছেন। কিন্তু সব মুখবুজে সহ্য করেছেন স্ত্রী। সন্তানদের কথা চিন্তা করে অত্যাচারী স্বামীর সঙ্গে ঘর করেছেন বছরের পর বছর। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়েও কমেনি স্বামীর অত্যাচার।দিন যত যেতে থাকে যৌতুকের দাবিতে তার ওপর বাড়তে থাকে অত্যাচারের মাত্রা। এক পর্যায়ে সালমার স্বামী তার বাবার কাছ থেকে আরও তিন লাখ টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এই টাকা দিতে অক্ষমতা প্রকাশ করায় তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন আরও বেড়ে যায়।

সম্প্রতি সে প্রকাশ্যে হুমকি দেয় তিন লাখ টাকা না এনে দিলে সালমাকে আর সংসারে রাখবেনা এবং বেধড়ক মারপিট করতে থাকে। এ ঘটনায় অসহ্য হয়ে অন্যত্র প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নেন সালমা। যৌতুকের দাবিতে স্বামী কর্তৃক অত্যাচার নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে পাড়া প্রতিবেশীর দ্বারস্থ হলে সে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। সামাজিক বিচার সালিশে যৌতুক ছাড়া তাকে আবারও স্বামীর সংসারে নিয়ে যেতে চাপ দেওয়া হলেও স্বামী তার পরিবারের লোকজন সালমাকে সংসারে ফিরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানায়।

এদিকে স্বামীর কথামতো যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় সালমাকে ঘর থেকে বের করে দেয়।বর্তমানে বাবার বাড়িতে কন্যা সন্তান নিয়ে সংসার ছাড়া কেঁদে কেঁদে সালমার দিনরাত কাটছে। জানতে চাইলে সংসার ছাড়া সালমা বলেন, আমার একজন মেয়ে ও একজন ছেলে সন্তান আছে। আমি বিয়ের পর থেকেই স্বামীর সংসার করতে চেয়েছি। কিন্তু যৌতুক লোভী ও মাদকাসক্ত স্বামী ও তার পরিবারের লোকজনের অত্যাচারে সংসার ছেড়ে বাবার বাড়িতে আসতে বাধ্য হয়েছি। আমি স্বামীর সংসারে ফিরতে চাই এবং অত্যাচার নির্যাতন থেকে বাঁচতে চাই।