রনিল বিক্রমাসিংহে হচ্ছেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী!

আপডেট: মে ১২, ২০২২
0

অর্থনৈতিক সঙ্কটকে কেন্দ্র করে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ সংঘাতের মধ্যে মাহিন্দা রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তার পদত্যাগের দুই দিন পার হলো। পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে দেশটির রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে চলছে নানামুখি আলোচনা। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসেও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে যাচ্ছেন। এই যেমন বুধবার সন্ধ্যায় তিনি ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি) নেতা রনিল বিক্রমাসিংহের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকের পর থেকে জল্পনা, প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য পরবর্তী পছন্দ হিসেবে রনিল বিক্রমাসিংহেকে বেছে নেওয়া হতে পারে।

শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি মিরর জানিয়েছে, রনিল বিক্রমাসিংহের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বুধবার সন্ধ্যায় রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। বৈঠকে গোতাবায়া প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য তাকে প্রস্তাব দিয়েছেন।

এদিকে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের সময় রনিল বিক্রমাসিংহে তাকে গলের বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে দিতে বলেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিচ্ছেন কিনা সেই ব্যাপারে বিক্রমাসিংহে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানাননি। যদিও জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতাদের বরাতে ডেইলি মিরর জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রনিল বিক্রমাসিংহে নিয়োগ পেতে পারেন। এরপর আগ্রহী রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে।

এর আগে বিরোধী দল সামাজি জানা বালাবউইগেয়ায়ার (এসজেবি) নেতা সাজিথ প্রেমাদাসাকে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু সাজিথ জানিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ করলেই কেবল তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেবেন।

বুধবার দিনভর দলীয় নেতাদের সঙ্গে এই নিয়ে বৈঠক করেছেন সাজিথ। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ নিয়ে দলে দ্বিধাবিভক্তি দেখা দেয়। কিছু নেতা এই গুরুতর রাজনৈতিক অস্থিতিশীল এবং সহিংস সময়ে কোনা ধরনের শর্ত ছাড়াই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।

হারিন ফার্নান্দো হলেন এসজেবির প্রথম এমপি যিনি দল ত্যাগ করেছেন এবং ঘোষণা দেন তিনি স্বতন্ত্রভাবে বসবেন, কারণ অসময়ে সাজিথ শর্ত দিয়েছেন। যখন এসজেবি শিবির রনিল বিক্রমাসিংহের সঙ্গে গোতাবায়ার বৈঠকের খবর শুনে তখন তারা বলেছে, এসজেবি শিবির চার শর্তে নতুন সরকার গঠন করতে রাজি। প্রথম শর্ত হলো, একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রেসিডেন্টকে পদত্যাগ করতে হবে।

দুই, প্রেসিডেন্ট নতুন সরকারের কোনো কর্মকাণ্ডে নাক গলাতে পারবেন না। তিন, প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতা বিলুপ্ত করতে হবে। চার, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হওয়ার পর সাধারণ নির্বাচন দিতে হবে। যদিও এসজেবির কিছু জ্যেষ্ঠ নেতা এই অস্থির সময়ে এসব শর্ত দেওয়ায় সাজিথের সমালোচনা করেছেন।

এদিকে শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টির (এসএলএফপি) নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ১১টি রাজনৈতিক দল এবং স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা প্রেসিডেন্টকে একটি চিঠি দিয়েছেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রীর পদের জন্য তারা তিনটি নাম প্রস্তাব করেছেন।

ডেইলি মিরর এই তিনটি নাম জানতে পেরেছে। এই তিন জন হলেন-নিমাল সিরিপালা ডি সিলভা, উইজেয়াদাসা রাজাপাকসে এবং দুল্লাস আলাহাপেরুমা।

তবে এই তিন নামের বাইরে গতরাতে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে রনিল বিক্রমাসিংহের বৈঠকে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, রনিল বিক্রমাসিংহেই চলতি সপ্তাতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন।