রাজশাহী কলেজ ছাত্র মিজানুর রহমানকে র‌্যাবের গ্রেফতারের পর থেকে গুম (গ্রেফতারের ভিডিও)

আপডেট: এপ্রিল ১৩, ২০২২
0

র‌্যাব কর্তৃক আটকের পর গুম হওয়া রাজশাহী কলেজ ছাত্র মিজানুর রহমানের সন্ধান চেয়ে পরিবারের সাংবাদিক সম্মেলন করেছে।
র‌্যাব কর্তৃক আটকের পর নিখোঁজ হাওয়া রাজশাহী কলেজের হিসাব বিজ্ঞানের মাস্টার্সের ছাত্র মিজানুর রহমানের সন্ধান চেয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে তার পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে গুম হওয়া মিজানুর রহমানের মা, বাবা ও ছোট ভাই উপস্থিত ছিলেন। এসময় মিজানুর রহমানের ছোট ভাই লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ৯ই এপ্রিল ২০২২ শনিবার বিকাল ৬.০০ মিনিটে বিনোদপুর মন্ডলের মোড় এলাকা একটি গলির ভিতর থেকে র‌্যাব সদস্যরা মিজানুর রহমানকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকাল ৬.০০ মিনিটের দিকে বালুর মাঠে মিজানুর রহমান দাড়িয়ে ছিলেন। তখন হঠাৎ ৩ জন র‌্যাব সদস্য এসে উপস্থিত হন। তাদের মধ্যে ২জন সাধারণ পোষাকে, ১জন র‌্যাবের পোষাকে ছিলেন। এসময় তারা ১৫ মিনিটের মতো মাঠে দাড়িয়ে মিজানুর রহমানের হাত ধরে কথা বলেন। তারপর সাথে নিয়ে চলে যান। তাকে র‌্যাব কর্তৃক গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে এবং ইতিমধ্যেই এ ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

এ ঘটনার পর থেকে প্রাথমিকভাবে র‌্যাব-৫ এর অফিসে বারবার যোগাযোগ করলেও মিজানুর রহমানের সাথে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। রাত ৯.৩০ মিনিটে মিজানুর রহমানের মেজো ভাই নজরুল ইসলামকে র‌্যাব-৫ এর অফিসের ০১৭৭৭৭১০৫৬৩ নাম্বার থেকে কল দিয়ে মিজানুর রহমানের সাথে কথা বলিয়ে দেন। এসময় মিজানুর রহমান বলেন, ”আমাকে র‌্যাব-৫ এর অফিসে উঠিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। আমি এখন র‌্যাব-৫ এর অফিসে আছি। আমাকে আগামীকাল থানায় পাঠাবেন।” তার কোন খাবার বা পোষাক লাগবে কিনা জিজ্ঞেস করলে বলেন, এখন কোন কিছুর প্রয়োজন নাই বলে জানায় মিজানুর রহমান।

১০ এপ্রিল রবিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কয়েক দফায় মতিহার থানা এবং বোয়ালিয়া থানায় যোগাযোগ করা হলে থানার কর্তব্যরত অফিসার জানান থানায় কাউকে পাঠানো হয়নি। এদিকে র‌্যাব-৫ অফিসের ০১৭৭৭৭১০৫৬৩ নাম্বার থেকে দুপুর ১২ টার দিকে কল দিয়ে বলেন আপনার ভাই সুস্থ আছেন চিন্তা করার দরকার নেই।

১১ এপ্রিল সকাল ১০.০০ টায় মিজানুর রহমানের মেজো ভাই নজরুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী র‌্যাব-৫ এর অফিসে যান, তখন র‌্যাব অফিস থেকে তাদেরকে বলা হয় আমাদের এখানে মিজানুর রহমান নামে কেউ নেই। আপনারা থানায় খোঁজ নিয়ে দেখেন। তারপর মতিহার থানা এবং বোয়ালিয়া থানায় খোঁজ নিলে কর্তব্যরত অফিসার জানান মিজানুর রহমান নামে কাউকে থানায় নিয়ে আসা হয়নি। পরে মিজানুর রহমানের মা বিকাল ৪.৩০ মিনিটে র‌্যাব-৫ এর অফিসে গেলে তাকে আস্বস্ত করা হয় যে, সে র‌্যাব অফিসে আছে। আগামীকাল সকাল ৯-১০ টায় আসেন আপনাদের সাথে দেখা করিয়ে দিবো।

পরে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তার সাথে সাক্ষাৎ করতে না পারায় এবং থানায় হস্তান্তর না করায় মতিহার থানায় সাধারণ জিডি করতে চাইলে ওসি মো: আনোয়ার আলী তুহীন জিডি নিতে অস্বীকৃতি জানায়। অত:পর ওসি বলেন আমরা যদি কোন কারণে গ্রেফতার করতাম তাহলে আদালতে হস্তান্তর করতাম। আর যদি র‌্যাবের হাতে থাকে তাহলে আর ফিরে পাওয়ার আশা নেই।
১২ এপ্রিল মঙ্গলবার র‌্যাব-৫ এর গতকালের ভাষ্যমতে আজ সকাল ৯.৪৫ মিনিটে মিজানুর রহমানের মা-বাবা, মেজো ভাই ও তার স্ত্রী র‌্যাব-৫ এর অফিসে উপস্থিত হয়ে মিজানুর রহমানের সাথে দেখা করতে চাইলে তাদের অফিসে নেই বলে জানান। প্রশাসানের কাছ থেকে কোন ধরনের সহযোগিতা না পাওয়ায় পরিবারের পক্ষ থেকে বিকাল ৪.০০ টায় রাজশাহী শহরে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।