রিক্সাচালকদের জন্য ছাউনি ও পুনঃব্যবহারযোগ্য মাস্ক বিতরণ কর্মসূচি

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১, ২০২১
0

প্রভা অরোরার উদ্যোগে জাতীয়ভাবে আজ একটি সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন শুরু করা
হয়। এই সচেতনতামূলক ক্যাস্পেইনের অংশ হিসেবে সারাদেশের প্রতিটি বিভাগীয়
শহরের রিক্সাচালকদের মধ্যে বিনামূল্যে পুনঃব্যবহারযোগ্য মাস্ক এবং প্রটেকটর
(ছাউনী/মাথাল) বিতরণ করা হবে। এই গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচিটির সূচনা করা হয়
রংপুর বিভাগ থেকে। আজ সন্ধ্যা ৭:৩০টায় এই কর্মসূচিটির জাতীয় পর্যায়ে
উদ্বোধন ঘোষণা করেন ইউএনভি বাংলাদেশের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মো. আকতার
উদ্দিন। এ সময় দেশে ও দেশের বাইরে থেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন
সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনভি বাংলাদেশের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মো. আকতার
উদ্দিন বলেন, “স্বেচ্ছাসেবা এমন একটি পাওয়ারফুল টুল যার মাধ্যমে আমরা মানব
সভ্যতা বা টোটাল যে হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট প্রসেস সেটা সবসময় এ জায়গায় একটা
সিগ্নিফিকেন্ট রোল প্লে করছে। আমি প্রভা অরোরা কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে তারা
স্বেচ্ছাব্রতী তরুণদের একটি প্ল্যাটফর্ম দিয়েছেন। আমাদের সরকার ও ইঊএন
ডেভেলপমেন্ট পার্টনারস সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে এবং আমি মনে করি যদি
আমরা একসাথে কাজ করতে পারি তবে আমরা আরও বেশি ভলান্টিয়ারদেরকে সুযোগ দিতে
পারব। এবং আপনাদের এই চমৎকার উদ্যোগের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। এ সময় তিনি
প্রভা অরোরার উদ্যোগে গৃহিত সচেতনতামূলক ও বিতরণ কার্যক্রমের বিভিন্ন
গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিকোণ তুলে ধরে বলেন, আমি এই কার্যক্রমটিকে কম্প্রিহেনসিভ
ওয়েতে দেখেছি। এর মাধ্যমে স্বেচ্ছাব্রতীরাও পরিবেশ সচেতন হয়ে ওঠারও সুযোগ
পাবে। তিনি অদূর ভবিষ্যতে প্রভা অরোরার সাথে যৌথভাবে স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য
বিভিন্ন ক্যাপাসিটি বিল্ডিং কর্মসূচি গ্রহণের কথা উল্লেখ করেন এবং প্রভা
অরোরাকে টেকনিক্যাল পরামর্শ প্রদানেরও প্রতিশ্রুতি দেন।


অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রভা অরোরার প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং
ডিরেক্টর বিধান চন্দ্র পাল। স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন, রিক্সাচালকদের
স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে আমরা কম-বেশি প্রত্যেকেই অবগত আছি। সাম্প্রতিক
সময়ে বেশ কিছু গবেষণার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রিক্সাচালকরা
স্বাস্থ্যগতভাবে উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন। এছাড়া জ্বর, কাশি, সর্দি, হিট
স্ট্রোকের খবরও আমরা মিডিয়াতে দেখেছি। সাম্প্রতিক সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের
কারণে ঘনঘন বৃষ্টি আমরা লক্ষ্য করছি, লক্ষ করছি সূর্যের তাপমাত্রা বেড়ে
যাচ্ছে। ফলে সার্বিক দিক চিন্তা করে আমরা রিক্সাচালকদের মাঝে দেশব্যাপী
বিনামূল্যে ছাউনী ও পুনঃব্যবহারযোগ্য মাস্ক বিতরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
আমরা আসলে এই চিন্তাটি গ্রহণ করেছি অনেকগুলো উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে তার
মধ্যে রিক্সাচালকদের মাঝে ১৮-৩৫ বছর বয়সী যুব ও যুবনারীদের মাধ্যমে
কোভিড-১৯ সচেতনতা বৃদ্ধি, দেশীয় ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরা,
পলিথিন ও প্লাস্টিকের ক্ষতিকর দিকসমূহ তুলে ধরা, হারিয়ে যাওয়া শিল্পকে
পুনরুজ্জীবিত করে তোলাসহ বিভিন্নমুখি উদ্দেশ্য রয়েছে। তিনি বলেন, এই
কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে আমরা প্রফেশনাল ভলান্টিয়ারিজমের চর্চাও গড়ে তুলতে
চাই।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রভা অরোরার উপদেষ্টা এবং পাবলিক হেলথ
ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন ডঃ আফতাব উদ্দিন। আলোচনায় আরো অংশগ্রহণ করেন দেশে
ও দেশের বাইরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।
সংক্ষিপ্তভাবে অনুভূতি প্রকাশ করেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক গোলাম মুরশিদ,
আমেরিকা থেকে পদার্থবিজ্ঞান ও গণনাতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ ভাস্বতী রায়, বিসিসি
স্পেশালিস্ট কান্তা দেবী প্রমুখ।

প্রসঙ্গত উল্লেখ থাকে যে, এর আগে আজ (৩১ আগস্ট, ২০২১) দুপুর ১২টায় রংপুরের
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে (কাচারীবাজার, রংপুরে) রংপুর জেলা
প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ গোলাম রব্বানী
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে “রিকশাচালকদের জন্য ছাউনী এবং পুনরায়
ব্যবহারযোগ্য মাস্ক বিতরণ” কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। রংপুরের এই
কার্যক্রমটি বাস্তবায়নে স্পন্সর করেছে কনকর্ড গ্রুপ এবং আমেরিকা থেকে
পদার্থবিজ্ঞান ও গণনাতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ ভাস্বতী রায়। আজকে মূলত রংপুরের দুটি
স্থান থেকে এই সচেতনতামূলক ও বিতরণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। জেলা প্রশাসকের
কার্যালয়ের সামনে উদ্বোধন ঘোষণার পর প্রেস ক্লাবের সামনে পরবর্তী বিতরণ
কার্যক্রমটি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে রংপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি জনাব মাহবুব
রহমান হাবু, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জনাব রফিক সরকার, সিনিয়র সাংবাদিক
জনাব মানিক সরকার মানিক এবং জনাব সিদ্দিকুর রহমান উপস্থিত থেকে বক্তব্য
প্রদান করেন এবং স্বেচ্ছাব্রতীদের উদ্যোগে পরিচালিত এই সচেতনতামূলক
কার্যক্রমে অংশ নেন ও উৎসাহ প্রদান করেন। রংপুরে কলেজ রোড, চার তলা মোড়,
প্রমিতির সামনে এবং লালবাগ এলাকায় ও সবশেষে সাতমাথা থেকে আগামী দুই-তিন
দিনব্যাপী (১-৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১) এই কার্যক্রমটি পরিচালিত হবে বলে আয়োজক
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

এই কর্মসূচির ফলাফল বা প্রভাব খুঁজে বের করার জন্য গবেষণার অংশ হিসেবে
বিতরণের পাশাপাশি একটি বিশেষ সার্ভেও পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ
থাকে যে, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা থেকে পর্যালোচনা করে নেওয়া গাইডলাইনের
ভিত্তিতে এই সকল স্বেচ্ছাব্রতীদের কর্মসূচি বাস্তবায়নের আগে বিশেষ
ওরিয়েন্টেশন প্রদান করা হয়।

প্রেস রিলিজ