র‍্যাবের মামলায় : গাজীপুরের আদালতে মাদানীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান

আপডেট: মে ২৮, ২০২১
0

গাজীপুর সংবাদদাতাঃ বিতর্কিত ‘শিশু বক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানী র‍্যাবের দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা ও পর্ণোগ্রাফী আইনের মামলায় গাজীপুর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

জিএমপি’র সিনিয়র সহকারি কমিশনার শুভাশীষ ধর জনান, গাজীপুর সিটি কপোর্রেশনের গাছা থানায় র‍্যাবের দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতারকৃত রফিকুল ইসলাম মাদানীকে একদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে র‍্যাব-১এর তদন্ত কর্মকর্তা। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার মাদানীকে গাজীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ নাজমুননাহারের আদালতে হাজির করা হয়।

রফিকুল ইসলাম মাদানী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। রাষ্ট্র তথা সরকার বিরোধী ও আইন শৃঙ্খলা পরিপন্থী উস্কানী ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে গত ৭এপ্রিল ভোররাতে নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা থানার লেটিরকান্দা এলাকার বাড়ি থেকে আটক করে র‍্যাব-১ এর সদস্যরা। তিনি ওই এলাকার মৃত সাহাব উদ্দিনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে গাজীপুরের গাছা থানা ছাড়াও বাসন থানা এবং ঢাকার তেজগঁাও থানায় মামলা রয়েছে।

তিনি জানান, গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে গাজীপুর সিটি কপোর্রেশনের গাছা থানাধীন বোর্ড বাজার কলমেশ্বর এলাকার শীতক কারখানার ভিতর এক মাহফিলে বক্তব্য দেন রফিকুল ইসলাম মাদানী। সেখানে তিনি রাষ্ট্র তথা সরকার বিরোধী ও আইন শৃঙ্খলা পরিপন্থী উস্কানী ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ডিজিটাল মাধ্যমে প্রদান করেন। যা তার নির্দেশে ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পায়। উস্কানীমূলক বক্তব্যের কারনে তার অনুসারীরা গত ২৬ মার্চ ঢাকা বায়তুল মোকাররম মসজিদ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতা করে। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটে। এঘটনায় গত ৭এপ্রিল ভোররাতে নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা থানার লেটিরকান্দা এলাকার বাড়ি থেকে আটক করে র‍্যাব-১ এর সদস্যরা।

তিনি ওই এলাকার মৃত সাহাব উদ্দিনের ছেলে। ওই দিন রাতেই তাকে গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানায় হস্তান্তর করা হয়। তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৮ এপ্রিল একটি মামলা দায়ের করেন র‍্যাব-১ এর নায়েব সুবেদার (ডিএডি) মোঃ আব্দুল খালেক। এ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

রফিকুল ইসলাম মাদানীকে আটককালে তার কাছ থেকে ৪টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। তিনি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। এছাড়াও জব্দকৃত মোবাইল ফোনে আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ ‘এডাল্ট কনটেন্ট’ অশ্লীল ভিডিও চিত্রসহ পর্নোগ্রাফি পাওয়া গেছে। এসব এডাল্ট ছবি ও ভিডিও তিনি নিয়মিত দেখতেন এবং সেগুলো স্টোর করতেন ও লিংক দিতেন। এজন্য রফিকুল ইসলাম মাদানীর বিরুদ্ধে গাছা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রুজুকৃত মামলায় পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮(৫)(ক) ধারা সংযোজন করা হয়। রফিকুলের বয়স ২৭ বছর হলেও আকার-আকৃতির জন্য তাকে ‘শিশু বক্তা’ বলে ডাকেন তার ভক্তরা।

তিনি আরো জানান, মাদানীর বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৮ ও ৩১ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। যেখানে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও অনুভূতিতে আঘাত করে আক্রমণাত্মক ও মিথ্যা ভীতি প্রদর্শন; তথ্য উপাত্ত ইলেকট্রনিক্স বিন্যাসে প্রকাশ ও সম্প্রচার করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটানোর অপরাধের কথা বলা হয়েছে।

###
মোঃ রেজাউল বারী বাবুল
গাজীপুর।