লকডাউনে কারখানা খুলে শ্রমিকদের হয়রানির ঘটনায় শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের উদ্বেগ

আপডেট: আগস্ট ১, ২০২১
0

করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত লকডাউনের মধ্যে যাতায়াতের জন্য পরিবহনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না করে রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা খুলে দিয়ে শ্রমিকদের হয়রানির ঘটনায় শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। একই সাথে পুন:পুন শ্রমিক হয়রানি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে।

সরকারি সিদ্ধান্তের সাথে একমত পোষণ করে শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম মনে করছে ‘লকডাউন’ তথা ঘরে থাকাই এ মুহূর্তে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে দূরে থাকার একমাত্র উপায়। সে কারণে শ্রমজীবীদেরও ঘরে থাকা বাঞ্চনীয়। কিন্তু লকডাউন সময়ে শিল্প কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অপ্রত্যাশিত ও অনভিপ্রেত। কারখানা খোলার খবরে গত বছরের মতো আবারো কয়েক লাখ শ্রমিক গণ-পরিবহনের অভাবে পায়ে হেঁটে, রিকশা, ভ্যান, ট্রাক, কাভার্ডভ্যানসহ নানাভাবে দুর্ভোগ সহ্য করে কারখানার অঞ্চলগুলোতে আসছেন। করোনার এ উর্ধ্বগতির সময়ে কোনরকম স্বাস্থ্যসম্মত পরিবহন এবং জীবনের নিরাপত্তা ছাড়া এভাবে শ্রমিকদের আসা-যাওয়া করতে বাধ্য করার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম।

শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম মনে করে, করোনা পরিস্থিতি এই সত্যকে নতুন করে সামনে এনেছে যে শ্রমিকরাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের উৎপাদন, রপ্তানি তথা অর্থনীতির চাকা চালু রাখছে। অথচ বিভিন্ন সময়ে সেই শ্রমিকদেরই নানারকম অনাকাংখিত দুর্ভোগ পোহাতে হয়। মানসম্মত পরিবহন ছাড়া শ্রমিকদের বিপদে ফেলে নতুন করে করোনার সংক্রমণ বাড়ানো হলে তার দায়ভার মালিক এবং সরকারকেই নিতে হবে।

শ্রমজীবী মানুষের জীবন রক্ষায় এ মুহূর্তে শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের আহবান-

১. লকডাউনে শ্রমিকদের হয়রানি বন্ধে পরিবহণ ব্যবস্থা চালু করা;
২. করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি/প্রকোপ বিবেচনায় আগামী ৫ আগস্ট ২০২১ তারিখ পর্যন্ত কোন শ্রমিককে কর্মস্থলে উপস্থিত থাকতে বাধ্য না করা, প্রয়োজনে অবস্থার গুরুত্ব বিবেচনায় মজুরিসহ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা;
৩. শুধু অনুপস্থিতির কারণে শ্রমিকের মজুরি কর্তন এবং চাকুরিচ্যূত না করা;
৪. লকডাউনের সুযোগে কারখানা লে-অফ ঘোষণা না করা:
৫. কারখানা খোলা রাখার সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে কিনা তা মনিটরিং করা;
৬. স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ক সচেতনতা ও নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি (মাস্ক, গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার) সরবরাহ করা;
৭. আক্রান্ত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা এবং কোয়ারান্টাইন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা;
৮. কারখানার নিজস্ব পরিবহনে শ্রমিকদের বাসা থেকে কর্মস্থলে আনা নেওয়ার ব্যবস্থা করা;
৯. শ্রমজীবী মানুষের জীবনের নিরাপত্তায় জরুরি ভিত্তিতে তাদের ভ্যাকসিন প্রদানের ব্যবস্থা করা;