লবণাক্ততায় ভরে গেলো খাদ্য ভান্ডার : বিল ডাকাতিয়ায় মারা যাচ্ছে কয়েক হাজার বিঘার ধান

আপডেট: মার্চ ৩, ২০২৩
0
dakatia bill


# এমপি দোষারোপ করলেন পাউবোকে # পাউবো দায়ী করলেন জনগণকে।

মোঃ আনোয়ার হোসেন আকুঞ্জী, খুলনা ব্যুরো॥
পরিকল্পিতভাবে স্লুইজ গেইট খুলে মাছ ধরা এবং চিংড়ি চাষের জন্য লবণাক্ত পানি ঢোকানোর কারণে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিল ডাকাতিয়ায় চলতি বোরো মৌসুমে মারা যাচ্ছে কয়েক হাজার বিঘার ধান। ধান উৎপাদনে ব্যর্থ হয়ে ক্ষেত ছেড়ে দিয়েছে অসংখ্যা কৃষক। বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্ত শ শ কৃষক পরিবারে উঠেছে কান্নার রোল। এ বিষয়ে সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি দোষারোপ করলেন প্উাবোর কর্মকর্তদের এবং পাউবোর কর্মকর্তা দায়ী করলেন স্থানীয় জনগণকে।

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাদ্য উৎপাদনের অন্যতম ভান্ডার হচ্ছে বিল ডাকাতিয়া। দীর্ঘদিনের ফসল অজন্মা ও স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে ৯০ এর দশকে জনগণ ওয়াপদার ভেড়ি বাঁধ কেটে জোয়ার ভাটা চালু করে। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ উিঁচু হলে বিলে কৃষকেরা পকেট ঘের তৈরি করে মাছ ও ধান চাষ করে আসছিল। উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের ধান চাষী বিদ্যুৎ ম-ল, তারক চন্দ্র ম-ল, শতদল ঘরামি, অলোক সরকার, বিদ্যুৎ ঘরামি, সুনিল ম-ল ও রবিন সরকার জানান; শৈলমারী স্লুইজ গেইট ভায়া শলুয়া, আমভিটা ও থুকড়া গেইট দিয়ে আশ্বিন- কার্তিক মাসে লবণ পানি ঢুকিয়ে চিংড়ি মাছ চাষ ও জাল দিয়ে মাছ ধরেন একটি মহল। ফলে বিল ডাকাতিয়ায় ব্যাপকভাবে লবণ পানি প্রবেশ করে। তাছাড়া শলুয়া গেটের কপাট ভেঙে গেছে এবং আমভিটা এবং থুকড়া গেইটে কপাট না থাকার কারণে তাও অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। পূর্বে উঠানো পানির লবণাক্ততা তীব্র হওয়ায় বর্তমানে ধানের গাছ ব্যাপকভাবে মারা যাচ্ছে। ধান উৎপাদনে ব্যর্থ হয়ে ক্ষেত ছেড়ে দিয়েছে অসংখ্যা কৃষক। প্রদীপ জোয়ার্দার ও রাজু সরকারের মত অসংখ্যা কৃষক লবণাক্ততায় ধান গাছ মারা যাওয়ায় আশা ছেড়ে দিয়ে ক্ষেত পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। শুক্রবার সকালে এ প্রতিবেদক সরেজমিনে গেলে উঠে আসে এসব করুণ চিত্র।২নং রঘুনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনোজীৎ বালা বলেন; বিষয়টি এলাকার সবাই জানে আমি এ বিষয়ে কোন বক্তব্য দেবনা। কারা পানি উঠায় পানি উন্নয়নবোর্ড তা ভালোভাবে জানেন।

লবণাক্ততায় বিল ডাকাতিয়ায় মারা যাচ্ছে কয়েক হাজার বিঘার ধান

ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ আসিফ রহমান বিষয়টি অবগত হয়ে বলেন; বিষয়টি আমি দেখছি। সাবেক মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি বলেন; বিষয়টি আমার জানা আছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে আমি বিষয়টি নিয়ে বার বার বলেছি কিন্তু তারা এ বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে না। চলতি বছরে কৃষকরা যে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা পূরণ হবার নয়। এগুলো চেয়ারম্যান মেম্বারদের দেখা উচিত। এমপির একার পক্ষ্যে কতটা দেখা সম্ভব। আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি নিয়ে বলছি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন; এর জন্য স্থানীয় জনঘণ দায়ী। তারা কেন লবন পানি উঠায়(?) আমাদের বোধগম্য নয়। ইতোমধ্যে শলুয়া গেইটে আমরা কপাট লাগিয়ে দিয়েছি। ডব্লিউ এম এ’র সদস্যরাও ঠিকমত কাজ করেনা। সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপির বার বার তাকিদের বিষয়টি জানালে তিনি বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন; অনেকেই অনেক কথা বলেন। কিন্তু সবকিছু কি আমাদের দেখা সম্ভব? তবুও বিষয়টি দেখছি কি করা যায়।