শ্রমিক দরদি নেতৃত্ব ছাড়া শ্রমজীবী মানুষের দুর্দশা দূর করা অসম্ভব: অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান

আপডেট: ডিসেম্বর ১৪, ২০২২
0

মহান বিজয় দিবস ও শ্রমিক সেবা পক্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে শ্রমজীবী মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেছেন, শ্রমিকদের দুঃখ-দুর্দশা রাষ্ট্রের কর্তৃত্বশীল নেতারা দেখে না। শ্রমজীবী মানুষের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে রাষ্ট্র ক্ষমতায় শ্রমিক দরদি নেতৃত্বকে বসাতে হবে। কারণ শ্রমিক দরদি নেতৃত্ব ছাড়া শ্রমজীবী মানুষের দুর্দশা দূর করা অসম্ভব।

তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী উত্তরের উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস ও শ্রমিক সেবা পক্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে শ্রমজীবী মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের মহানগরী সভাপতি মোঃ মহিব্বুল্লাহ-এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আতিকুর রহমান-এর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মুহাম্মদ তসলিম।

অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেন, শ্রমিকরা যা আয় করে তার সিংহভাগ খরচ হয়ে যায় বাসা ভাড়া ও খাবার ক্রয় করতে। তাদের হাতে অতিরিক্ত কোন অর্থ থাকে না। দৈনন্দিন জীবনের অন্যান্যখাতে ব্যয় করার কথা তাদের পক্ষে চিন্তা করাও কঠিন। প্রতিবছর শীত মৌসুমে শ্রমিকরা নিদারুণ কষ্টে অতিবাহিত করে। পরিবার-পরিজন নিয়ে শীতের রাত কষ্টে কাটাতে হয়। রাতে গায়ে মুড়ি দেওয়ার মত একটি কাঁথা বা কম্বল তাদের থাকে না। শ্রমিকদের এই কষ্ট দূরীকরণে রাষ্ট্রকে অনেক বেশি তৎপর হওয়া দরকার ছিল। কিন্তু রাষ্ট্র তাদের দায়িত্ব পালনে চরম উদাসিন। তারা নামকাওয়াস্তে কিছু উদ্যোগ নিয়ে তাদের দায়িত্ব শেষ করে।

অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেন, দেশের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ শ্রমজীবী। যারা রাষ্ট্র ক্ষমতা চায় তারা শ্রমজীবী মানুষদের দুঃখ দুর্দশা দূর করার অঙ্গীকার করে। কিন্তু ক্ষমতার মসনদ পেয়ে সেই অঙ্গীকারের কথা ভুলে যায়। ভুলে যায় এই রাষ্ট্রযন্ত্র সচল রাখার জন্য শ্রমিকদের অমানুষিক হাড়ভাঙা পরিশ্রমের কথা। তারা শ্রমিকের রক্ত ঘামে নিজেদের ধন দৌলতের পাহাড় গড়ে তুলে। শ্রমিকের ঘামে অর্জিত টাকা সম্পদ দিয়ে তারা আয়েশী জীবন-যাপন করে।

তিনি আরও বলেন, দেশে আজ দুর্নীতি লুটপাটের মহোৎসব চলছে। দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। অথচ এখনো দুইবেলা দুমুঠো খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য অসংখ্য বনি আদমকে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হচ্ছে। যে দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণি ভোর হওয়ার আগে খাদ্যপণ্যের জন্য টিসিবির ট্রাকে লাইনে দাঁড়ায় সে দেশের নিম্মবিত্ত ও দরিদ্র মানুষদের কি অবস্থা তা বলে বোঝানো যাবে না। এই কঠিন দুরাবস্থা থেকে মুক্তির জন্য শ্রমজীবী মানুষদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সৎ নেতৃত্বের হাতে রাষ্ট্র ক্ষমতা তুলে দেওয়ার জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে।