শ্রীপুরে পুলিশের ধাওয়ায় নদীতে ঝাপ দিয়ে নিখোঁজের দু’দিন পর যুবকের লাশ উদ্ধার

আপডেট: এপ্রিল ৫, ২০২২
0

গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের শ্রীপুরে পুলিশের হাত থেকে রক্ষা পেতে শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝাপ দিয়ে নিখোঁজের দু’দিন পর এক যুবকের অর্ধগলিত লাশ মঙ্গলবার উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার নাম মামুন (৩৫)। সে গাজীপুরের শ্রীপুর থানাধীন বরমী ইউনিয়নের বরামা (জেলে পাড়া) গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে।

নিহতের বড় ভাই মাসুম ও স্থানীয়রা জানান, গত রবিবার বিকেলে ইফতার কেনার জন্য বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী দোকানের উদ্দেশ্যে বের হয় মামুন। পথে বরমী ইউনিয়নের বরামা গ্রামের শীতলক্ষা নদীর রায়েদ গুদারা ঘাটের কাছে পৌছলে শ্রীপুর থানার এএসআই শাকিল আহমেদের সঙ্গে তার দেখা হয়। এসময় এএসআই শাকিল আহমেদসহ সাদা পোশাকের ২/৩জন পুলিশ ও তাদের সোর্স রৌশনকে সঙ্গে নিয়ে মামুনকে আটক করে মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে মামুন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় পুলিশ তার পিছু নিয়ে ধাওয়া করলে পুলিশের হাত থেকে রক্ষা পেতে মামুন পার্শ্ববর্তী শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝাঁপ দেয়।

সাঁতার কেটে নদী পার হওয়ার সময় মামুন মাঝ নদীতে তলিয়ে যায়। নদীতে ডুবে যাওয়ার সময় মামুন দু’হাত তুলে বাঁচার চেষ্টা করে। এসময় মামুনকে নদীতে তলিয়ে যাওয়ার দৃশ্য নদীর পাড়ে থাকা স্থানীয়রা দেখতে পান। খবর পেয়ে শ্রীপুরের মাওনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী দল ঘটনার রাতে শীতলক্ষ্যা নদীতে খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান পায়নি। ঘটনার দু’দিন পর মঙ্গলবার সকালে শীতলক্ষ্যা নদীর ভাটিতে পার্শ্ববর্তী কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ খেয়াঘাটে সিংহশ্রী ব্রীজ এলাকায় এক যুবকের লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে মাসুমসহ তার স্বজনেরা ওই খেয়াঘাটে গিয়ে মামুনের লাশ শনাক্ত করে।

শ্রীপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মাহফুজ ইমতিয়াজ ভুঁইয়া জানান, খবর পেয়ে পুলিশ রায়েদ খেয়াঘাট এলাকায় গিয়ে মামুনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে। ময়না তদন্তের জন্য নিহতের লাশ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশ ফুলে যাওয়ায় প্রাথমিক সুরতহালে নিহতের শরীরের কোনো আঘাতের চিহ্ন আছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তিনি আরো জানান, মামুন শ্রীপুর থানার একটি চুরি মামলার পলাতক আসামি। এর আগেও মামুনকে ওই মামলায় গ্রেফতারের জন্য একাধিকবার চেষ্টা চালালেও গ্রেফতার করা সম্ভব হয় নি। রবিবার বিকেলে মামুনকে গ্রেফতারের জন্য পুনঃরায় অভিযান চালালে সে পুলিশ দেখে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

নিহতের ভাই মাসুম অভিযোগ করে বলেন, ইতোপূর্বে শ্রীপুর থানার এএসআই শাকিল আহমেদ একাধিকবার মামুনকে আটক করেছেন। মামলাও দিয়েছেন। এতে মামুনের মনে পুলিশি ভীতি কাজ করতো সবসময়। তাই সে পুলিশ দেখে আত্মরক্ষার জন্য দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল। পুলিশ মামুনকে আটক ও মারপিট করে নদীতে ফেলে দেয়। পরে আহত মামুন সাঁতরে নদী পার হবার সময় মাঝ নদীতে তলিয়ে যায়।