সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা করতে এই সরকার ব্যর্থ হয়েছে—মির্জা ফখরুল

আপডেট: জুন ৪, ২০২২
0

দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় সরকার ব্যর্থ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার বিকালে ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের উদ্যোগে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ দুর্ভাগ্যজনকভাবে গত কয়েক বছর ধরে আমরা দেখছি যে, এই সরকার যারা সবসময়ই সাম্প্রদায়িকার বিরুদ্ধে কথার চেষ্টা করেন, তাদের সময়ে ভালো সম্প্রদায়িকতা অবস্থা বলার চেষ্টা করেন কিন্তু দেখা গেছে যে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই আমলে যারা হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ আছেন, যারা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ আছেন, যারা খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষ আছেন তাদের ওপরে, তাদের জমিজমার উপরে, তাদের বাসা-বাড়ির ওপরে হামলা হয়েছে, তারা সেগুলো রক্ষা করতে পারেনি।”

‘‘ আজকে আমরা দেখছি, অনেকে জানেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে ধর্মীয় স্বাধীনতার উপরে যে রিপোর্ট হয় সেই রিপোর্টে আজকে খুব পরিস্কার করেছে তারা উল্লেখ করেছে যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা করতে এই সরকার ব্যর্থ হয়েছে।এটাই বাস্তবতা, এটাই সত্য। ”

তিনি বলেন, ‘‘ আমরা(বিএনপি) সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বলে কিছু আছে তা বিশ্বাস করি না। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের সবাই একই সম্প্রদায়ের মানুষ। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেটাতেই বিশ্বাস করেন।”

বিএনপির প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানে ৪১তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট এই প্রার্থনা সভা হয়। জিয়াউর রহমানের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।

এছাড়া সদ্য পরোলোকগত হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহবায়ক গৌতম চক্রবর্তীর স্মৃতির প্রতিও শ্রদ্ধা জানানো হয় এই সভায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ বর্তমানে দেশে যে গণতন্ত্রহীনতা চলছে সেই গণতন্ত্রহীনকে দূর করে আমরা যেন মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে পারি, মানুষের অধিকারগুলো রক্ষা করতে পারি, আমরা যেন এই দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারি, আমরা এদেশের সাম্প্রদতায়িকতা সমস্ত বীজকে উপড়ে ফেলতে পারি সেজন্য আজকে আমাদের ১৭ কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সত্যিকার অর্থেই ১৯৭১ সালে আমরা যে স্বপ্ন দেখেছিলাম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবার সেই বাংলাদেশকে যেন আমরা প্রতিষ্ঠা করি। সেজন্য আমাদের সংগ্রাম করতে হবে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই করতে হবে।”

‘‘ প্রার্থনা করব আমাদের দেশে যেন গণতন্ত্র পুণঃপ্রতিষ্ঠা হয়, সত্য ও সুন্দর প্রতিষ্ঠিত হয়, সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়।”

সরকার প্রতিহিংসামূলকভাবে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অন্তরীণ করে রাখা, মিথ্যায় মামলায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিদেশে নির্বাসিত করে রাখা, দেশে ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও গুম-খুনে দেড় সহস্রাধিক নেতা-কর্মীকে নিহত করার বিষয়টি তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

দলের সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেস দাস অপুর সভাপতিত্বে ও যুব দল নেতা তরুন দে‘র সঞ্চালনায় এই প্রার্থনা সভার পূরেব সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী।

প্রার্থনা অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বিজন কুমার সরকার, কেন্দ্রীয় নেতা জয়ন্ত ‍কুমার কুন্ড, সুশীল বড়ুয়া, অর্পনা রায়, রমেশ দত্ত, দেবাশীষ মধু, মিল্টন বৌদ্ধ, জয়দেব, সাবেক কমিশনার মীর আশরাফ আলী আজম, মোশাররফ হোসেন খোকন এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার ও প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।