সবাইকে নিয়ে আফগান সরকার গঠনে ইমরান খানের উদ্যোগ

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২১
0

আফগানিস্তানের সরকারে যেন তাজিক, উজবেক এবং হাজারাসহ সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব থাকে সে লক্ষ্যে তালেবানের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

টুইটারে এক পোস্টে তিনি জানান, তাজিকিস্তানে সম্প্রতি সাংহাই সহযোগিতা সংগঠনের এক শীর্ষ সম্মেলনে আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এই উদ্যোগ নিয়েছেন।

তিনি বলেন, আফগানিস্তানে ৪০ বছর ধরে যুদ্ধ চলার পর নতুন সরকারে সংখ্যালঘু প্রতিনিধিত্ব থাকলে তবেই সে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হবে। তালেবানের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বেশিরভাগ সদস্যই পশতুন জাতিগোষ্ঠীর এবং মন্ত্রীসভায় একজনও নারী নেই।

বিবিসির সংবাদদাতা লিস ডুসেট সম্প্রতি এক নিবন্ধে লিখেছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই তালেবান নেতারা এসব কথা বলে আসছিলেন, আমরা এমন একটি সরকার গঠন করার চেষ্টা করছি যেন আফগানিস্তানের সব জনগণের প্রতিনিধিত্ব থাকে।

এর আগে তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ্ মুজাহিদ বলেছিলেন, আমরা শান্তিতে বসবাস করতে চাই। ঝড়ের গতিতে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর গত ১৫ অগাস্ট কাবুলে তালেবানের প্রথম সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমরা দেশের ভেতরে বা বাইরে কোন শত্রু চাই না।

তবে তালেবান সবাইকে নিয়ে সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি দিলেও সেটা একেবারেই হয়নি বলে ওই নিবন্ধে লিখেছেন লিস ডুসেট।

তালেবানের নেতৃত্বে পুরনো কাঠামো, এর নানা ধরনের কমিশন, ডেপুটি এবং সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী আমির হিবাতুল্লাহ্ আখুনজাদা – এদের সবাইকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে মন্ত্রিসভার কাঠামোর মধ্যে, যেমনটি অন্য দেশের সরকারের রাজনৈতিক কাঠামোতেও দেখা যায়।

পুরনো তালেবান সরকারের নৈতিকতা সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়টি পুনর্বহাল করা হয়েছে। মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় বাদ দেওয়া হয়েছে। সরকারের সদস্যরা বেশিরভাগই পশতু জাতিগোষ্ঠীর সদস্য। মন্ত্রিসভায় রয়েছেন একজন তাজিক এবং একজন হাজারা – তারা দু’জনেই তালেবানের সদস্য। একজন নারীকেও মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়া হয়নি। এমনকি উপমন্ত্রীর মর্যাদায়ও কোনো নারী নেই।

তালেবানের এই নতুন সরকার গঠিত হয়েছে পুরনো তালেবান নেতা এবং নতুন প্রজন্মের মুল্লাহ্ ও সামরিক অধিনায়কদের নিয়ে। ১৯৯০ এর দশকে তালেবানের যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তারা ফিরে এসেছেন। তাদের দাড়ির রঙ এখন সাদা, দাড়ির দৈর্ঘ্যও বেড়েছে। সরকারে রয়েছে গুয়ানতানামো বে থেকে ফিরে আসা কিছু সদস্য।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের কালো তালিকাভুক্ত ক’জন সদস্য, গত ক’মাস ধরে তীব্র লড়াইয়ে যুক্ত ছিলেন এমন ক‌’জন অধিনায়ক, আর কিছু স্বঘোষিত শান্তি আলোচনাকারী- তারা নানা দেশে চক্কর দিয়ে সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে এটি তালেবানের নতুন সংস্করণ।