সমর নেতা থেকে শহীদ জিয়া একজন রাজনীতিবিদ জননেতা ও রাষ্ট্রনায়ক

আপডেট: জানুয়ারি ১৯, ২০২২
0


হামিদ কল্লোল

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। ডাকনাম ছিলো কমল।১৯৩৬সালের ১৯শে জানুয়ারি এই দিনে বগুড়া জেলার বাগবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তাঁর পিতার নাম মোঃ মনসুর রহমান।মাতার নাম জাহানারা খাতুন।

জিয়াউর রহমানের রয়েছে বর্ণাঢ্য শৈশব কৈশোর, শিক্ষা জীবন এবং সৈনিক জীবন।জিয়াউর রহমান বীর উত্তম জাতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান।বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে তাঁর অবদান অপরিসীম। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সামরিক বাহিনী বাঙালি জনগণের উপর আক্রমণ করার পর তিনি তাঁর পাকিস্তানি অধিনায়ককে বন্দি করে বিদ্রোহ করেন এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। জাতির এক গুরুতর ক্রান্তিকালে ১৯৭১ সালে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে দেয়া তাঁর স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে এদেশের লক্ষকোটি জনতা স্বাধীনতার যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। এই স্বাধীনতা ঘোষণাতেই জিয়া এ দেশের জনমানুষের সামনে পরিচিতি লাভ করেন। পরে ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর সিপাহি-জনতার এক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন এবং৩০শে মে ১৯৮১ সালে শাহাদতবরণের মধ্য দিয়ে তাঁর শাসনামলের অবসান ঘটে।

বাংলাদেশে তাঁর শাসনামল এক উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। রাষ্ট্রপতি হিসেবে জিয়াউর রহমান বহুবিধ সাফল্যের অধিকারী। স্বল্প সময়ের শাসনামলে নানা সঙ্কটে বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে উন্নতি ও সমৃদ্ধির এক বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে অধিষ্ঠিত করে জিয়া ইতিহাসে নিজের অক্ষয় স্থান নিশ্চিত করেন। জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন সুরুচিসম্পন্ন সংস্কৃতিবান মানুষ। বই পড়া ও গান শুনা ছিল তার প্রিয় ও পছন্দের কাজ। তিনি একজন চৌকস ক্রীড়াবিদ ছিলেন। দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও সংস্কৃতিবান মানুষ হিসেবে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জাতীয় জীবনে সংস্কৃতি চর্চার গুরুত্ব উপলব্ধি করেন এবং এর উন্নয়ন বিকাশে নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেন।

তিনিই বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা। তিনি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ-সংস্কৃতি নির্বিশেষে সব নাগরিকের ঐক্য ও সংহতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। শহীদ জিয়া বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের চেতনার অনুকুলে এবং এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ আপন বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল সংস্কৃতির বিকাশ সাধনে চেষ্টা করেছিলেন। জিয়া মনে করতেন, আমাদের সংস্কৃতি আমাদের দেশজ কৃষ্টির ধারক ও বাহক। এ সংস্কৃতির রয়েছে বিকাশ ও সমৃদ্ধিপ্রাপ্তির এক অনন্য সাধারণ ঐতিহ্য- যা বলিষ্ঠ স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের স্বাতন্ত্র্যে সমুজ্জ্বল।

১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেন। দলটির প্রতিষ্ঠাকালীন ঘোষণাপত্রে ২৮ নম্বর ধারায় বাংলাদেশী সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ক্রীড়ার বিকাশে বিএনপির কর্মপ্রয়াসের কথা বলা হয়। ঘোষণাপত্রে বলা হয়- ‘জাতির স্বতঃস্ফূর্ত সৃজনশীল প্রতিভার সুষ্ঠু সার্বিক বিকাশের উদ্দেশ্যে আমাদের দল সংস্কৃতি, সাহিত্য ও ক্রীড়ার সংগঠিত ও বিস্তৃততর উন্নয়নের প্রচেষ্টা নেবে।’ এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য- (ক) দেশের প্রতিটি এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক সংস্কৃতি ও ক্রীড়া কেন্দ্র পর্যায়ক্রমে ও সুবিন্যস্তভাবে গড়ে তোলা হবে; (খ) সংস্কৃতি, সাহিত্য ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সব জননির্ভর এবং জীবনমুখী লোক প্রচেষ্টাকে প্রয়োজনীয় ও বাস্তব সহায়তা দেয়া হবে; এবং (গ) দেশের আনাচে-কানাচে সংস্কৃতি, সাহিত্য ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে যেসব প্রতিভাশীল ব্যক্তি ও গোষ্ঠী রয়েছে তাদের চর্চা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ দিয়ে তাদের সাধনালব্ধ কৃতিত্বকে জাতীয় সম্মান ও সম্পদে রূপান্তরিত করার সুসংগঠিত চেষ্টা চালানো হবে। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম পদত্যাগ করলে জিয়া প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির দায়িত্বও গ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালের ৩ জুন বাংলাদেশে সর্বপ্রথম দলীয় ভিত্তিতে ও প্রত্যক্ষ ভোটে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন জিয়া। এভাবেই একজন সমর নেতা থেকে জিয়াউর রহমান একজন রাজনীতিবিদ জননেতা ও রাষ্ট্রনায়কে রূপান্তরিত হয়েছিলেন।শিক্ষা মানব জীবনের এক অমূল্য সম্পদ। মানুষের জ্ঞান ও চিত্তের উৎকর্ষের জন্য, মানব সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিকাশের জন্য, চরিত্র গঠন ও মানবীয় মূল্যবোধের জন্য,সর্বোপরি মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য শিক্ষা হচ্ছে প্রধান নিয়ামক। রাষ্ট্রপতি হিসেবে শহীদ জিয়া শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নকে তাঁর সরকার একটি অগ্রাধিকার খাত হিসেবে গ্রহণ করেছিল। শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে শহীদ জিয়ারও একটি নিজস্ব চিন্তা ও দর্শন ছিল। তিনি স্বাধীন দেশের উপযোগী এবং উৎপাদনমূখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি বলেন“শিক্ষা মানুষের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের মূল উপাদান।” তাই স্বাধীন জাতির আশা-আকাক্সক্ষাকে সামনে রেখে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার সময়োপযোগী পরিবর্তন অত্যাবশ্যক বলে তিনি মনে করতেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে মৌল সমস্যাগুলো অনুধাবন করে বাস্তবমূখী শিক্ষাব্যবস্থা চালু করতে তাঁর সরকার প্রয়োজনীয় সম্পদ ও শক্তি নিয়োজিত করেছিল। জিয়াউর রহমান তাঁর শিক্ষা দর্শনের সাথে সঙ্গতিপূণ একটি সময়োপযুগী অন্তর্বর্তী শিক্ষানীতি প্রণয়ণের জন্য ১৯৭৮ সালে প্রফেসর মুস্তফা বিন কাসিমের নেতৃতে একটি জাতীয় শিক্ষা উপদেষ্টা কমিটি গঠন করেন। এই কমিটি ১৯৭৯ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ‘অন্তর্বর্তীকালীন শিক্ষানীতি সুপারিশ’ শিরোনামে একটি রিপোর্ট পেশ করে। এই রিপোর্টে দেশে শিক্ষিতের হার বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয় যাতে জনগণ দেশের উন্নয়নে ভ‚মিকা রাখতে পারে। এ রিপোর্টে বৃত্তিমূলক, কারিগরী, কৃষি ও চিকিৎসার সম্প্রাসারণে বিশেষ জোর দেয়া হয়। জিয়াউর রহমান নিজেও মনে করতেন যে, বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নতি এবং দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির জন্য বৃত্তিমূলক কৃষি ও বৃত্তিমূলক কারিগরি শিক্ষার সম্প্রাসরণ একান্ত প্রয়োজন। শহীদ জিয়ার প্রতিষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র’ প্রতিষ্ঠাকালীন ঘোষণাপত্রের ২১ নং ধারায় বাংলাদেশে একটি ‘গণমুখী ও জীবননির্ভর শিক্ষা কার্যক্রম’ চালুর প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছিল। এতে বলা হয়েছিল বিএনপি সরকার “এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনের পক্ষপাতী যা জাতীয় ঐক্য আনে, উৎপাদন বাড়ায় এবং ব্যক্তি ও সামাজিক উন্নয়নের নিশ্চয়তা দেয়।” শিক্ষিত যুব সমাজ যেন বেকারত্বের অভিশাপে নিপতিত না হয়, সেজন্য বিজ্ঞানভিত্তিক, কারিগরি ও বৃত্তিমূল শিক্ষার দ্রুত প্রসারে সরকারের সদিচ্ছার কথা ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছিল।
১৯৭৯ সালে ২ এপ্রিল জাতীয় সংসদে বক্তৃতাকালে বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষাকে “জাতির জন্য কল্যাণকর” বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। তিনি মনে করতেন বাংলাদেশের অগণিত জনগণের উন্নতি ও ভবিষ্যৎ জাতীয় জীবনের বহুমুখী সমস্যা সমাধানের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার প্রয়োগ অপরিহার্য।এ কারণেই তিনি ১৯৭৬ সালে “জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যা পরিষদ” গঠন করেন। শহীদ জিয়া মনে করতেন গ্রামীণ ও পল্লী উন্নয়নে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার ব্যাপক প্রয়োগ ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক পরিকল্পনায় উপযোগী প্রযুক্তিবিদ্যার ব্যাপক প্রয়োগ ও ব্যবহার দরকার। আর এ জন্য তাঁর সরকার ‘পল্লী প্রযুক্তি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান’ গড়ে তোলেছিল।
বাংলাদেশে বিদ্যমান বাস্তবতায় বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষার উপর জিয়াউর রহমান জোর দিয়েছিলেন সত্য, তবে একই সাথে তিনি মানবিক শিক্ষার অপরিহার্যতার কথাও বলেছেন। তিনি মনে করতেন, মানবিক শিক্ষা ব্যতিত মানুষের জ্ঞান পূর্ণতা পাবে না। তাঁর মতে, কেবল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা মানুষকে যন্ত্রে পরিণ করবে। এ শিক্ষাকে ভারসাম্যপূর্ণ করতে হলে এতে “মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে আসতে হবে।” আর এ জন্য তিনি “পর্যাপ্ত ধর্মীয় শিক্ষা এবং চরিত্র গঠন বা ক্যারেক্টার বিল্ডিং-এর শিক্ষা” গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। আর এ দু’টো শিক্ষা ঠিকভাবে নিতে হলে শিক্ষার্থীকে অবশ্যই সত্য ও ন্যায় এবং বাস্তব ইতিহাসের মাধ্যমে পাঠ দিতে হবে। শহীদ জিয়া শিক্ষার্থীদের আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সত্য ও প্রকৃত ইতিহাস পাঠ দানের উপর গুরুত্বারোপ করেছিলেন। তাঁর ভাষায় “ যতদিন না আমরা আমাদের জাতীয় সত্যকে-আমাদের যে একটা জাতীয় ইতিহাস আছে, এ সত্যকে ঠিকভাবে এস্টাবিলিস্ট করতে পারবো, ততদিন জাতি হিসেবে আমাদের মধ্যে গৌরব আসবে না।”
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য আমাদের জাতীয় পরিচয়ের ও আত্ম উপলব্ধির অনস্বীকার্য উপাদান। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য যাতে আমাদের জাতীয় জীবনে পূর্ণ ও ব্যাপক মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হয় সেজন্য শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বাংলার ভাষার কথা বলেছেন। বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাকালীন ঘোষণাপত্রের ২৭ ও ২৮ নং বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির উন্নয়নে জিয়া সরকার ও তাঁর দলের করণীয় নির্দেশ করা হয়েছে। বাংলায় মাধ্যমিক ও উচ্চতর শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক গবেষণামূলক গ্রন্থ রচনায় জিয়া সংশ্লিষ্টদের দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। শিক্ষার মাধ্যম ও জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার বলিষ্ঠ ব্যবহার ও ব্যাপকতর প্রসারে জিয়াউর রহমান সর্বাত্মক উদ্যোগ নিলেও যুগ বাস্তবতার প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে তিনি ইংরেজি ও অন্যান্য ভাষা শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথাও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্মরণ রাখতে বলেছিলেন।
শহীদ জিয়া মনে করতেন একটি পশ্চাৎপদ দেশ ও জাতির সার্বিক উন্নতির জন্য প্রয়োজন সে দেশের সকল জনগণের মধ্যে জাতীয় চেতনার উম্মেষ, প্রতিটি নাগরিকের মধ্যে সামাজিক কর্তব্য, নাগরিক দায়িত্ব, জাতীয়তাবোধ ও দেশাত্ববোধ সম্বন্ধে সঠিক ধারণা তৈরি একান্ত প্রয়োজন। আর এর জন্য প্রয়োজন জনগণের মধ্যে দ্রুত শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়া। শিশু, তরুণ ও যুবাদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ব্যবস্থা আছে। জিয়া সরকার প্রতিটি শিশুকে স্কুলে নেয়ার জন্য বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। জিয়া সরকারের সময় গৃহীত অন্তবর্তীকালী দ্বি-বার্ষিক পরিকল্পনা এবং দ্বিতীয় পঞ্চ-বার্ষিক পরিকল্পনায় শিক্ষা খাতের উন্নয়নে প্রাগ্রাধিকারসহ বিশেষ বরাদ্দের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।
বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ বয়স্ক প্রবীণ। তাদের অধিকাংশই অশিক্ষিত ও অক্ষরজ্ঞানহীন। এ বয়স্ক জনগণকে স্কুলে এনে শিক্ষিত করে তোলা সম্ভব ছিল না। অথচ পুরো জাতিকে শিক্ষিত করে তোলা না গেলে জাতীয় অগ্রগতি ও উন্নতির ধারা নিশ্চিত করা অসম্ভব বলে শহীদ জিয়া মনে করতেন। তিনি উপলব্ধি করলেন যে, সার্বিক জনগণকে জাতীয় চেতনায় সমৃদ্ধ করে তুলতে অক্ষরজ্ঞানের বিকল্প নেই। তাই তিনি ‘গণশিক্ষা’ কার্যক্রম চালু করেন। এ লক্ষ্যে একটি পাঁচশালা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল। ১৯৮০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি গণশিক্ষা কর্মসূচি সূচনা করেন। শহীদ জিয়ার অনুরোধে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সমন্বয়ে গঠিত প্রায় ১,৪৬,২০৫ টি শিক্ষা স্কোয়াডে ৩,৯১,২০৫ জন শিক্ষক সারা দেশে ৩৪৫টি থানায় নৈশ বিদ্যালয়ের মাধ্যমে প্রাপ্তবয়স্ক নিরক্ষর মানুষকে অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন করার এক মহানব্রতে নিয়োজিত হন। স্বাক্ষরতা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণে জনগণকে উদ্বুদ্ধকরণের উদ্দেশে সরকার গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারভিযান চালানো হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এতদবিষয়ে জরুরি প্রকল্প হাতে নেয়। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের পাঠক্রমে গণশিক্ষা কার্যক্রমের গুরুত্ব বিষয়ক পাঠ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সরকারের এসব ইতিবাচক পদক্ষেপের ফলে দেশ নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে অনেকাংশে মুক্ত হয় এবং শিক্ষার হার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পায়।
ধর্ম মানব জীবনের অবিভাজ্য অংশ। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের আবাসস্থল হলেও ইসলাম এদেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্ম ও জীবনদর্শন। এ জন্য মুসলমানদের ধর্মীয় শিক্ষার যথাযথ প্রসারের ব্যাপারে জিয়া উদ্যো নিয়েছিলেন। তাঁর সময়ে বাংলাদেশে মাদ্রাসা শিক্ষার পূর্ণাঙ্গ বিকাশ শুরু হয়। দ্য ন্যাশনাল কমিটি ফর কারিকুলাম অ্যান্ড কোর্সেস অফ স্টাডি-এর সুপারিশ অনুযায়ী আলিয়া মাদ্রাসার পাঠক্রম ও পাঠ্যসূচি বাস্তবায়নের ফলে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য এক নব দিগন্তের দ্বার উন্মোচিত হয়। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মূল ধারায় যুক্ত করার লক্ষ্যে জিয়া সরকারের আমলে মাদ্রাসা শিক্ষায় বিজ্ঞান, কারিগরি ও ক্রাফট শিক্ষা চালু করা হয়। ফলে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা মেডিক্যাল, প্রকৌশল বিদ্যাসহ বিশ^বিদ্যালয় ও অন্যান্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবার যোগ্যতা লাভ করে। মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নের জন্য জিয়াউর রহমান ‘বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড’ প্রতিষ্ঠা করেন। ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা বাংলাদেশে মাদ্রাসা ও ধর্মীয় শিক্ষার ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। যুগের চাহিদা এবং জাতীয় ঐতিহ্য ও প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সমন্বিত উপায়ে ইসলাম ধর্মীয় ও আধুনিক শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর শান্তিডাঙ্গায় (কুষ্টিয়া ও যশোর সীমান্তবর্তী এলাকা) ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯৮০ সালে জাতীয় সংসদে ‘ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় আইন’ পাশ করা হয়। মাদ্রাসা শিক্ষা বিস্তারে জিয়া সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে অন্যান্য ধর্মাবলীদের ব্যাপারেও তিনি অত্যন্ত সচেতন ছিলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন ঘোষণাপত্রে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছিল যে,মুসলমানদের অনুরূপ “অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা যাতে নিজ নিজ বিশ্বাস অনুযায়ী নিজ নিজ ধর্ম শিক্ষা লাভ করতে পারেন সে জন্য আমরা আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাবো।”
শিক্ষার প্রসারে গণগ্রন্থাগারের ব্যাপক ভূমিকা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। শহীদ জিয়া দেশে শিক্ষার সার্বিক উন্নয়নে গণগ্রন্থাগারের অসাধারণ ভুমিকার বিষয়টি উপলব্ধি করেই দেশের প্রতিটি থানায় একটা করে গণগ্রন্থাগার ও মিলনায়তন প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তাঁর সে ঘোষণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৯৮০-৮১ অর্থ সালে ‘থানা পাবলিক লাইব্রেরী কাম অডিটোরিয়াম স্থাপন’ শীর্ষক একটা উন্নয়ন প্রকল্পও গ্রহণ করা হয়েছিল।
জ্ঞান অর্জনের জন্য শিক্ষাঙ্গনে সুস্থু অনুকূল পরিবেশ অপরিহার্য। ১৯৭৯ সালে ২ এপ্রিল বাংলাদেশের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে তাঁর প্রদত্ত ভাষণে এ ব্যাপারে তিনি জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট সকলকে একযোগে কাজ করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। একটি উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষকের প্রয়োজন অপরিহার্য। আর দক্ষ শিক্ষক পাওয়ার জন্য তাদের সম্মানজনক সুযোগ সুবিধা দিতে হয়। কারণ ক্ষুধার্ত শিক্ষক দিয়ে যে তৃষ্ণার্ত শিক্ষার্থীর প্রয়োজন মিটানো সম্ভব নয়। শহীদ জিয়া এটি উপলব্ধি করে শিক্ষকদের প্রাপ্য সম্মান ও সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ১৯৮০ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময়ে শিক্ষকদের জন্য অভিন্ন চাকরি বিধি এবং জাতীয় বেতন-স্কেলের প্রারম্ভিকের ৫০% দেয়ার ব্যবস্থা করাষি, সেচ, বৃক্ষরোপন, গৃহ-নির্মাণ, বিদ্যুতায়ন, স্বাস্থ্যরক্ষা, পরিবার পরিকল্পনা এবং আইন শৃংখলা ব্যবস্থাকে সম্পৃক্ত করেছিলেন। খাদ্যে স্বাবলম্বী হবার বিষয়টিকে জিয়াউর রহমান তাঁর জাতীয় নীতি হিসেবে ঘোষনা করেছিলেন। খাদ্য উৎপাদন দ্বি-গুণ করাকে স্বনির্ভরতা আন্দোলনের সোপান হিসেবে মনে করতেন জিয়াউর রহমান। এলক্ষ্যে তিনি খাল খনন করে শুষ্ক মৌসুমে সেচ ব্যবস্থা সচল করা, একই জমিতে একাধিক ফসল ফলানো, পতিত জমিতে চাষাবাদে গুরুত্বারোপ করাকে তার উন্নয়নের অগ্রাধিকার কর্মসূচি হিসেবে দেশব্যাপি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। খড়া মৌসুমে চাষাবাদে নিরবিচ্ছিন্ন সেচ নিশ্চিত করনে তাঁর আমলে প্রায় ৯০০ মাইল দীর্ঘ খাল খনন করা হয়েছিল।
জিয়াউর রহমার দেশকে স্বনির্ভরতার লক্ষ্য অর্জনের পরিপূরক হিসেবে গণস্বাক্ষরতা কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন। গণস্বাক্ষরতা কর্মসুচিকে মুলধারার শিক্ষার সাথে সংযুক্ত করে দেশের স্বাক্ষরতার হারকে বৃদ্ধি করেছিলেন। মূলত মহান ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে ধারন করে তিনি ১৯৮০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বহুল প্রশংসিত গণস্বাক্ষরতা কর্মসূচি ঘোষনা করেছিলেন। গণনন্দিত এই কর্মসূচির মাধ্যমে খুব স্বল্প সময়ে দেশে প্রায় ৪০ লক্ষ নিরক্ষর মানুষকে অক্ষরজ্ঞান দান করতে পেরেছিলেন। মুলত ১৯৮৫ সালের মধ্যে দেশের স্বাক্ষরতার হার ৮০% উন্নীতকরণের লক্ষমাত্রা নিয়ে জিয়াউর রহমান স্বাক্ষরতা কর্মসূচি ঘোষনা করেছিলেন।
জিয়াউর রহমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকে দেশের এক নম্বর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনে ‘এক ছেলে এক মেয়ে’ ধারণাকে নীতি ও আদর্শ হিসেবে প্রচার করেন এবং তা বাস্তবায়নে ১৯৭৬ সালে গ্রাম ও ওয়ার্ড পর্যায়ে ৩৮ হাজার পরিবার পরিকল্পনা কর্মী নিয়োগ করেন। ক্ষমতাকে গ্রাম পর্যন্ত বিকেন্দ্রীকরণ করার জন্য এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার লক্ষে ১৯৮০ সালের ৩০ মে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রাম সরকার ব্যবস্থা প্রচলণ করেন। ১৯৮০ সালের ২১ জুন জিয়াউর রহমানের সরকার মহান জাতীয় সংসদে গ্রাম সরকার বিল উত্থাপন করেন এবং তা একই দিনে অনুমোদিত হয়। এর ফলে ছোট ছোট সমস্যা গ্রামেই সমাধান হতে থাকে। মামলা মোকদ্দমা উল্লেখযোগ্যহারে কমে আসে। ১৯৭৮ সালের এক জরিপে জানা যায় যে, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২২ শতাংশই যুবক। হতাশা, সন্ত্রাস ও বেকারত্ব ও মাদকাসক্ত থেকে যুব সমাজকে রক্ষা করে তাদেরকে উন্নয়নের মুলধারায় ফিরিয়ে আনার প্রয়াসে জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ১৮-১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার শেরে বাংলা নগরে দুদিন ব্যাপী জাতীয় যুব সস্মেলন আয়োজন করে যুব সমাজকে দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। যুব সমাজকে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানোর জন্য ১৯৭৮ সালে তিনি দেশে প্রথমবারের মত যুব মন্ত্রনালয় চালু করেন। জেলায় জেলায় যুব কমপ্লেক্স চালু করে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে তাদের স্বকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সাহায়্য করেন। গ্রামীণ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেশীয় উন্নয়ণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি হাতিয়ার হওয়া সত্তেও স্বাধীন দেশে তা ছিলো অনেকটায় অবহেলিত ও উপেক্ষিত। গ্রামের মানুষের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য শহীদ জিয়া ১৯৭৬ সালে ভিডিপি বা গ্রাম প্রতিরক্ষা দল গঠন করেন। সেদিনের সেই বাহিনী আজ গ্রামীন জনগোষ্ঠীর শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। আজকের শিশু আগামীর রাষট্রনায়ক। তাইা শহীদ জিয়া শিশুদের মেধা বিকাশের জন্য ১৯৭৭ সালের ১৫ জুলাই শিশু একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। শিশুদের মেধাবিকাশে টিঁভিতে নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতা চালু করে বেশ প্রশংসিত হয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট জিয়া বহিবিশ্বে দেশের অপ্রচলিত গার্মেন্টস শিল্প, হিমায়িত খাদ্য, হস্তশিল্প, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ করেছিলেন। জিয়ার হাতধরেই গড়ে উঠা সেদিনের শিশু গার্মেন্ট শিল্প আজ দেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি খাত। দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। এই বিপুল সংখ্যক নারীকে কর্মহীন রেখে কোনভাবেই যে সদ্য স্বাধীন একটি জনবহুল দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয় সেটা উপলব্ধি করে শহীদ জিয়া নারীদেরকে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করে দেশের সার্বিক উন্নয়নের চাকাকে গতিশীল করার জন্য মহিলা বিষয়ক মন্ত্রনালয় প্রতিষ্ঠা করে নারীদের ক্ষমতায়ন ও সমাজে তাদের যথাযথ সস্মান নিশ্চিত করেছিলেন। বিজ্ঞান শিক্ষার প্রচার ও প্রসার এবং বিজ্ঞান মনস্ক জাতী গঠনে তিনিই প্রথম দেশে পৃথক একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সাধারণ শিক্ষার সাথে মাদরাসা তথা ধর্মীয় শিক্ষার সমন্বয় সাধন করে নৈতিকতা সম্পূর্ণ সুনাগরিক গড়ে তোলার জন্য স্বাধীনদেশে সর্বপ্রথম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যা আবার স্বাধীন দেশে প্রতিষ্ঠিত প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়।
শহীদ রাষ্টপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীন ও নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি অলম্বন করে সহজেই বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি ক্ষমতায় এসেই ইন্দো-সোভিয়েত বলয় থেকে বের হয়ে আমেরিকা ও চীনের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাতে তিনি সফলও হয়েছিলেন। তিনি তার সাহসী, চৌকস ও দূরদর্শী পররাষ্ট্রনীতির কারণে মুসলিম বিশ্বের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি তাঁর স্বল্প সময়ের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনকালে ইরাক-ইরান যুদ্ধে একক মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভুমিকা পালন, আল কুদস কমিটির সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়া, ফিলিস্তিন জনগণের প্রতি অবিচল সমর্থন, ওআইসিকে একটি কার্যকরি সংগঠনে পরিনত করার ক্ষেত্রে শহীদ জিয়ার ভুমিকা মুসলিম বিশ্ব আজও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। তিনিই মুলত মুসলিম বিশ্বে শ্রমবাজার সৃষ্টি করে সরকারিভাবে কর্মী প্রেরণ করেন। শহীদ জিয়া দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ভু-রাজনৈতিক ঐক্য সৃষ্টির জন্য সার্ক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
স্বাধীন, স্বার্বভোম বাংলাদেশের আধুনিকায়ন তিনিই সুত্রপাত করেছেন।

সাহিত্য সম্পাদক,