সরকারের পতন বিএনপির একমাত্র চাওয়া : মির্জা ফখরুল

আপডেট: আগস্ট ১০, ২০২৩
0

‘সরকার পতন’ই বিএনপির একমাত্র চাওয়া’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে লক্ষীপুর থেকে আসা আহত নেতা-কর্মীদের এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ দীর্ঘ একযুগের উপরে আমরা সংগ্রাম করছি, লড়াই করছি এই ফ্যাসিবাদী, কর্তৃত্ববাদী, নিপীড়ন-নির্যাতনকারী সরকারের দমনপীড়নের বিরুদ্ধে। আমাদের লক্ষ্য একটাই সেই লক্ষ্য হচ্ছে, আমরা এই ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে মুক্তি চাই, দেশ মুক্তি চায়।”

‘‘ এজন্যে ইতিমধ্যে অনেকে প্রাণ দিয়েছেন, সাধারণ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন, অনেক মানুষ গুম হয়ে গেছেন এবং সর্বশেষ এই ১৮ তারিখ(জুলা) আপনারা(লক্ষীপুরের নেতা-কর্মীরা) শান্তিপূর্ণ মিছিল করছিলেন সেই মিছিলে পুলিশ সরাসরি গুলি করে আমাদের ভাই সজীব হোসেন তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, আপনারা অনেকে চোখ বন্ধ(দৃষ্টি শক্তি হারিয়েছে) হয়ে গেছে। এখন একটাই চাওয়া, একটাই পথ বা রাস্তা সেটা হচ্ছে যে, এদেরকে সরাতে হবে, এদের পতন ঘটাতে হবে।”

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এই দেশ নিরাপদ না, আপনারা নিরাপদ না, আমরা কেউই নিরাপদ না।”

‘‘ আমাদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, আমাদের অস্তিত্ব ফিরে পাবার জন্য, এই যে শিশুটি( সামনের সারিতে বসা সজীব হোসেন সন্তানের দিকে তাঁকিয়ে) এখানে দাঁড়িয়ে আছে সে তার পিতাকে হারিয়েছে… যারা মারা গেছে তাদের পরিবার বুঝে কি যন্ত্রণা। আপনাদের এই কষ্ট, এই ত্যাগ কখনো বৃথা যাবে না।”

তিনি বলেন, ‘‘ এই আন্দোলনে দেশের মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে। দেশের মানুষ জীবন দিয়ে রাস্তায় নেমেছে। রাস্তায় নেমে এই সরকারকে সরানোর জন্য সংগ্রাম শুরু করেছে।”

‘‘ আমরা বিশ্বাস করি যে, এই সরকারকে এদেশের মানুষ এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরাবে এবং জনগনের যে সরকার সেই সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।”

নিহত সজীব হোসেনের পরিবার ও আহত নেতা-কর্মীদের পাশে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার দল ‘সব সময় পাশে থাকবে’ বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।

গত ১৮ জুলাই লক্ষীপুরে বিএনপির পথযাত্রায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হামলার কৃষক দলের নিহত সজীব হোসেন এবং পুলিশের গুলিতে নেতা-কর্মীদের আহত হয়, ৬জন দৃষ্টি শক্তিও হারায়। লক্ষীপুরের নেতা-কর্মীদের সাথে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান সহমর্মিতা প্রকাশ করতেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে। লন্ডন থেকে স্কাইপে তাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন তারেক।

দলের পক্ষ থেকে নিহত সজীব হোসেনের পরিবার ও আহতদের আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।

লক্ষীপুরের সাবেক সাংসদ শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সভাপতিত্বে ও শাহাবুদ্দিন সাবুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবে রহমান শামীম, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, পুলিশের গুলিতে দৃষ্টি শক্তি হারানো যুব দল কর্মী মোস্তফা কামাল, শ্রমিক দলের ইকবাল হোসেন, কৃষক দলের বোরহান উদ্দিন, নিহত সজীবের বাবা আবু তাহের প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

এই অনুষ্ঠানে বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ, নিজান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশীদ, সাবেক সাংসদ এবিএম আশরাফ উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, লক্ষীপুরের অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান ও বিএলডিপি‘র মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম উপস্থিত ছিলেন।

‘যুব দলের প্রতিষ্ঠাকালীন নেতাদের সভা’

পরে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে শুরু করে সাবেক যুব দলের নেতাদের একটি সভা হয়। এতে তারেক রহমান অংশ নিয়ে সাবেক নেতাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।

যু্ব দলের প্রতিষ্ঠাকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনিরের সভাপতিত্বে সভায় যুব দলের সাবেক সভাপতি মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বরকত উল্লাহ বুলু, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খানও বক্তব্য রাখেন।