সরকার খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে চায় : মির্জা ফখরুল

আপডেট: জানুয়ারি ৫, ২০২২
0
file photo

উন্নত চিকিতসার অভাবে খালেদা জিয়ার কোনো দূর্ঘটনা ঘটলে সরকারের প্রত্যেককেই হত্যা মামলার আসামী করা হবে হুশিয়ারি দিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার সকালে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা জানাতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব সরকারের প্রতি এই হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ তারা(সরকার) জেনে শুনেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে একটা হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। তারা দেশনেত্রীকে হত্যা করতে চায়।”

‘‘ আমরা পরিস্কার করে বলে দিতে চায়, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিতসার অভাবে যদি কোনো দূর্ঘটনা ঘটে তাহলে তাদের প্রত্যেককেই হত্যার আসামী করে বিচার করা হবে।”

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ আজকে একথা প্রমাণিত হয়েছে যে, এই সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে চায়, তারা এখন অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশের মানুষ যখন দল মতনির্বিশেষে চাচ্ছে তাকে বিদেশে চিকিতসার জন্য পাঠানো হোক, তখনই শেখ হাসিনার সরকার এবং শেখ হাসিনা তারা অত্যন্ত ভয়াবহভাবে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে(খালেদা জিয়া) বিদেশে চিকিতসার জন্য যেতে দিচ্ছে না।”

‘‘ আজকে দেশনেত্রী অত্যন্ত জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে, তখন চিকিতসকরা তাকে বিদেশে উন্নত চিকিতসার জন্য যাওয়ার জন্য বলছেন, তখন বিদেশে যাওয়ার জন্য কোনো ব্যবস্থাই তারা করছে না। উপরন্তু তারা আইনের কথা বলে তাকে বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করছেন। কোনো আইন মানুষের চেয়ে বড় নয়। আজকে দেশের জন্য তার যে অবদান, এদেশের প্রতি, এদেশের গণতন্ত্রের প্রতি, এদেশের উন্নয়নের জন্য তার অবদান সেই অবদানকে স্বীকার তাকে এই মুহুর্তে বিদেশে চিকিতসার জন্য পাঠানো দরকার।”

বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিতসাধীন খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের যে চিকিতসকরা আছেন, তারা অত্যন্ত আন্তরিকভাবে চিকিতসা দিয়ে যাচ্ছেন, তারা তাদের সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করছেন দেশনেত্রীকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। গত পরশুও তার রক্তক্ষরণ হয়েছে।”

‘‘ আমি গতকাল ডাক্তারদের সা্থে কথা বলেছি, তারা বলেছেন, আমাদের যে চিকিতসার সুবিধা আছে, যে কারিগরি সোপোর্ট আছে সেই ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা এখন যা করছি তা অত্যন্ত সাময়িক। যেকোনো সময়েই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জীবনের আংশকা মারাত্মক হয়ে দেখা দিতে পারে।”

খালেদা জিয়াকে সুচিকিতসার জন্য বিদেশে পাঠাতে চলমান আন্দোলনকে আরো জোরদার করতে ‘দূর্বার আন্দোলন’ গড়ে তুলতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান বিএনপি মহাসচিব।

গত ১৩ নভেম্বর থেকে খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিতসাধীন আ্ছেন। হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিতসক অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড তার চিকিতসায় নিয়োজিত রয়েছেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মহানগর বিএনপির উদ্যোগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির অষ্টম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সারাদেশে ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই প্রতিবাদী মানববন্ধন কর্মসূচি হয়। প্রতিবছর এদিনকে বিএনপি গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

মহানগর উত্তরের আহবায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় মানববন্ধনে মহানগর দক্ষিনের আহবায়ক চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, মীর সরফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, নাজিম উদ্দিন আলম,শামীমুর রহমান শামীম, কাজী রওনকুল ইসলাম টিপু, যুব দলের মোরতাজুল করীম বাদরু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মহানগর বিএনপির নবী উল্লাহ নবী, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, মতস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, উলামা দলের নজরুল ইসলাম তালুকদার, ছাত্র দলের ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ মহানগর ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।