সরকার জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছে: হাফিজ

আপডেট: জানুয়ারি ৭, ২০২২
0

সরকার পরিবর্তনে ‘টানেলের শেষ প্রান্তে আলোর রেখা’ দেখছেন হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। শুক্রবার সকালে এক আলোচনা সভায় দেশের অবস্থা তুলে ধরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘আজকে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে ধবংস করে দেয়া হয়েছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই, প্রধান বিচারপতিকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। এরকম দুঃসহ অবস্থায় একটি অনির্বাচিত সরকার জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছে।’

‘‘তবে হ্যাঁ ভাই ও বোনেরা, আমরা টানেলের শেষে আলোর রেখা দেখতে পারছি। বেশদিন আর এই স্বৈর সরকারের আয়ু নাই। বাংলাদেশে এখন অনেক বেশি লোক রাজপথে সমাগম হচ্ছে, সাধারণ মানুষরাও আসছে। পরিবর্তন আসবেই।”

হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘‘এই যে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে দেখেন আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হচ্ছে, নৌকার ভরাডুবি হচ্ছে। স্বতন্ত্র ও বিরোধী প্রার্থীরা বিজয়ী হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে এতো কারচুপির পরও তারা জিততে পারছে না। জনগন তাদের ঘৃণা করে।”

‘‘আওয়ামী লীগের চেহারা কেমন? এই এক মুরাদ হাসানের মাধ্যমে আমরা দেখতে পেলাম। এরকম অসংখ্য মুরাদ হাসান আরো রয়েছে। মুরাদ হাসান হলো টিপ অফ আইস বাক। অধিকাংশ মুরাদ হাসানরা পানির নিচে আছে, এগুলো চেহারা এখনও দেখা যাচ্ছে না। যখন সরকার পরিবর্তন হবে অসংখ্য মুরাদ হাসানদের পাবেন তখন দেখতে। সেই দিন বেশি দূরে নয়। অপেক্ষা করুন।”

তিনি বলেন, ‘‘ আগামী দিনে আর তারা (সরকার) নিশি রাতে নির্বিাচন করতে পারবে না। যেহেতু বিশ্বের পরাশক্তির দৃষ্টি আকর্ষিত হচ্ছে, একের পর এক সেনশন (নিষেধাজ্ঞা) আরোপ হচ্ছে। আরো অনেক সেনশন আসবে। যদিও এটি আমাদের জন্য লজ্জাকর।”

‘‘এখন বাংলাদেশের জনগনের উচিত বিএনপির নেতৃত্বে সকল জাতীতাবাদী শক্তির নেতৃত্বে রাজপথে নেমে এই সরকারকে বিদায় করা। ইনশাল্লাহ সেই দিন বেশি দূরে নয়, এই সরকারেরে পতন ঘটবেই।”

সরকার প্রতিহিংসামূলকভাবে অন্যায়ভাবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বন্দি করে কষ্ট দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন হাফিজ।

জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ লেবার পার্টির উদ্যোগে ‘৭ জানুয়ারি ফেলানী হত্যা দিবস’ উপলক্ষ্যে আগ্রাসী বিরোধী এই কনভেনশন হয়। এতে মানবাধিকার সংরক্ষন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট জহুরা খাতুন জুঁই মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামেরে নাগেশ্বরী থানার অনন্তপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) গুলিতে নিহত হয় ফেলানী খাতুন নামে এক কিশোরী, যার মরদেহ পাঁচ ঘন্টা কাটা তারে ঝুলে ছিলো। এই নির্মম ঘটনা প্রতিবাদ জানাতে প্রতিবছর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন এই দিবসটি পালন করে।

হাফিজ বলেন, ‘‘ আমরা চাই না আর কোনো ফেলানী কাটাতারে ঝুলে থাকুক, সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকের মৃত্যু আমরা আর দেখতে চাই না। পাশে তো পাকিস্তানের সাথে তো ভারতের দীর্ঘদিনের সংষর্ষ চলছে। কোথায় সেখানে তো একটা লোকও হত্যা হয় না। আমাদের কেনো ১৪‘শ বা দেড় হাজার লোক নিহত হবে?

‘‘আমাদেরকে শক্তি অর্জন করতে হবে। আমাদের দরকার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের। জনগনকে ঐক্যবদ্ধ করে জাতীয়তাবাদী সরকার প্রতিষ্ঠা করে জনগনের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে আমরা এই ফেলানীদেরকে আগামী দিনে রক্ষা করবো, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে অক্ষুন্ন রাখবো এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।”

লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির অর্পনা রায়, অ্যালবার্ট পি কস্টা, মুক্তিযোদ্ধা দলের শহীদুল ইসলাম চৌধুরী মিলন, লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফারুক রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা মোসলেহ উদ্দিন, রামকৃষ্ণ সাহা, আবদুর রহমান খোকন, হুমায়ুন কবীর, কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।