সিলেটের এক অসহায় পরিবারের সংবাদ সম্মেলন পৈত্রিক সম্পত্তি ও জীবন রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা

আপডেট: এপ্রিল ৪, ২০২২
0

নিজস্ব প্রতিবেদক:
পৈত্রিক সম্পত্তি ও জীবন রক্ষার জন্য সিলেটের কোতয়ালী থানার অনামিকা শাহী ঈদগাহ এলাকার নিমার উদ্দিনের ছেলে গিয়াস উদ্দিন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে ওই এলাকার মৃত ফিরোজ খানের ছেলে মো. ফারুক খান ও তার পরিবারবর্গ। আজ সোমবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মো. ফারুক খান বলেন, বিগত কয়েক বছরযাবৎ আমার পৈত্রিক জমি গিয়াস উদ্দিনগং অন্যায়ভাবে জবরদখলের চেষ্টা করছে। তারা বিভিন্ন সময়ে আমাকে পরিবারসহ উচ্ছেদের জন্য হুমকি দিয়ে আসছে। ওই জমিতে আমাদের নামে ৮টি গ্যাস লাইন, ১৫টি বিদ্যুৎ মিটার, ২টি পানির লাইন, ১১টি সিটি হোল্ডিং নাম্বার নিয়ে ৫৩ বছর যাবৎ বসবাস করে আসছি। গিয়াস উদ্দিনগং গত ১৬ মার্চ আমার পৈত্রিক ফিরোজ খান মার্কেটের সামনে আনুমানিক রাত ২:৩০ ঘটিকার সময় ৬/৭ ট্রাক বালি স্তুপ করে মার্কেট খোলা ও বিক্রয় কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। মূলত অবৈধভাবে জায়গা ও মার্কেট দখলে নেয়ার জন্যই তারা এ কাজ করে। এছাড়া এরা সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে দফায় দফায় হামলা চালাচ্ছে। আমরা একাধিকবার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো সমাধান পাচ্ছি না। কারণ, গিয়াস উদ্দিনগংদের সাথে প্রশাসনের সু-সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে সিলেটের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা সরোয়ার হোসেনের ভাগিনা পরিচয় দিয়ে গিয়াস উদ্দিন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্যই মূলত প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা না করে তাদের পক্ষে কাজ করছে। এদিকে উল্টো তারা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা করেছে। যার ফলে আমরা পুরুষ সদস্যরা ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারছি না। এই সুযোগে গত ২০ মার্চ আনুমানিক বিকাল ৪:০০ ঘটিকায় গিয়াস উদ্দিন বাহিনীর সন্ত্রাসীরা আমাদের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে বাড়িতে থাকা ধর্মপ্রাণ নারী সদস্যদের মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। সন্ত্রাসীবাহিনী বাড়ির সামনের মার্কেটের ১১ টা দোকানের মধ্যে ১টি দোকানের তালা ভেঙ্গে মালামাল লুটপাট করে। মার্কেটের সাইনবোর্ড ও সিসি ক্যামেরাসহ ব্যাপক ভাংচুর চালায়। ভাঙচুর করা ওই দোকানটি আমার নিজের। যা ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্ত এক্সপোর্ট কালেকশনের দোকান। জরুরী সেবা নম্বর ৯৯৯ যোগাযোগ করলে তাৎক্ষনিক পুলিশ সহায়তা প্রদান করে। তখন সাময়িক সময়ের জন্য তান্ডব বন্ধ হয়। পুলিশ প্রশাসন কিছুক্ষন থেকে চলে যাওয়ার পর পুনরায় সন্ত্রাসী বাহিনী মার্কেট ও বাড়ীতে হামলা চালায়। মার্কেটের বিদ্যুৎ লাইন কেটে দিয়েছে, মার্কেটের সামনে স্তুপকৃত বালি ও সন্ত্রাসীদের হুমকির কারণে মার্কেটের ভাড়াটিয়ারা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তারপরও কোনো ভাড়াটিয়া প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। কারণ যেই প্রতিবাদ করে তার বিরুদ্ধেই মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয় এবং নানা ধরণের ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদান করেন।
ফারুক খান অভিযোগ করে আরো বলেন, বর্তমানে ফিরোজ খান মঞ্জিলের স্বত্ব বাট-বাটোরা নিয়ে বিজ্ঞ জেলা জজ অতিরিক্ত আদালত, সিলেট ও স্বত্ব ঘোষণার মোকদ্দমা নং ৭৬/২০০৪ চলমান যাহা দেওয়ানী মোকদ্দমা নং ৮৫/১৯৯৭ হতে উদ্ভুত। এ ছাড়া শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৫ ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা হাকিম আদালত, সিলেট এ বিবিধ কোতয়ালী মোকদ্দমা নং ১৮/২০১৯ মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই মামলার রায় জারি আছে। সিলেট কোতয়ালী থানা বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত অবগত আছেন। এই বিষয় নিয়ে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে গত ১৭ মার্চ সাংবাদিক সম্মেলন করেছি ও মামলা করেছি। তারা আদালতের কোনো রায় মানছে না। তারা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে একের পর এক অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের ক্ষমতার দাপটে আমরা ন্যায় বিচার পাচ্ছি না। এছাড়াও আমরা গিয়াস উদ্দিন গংয়ের হাত থেকে রেহাই পেতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সিলেটের কমিশনার, জেলা প্রশাসক, মেয়র, দুদক, র‌্যাব-৯, এন.এস.আই, ডিজিএফআই, স্থানীয় কাউন্সিলর বরাবর আবেদন করেছি। এতেও কোনো সমাধান হয়নি।
এমতাবস্থায় আমরা ওই সন্ত্রাসীবাহিনীর আতঙ্কে মানবেতর জীবন অতিবাহিত করছি। তারা যেকোনো সময় আমাদের বড় ধরনের ক্ষতিসাধন করতে পারে। এমনকি ওই সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের জীবনও নিয়ে নিতে পারে। আমরা বাঁচতে চাই। এমতাবস্থায় আমরা তাদের হাত থেকে আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি ও জীবন রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও আইনশৃংখলা বাহিনীসহ যথাযথ কর্র্তপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন- ফারুক খানের বড় ভাই মমিন খান ও বোন জামাই আরিফ আহমদ।

ক্যাপশন: গতকাল সোমবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে পৈত্রিক সম্পত্তি ও জীবন রক্ষার জন্য সিলেটের কোতয়ালী থানার অনামিকা শাহী ঈদগাহ এলাকার নিমার উদ্দিনের ছেলে গিয়াস উদ্দিন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে ঐ একই এলাকার মৃত ফিরোজ খানের ছেলে মো. ফারুক খান ও তার পরিবারবর্গ। সংবাদ সম্মেলনে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন- ফারুক খানের বড় ভাই মমিন খান ও বোন জামাই আরিফ আহমদ।